Advertisement
E-Paper

চাপে বিজেপি, খোলস ছেড়ে বেরোলেন রাহুল

আপ-ঝড়ে দিল্লি ভোটে তাঁরা যে এ বারও দাগ কাটতে পারবেন না, তা একপ্রকার ধরেই নিয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কিন্তু রাজধানীর ভোটে ‘নড়বড়ে বিজেপি’-কে দেখে এই সুযোগেই নতুন উদ্যমে মোদী-বিরোধিতার ইট পাতার কাজ শুরু করে দিলেন রাহুল গাঁধী। ৭ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে ভোট। তার আগে বুধবার প্রচার মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ঝাঁঝালো আক্রমণ করলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:০২

আপ-ঝড়ে দিল্লি ভোটে তাঁরা যে এ বারও দাগ কাটতে পারবেন না, তা একপ্রকার ধরেই নিয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কিন্তু রাজধানীর ভোটে ‘নড়বড়ে বিজেপি’-কে দেখে এই সুযোগেই নতুন উদ্যমে মোদী-বিরোধিতার ইট পাতার কাজ শুরু করে দিলেন রাহুল গাঁধী। ৭ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে ভোট। তার আগে বুধবার প্রচার মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ঝাঁঝালো আক্রমণ করলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি।

সেই সঙ্গে জয়ন্তী নটরাজন নিয়েও মুখ খুলেছেন রাহুল। কয়েক দিন আগে রাহুলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে কংগ্রেস ছাড়েন ইউপিএ জমানার পরিবেশ মন্ত্রী জয়ন্তী। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিভিন্ন শিল্প প্রকল্পে পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র দিতে তিনি যে বাধা দিয়েছিলেন, তা রাহুলের নির্দেশেই।

এ দিন জয়ন্তীর এই অভিযোগের জবাব দিতে গিয়েও মোদীকে বিঁধেছেন রাহুল। তাঁর কথায়, “মোদীর সমালোচনা করেছিলাম। তাই আমার বিরুদ্ধে জয়ন্তীকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন মোদী।” কর্পোরেট সংস্থার হাতে প্রধানমন্ত্রী তামাক খাচ্ছেন বলে অভিযোগ করে রাহুল বলেন, “হ্যাঁ, আদিবাসী ও গরিবদের স্বার্থরক্ষার পরামর্শ জয়ন্তীকে আমিই দিয়েছিলাম। গরিব, দলিত ও আদিবাসীদের জন্য সেই লড়াই চালিয়ে যাব।” এই প্রসঙ্গে মোদী সরকারের জমি অধিগ্রহণ নীতিরও তীব্র নিন্দা করেন রাহুল।

সহ-সভাপতির আজকের রণংদেহি মূর্তি দেখে কংগ্রেস নেতারাই বলছেন, এক বছর আগের রাহুল আর আজকের রাহুল এক নন। লোকসভা ভোট প্রচারের সময় দেখা গিয়েছে, সমালোচনার মুখে পড়ে বারবার নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন রাহুল। বিজেপি চাপে পড়েছে দেখে সেই রাহুলই আজ খোলস ছেড়ে বেরোলেন। মোদীকে ঠুকে বললেন, “প্রধানমন্ত্রী মেক ইন্ডিয়া প্রচার করছেন। কিন্তু বিনিয়োগ আসছে না। আরও মজার হল ওঁর দশ লাখের কোটটাও মেড ইন ইউ কে।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, আপাত ভাবে দেখলে রাহুল আজ দিল্লি ভোটের প্রচার করেছেন। পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে তাতে কংগ্রেসের জনভিত্তিতে এ বার আরও ধস নামাতে পারে আপ। সেই ধস থামাতে রাজধানীতে কংগ্রেসের চিরাচরিত ঘাঁটিগুলিতেই রাহুল এ বার বেছে বেছে সভা বা রোড শো করেছেন।

কিন্তু বৃহৎ প্রেক্ষাপটে রাহুলের উদ্দেশ্য হয়তো অন্য। একাধিক জনমত সমীক্ষার পূর্বাভাস বলছে, দিল্লিতে বিজেপি-র তুলনায় এগিয়ে আপ। রাহুল ও তাঁর পরামর্শদাতাদের আশা, দিল্লি ভোটেই হয়তো বড় ধাক্কা খেতে চলেছে বিজেপি। রাহুলের মতে, কংগ্রেসকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে সেই মুহূর্তটাকেই কাজে লাগাতে হবে। কারণ, দিল্লির বাইরে সর্বভারতীয় স্তরে আপের অস্তিত্ব নেই। সেখানে কংগ্রেসের উপস্থিতি রয়েছে। এখন থেকেই উদ্যোগী হলে সর্বভারতীয় স্তরে এর ফায়দা তুলে প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পেতে পারে কংগ্রেস।

দলের নেতাদের মতে, সেই লড়াইয়ের মন্ত্র কী হবে তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন রাহুল। তা হল, প্রধানমন্ত্রীকে শিল্প ও বণিক মহলের ‘বন্ধু’ হিসেবে তুলে ধরে কৃষক, আদিবাসী ও সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশের সমর্থন চাইতে হবে কংগ্রেসকে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রের প্রবর্তিত নতুন জমি নীতির বিরোধিতাই হয়ে উঠবে কংগ্রেসের অন্যতম হাতিয়ার।

এ দিনই কংগ্রেসের সদর দফতরে কিছু নথিপত্র পেশ করে গুজরাত বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শক্তিসিন গোহিল অভিযোগ করেন, গুজরাতের রাষ্ট্রায়ত্ত পেট্রোলিয়াম নিগমের টাকা দিল্লিতে জনসংযোগের জন্য ব্যবহার করছে বিজেপি। তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় পাওয়া সেই তথ্য প্রকাশ করে গোহিল বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার টাকা থেকে প্রায় ৯ লক্ষ টাকার শাড়ি ও লক্ষ টাকার মদ কেনা হয়েছে। সেই সঙ্গে হোটেল ভাড়া, গাড়ির খরচের জন্য বহু লক্ষ টাকা বিজেপির প্রচারে খরচ করা হয়েছে। আপের চাঁদা তোলার প্রক্রিয়া নিয়ে বিজেপি যখন সরব, তখন তাঁদের পাল্টা অস্বস্তিতে ফেলতেই কংগ্রেসের এই প্রয়াস। এ ব্যাপারে আজ সিবিআই তদন্তেরও দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস।

rahul gandhi delhi bjp aap
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy