Advertisement
E-Paper

হিমন্তকে পদে ফেরাতে গগৈকে নির্দেশ রাহুলের

অসম কংগ্রেসের অন্তর্কলহ মেটাতে আসরে নামলেন রাহুল গাঁধী। আজ দিল্লিতে রাহুলের বাসভবনে এক বৈঠকে ফের রাজ্য কংগ্রেসে হিমন্তবিশ্ব শর্মার গুরুত্ব প্রতিষ্ঠিত হল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৫ ০৩:০৭
হিমন্তবিশ্ব শর্মা ও তরুণ গগৈ

হিমন্তবিশ্ব শর্মা ও তরুণ গগৈ

অসম কংগ্রেসের অন্তর্কলহ মেটাতে আসরে নামলেন রাহুল গাঁধী। আজ দিল্লিতে রাহুলের বাসভবনে এক বৈঠকে ফের রাজ্য কংগ্রেসে হিমন্তবিশ্ব শর্মার গুরুত্ব প্রতিষ্ঠিত হল। দলীয় সূত্রে খবর, বৈঠকে অসমের কয়েক জন আমলা ও শীর্ষ পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে সঙ্ঘ পরিবারের হয়ে কাজ করার অভিযোগ তুললেন রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা। বিষয়টি নিয়ে সতর্ক হয়ে এগোনোর পরামর্শ দিয়েছেন রাহুল।

রাজ্যে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব চলছে তিন বছর ধরে। প্রাক্তন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জনাবিশেক বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের বিরোধী শিবির গড়ে তোলেন। ওই দলে ছিলেন কয়েক জন মন্ত্রীও। এক সময় গগৈ-বিরোধী শিবিরে বিদ্রোহী বিধায়কের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়ে যায়। তাঁরা দলের হাইকম্যান্ডের কাছে গগৈয়ের অপসারণ চেয়ে দরবার করেছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব গগৈয়ের উপরই আস্থা রাখেন। পরে, অঞ্জন দত্ত হিমন্ত-শিবির ছেড়ে গগৈয়ের দিকে চলে আসেন। বিদ্রোহী তিন মন্ত্রী পদ হারান। চাপের মুখে হিমন্তও পদত্যাগ করেন। বিদ্রোহী বিধায়কদের অনেককে মন্ত্রী, পরিষদীয় সচিব করে পরিস্থিতি সামলায় এআইসিসি। ভূবনেশ্বর কলিতাকে সরিয়ে অঞ্জন দত্তকে প্রদেশ সভাপতি করা হয়। কিন্তু তাতে বিবাদ মেটেনি। দলীয় নেতাদের মধ্যে মতবিরোধের জেরে তৃণমূল স্তরের কর্মীরা দিশাহারা হয়ে যান। তার জেরে লোকসভা নির্বাচন, পুর ও পঞ্চায়েত ভোট, বড়ো স্বশাসিত পরিষদের ভোটে কংগ্রেস শোচনীয় ফল করে।

অসমের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকরা বিদ্রোহ দমন করতে ব্যর্থ হওয়ায় তৎপর হন রাহুল। তিনি মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, অঞ্জন দত্ত ও হিমন্ত শর্মাকে দিল্লিতে তলব করেন। এ দিন সকাল ১১টা থেকে রাহুলের বাড়িতে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অসমের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা হয়। সেখানে অসমের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক সি পি যোশিও হাজির ছিলেন।

দলীয় সূত্রে খবর, বৈঠকে রাহুল গগৈকে বোঝান, দলে এখনও হিমন্তের গুরুত্ব অনেক। হিমন্ত তৃণমূল স্তর থেকে উঠে এসেছেন। তৃণমূল স্তরের কর্মীদের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা বেশি। খামোকা নিজেদের মধ্যে লড়াই চালিয়ে দলের ক্ষতি করলে আখেরে রাজ্যে ক্ষমতাহীন হতে পারে কংগ্রেস। তাই হিমন্তকে ফের গুরুত্বপূর্ণ পদে ফেরানোর পক্ষে সওয়াল করেন রাহুল। কিন্তু হিমন্ত প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, গগৈ মুখ্যমন্ত্রী থাকলে তিনি মন্ত্রী হবেন না। তাই, হিমন্তকে দলের অন্য কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল করার পরামর্শ দেন রাহুল। তিনি হিমন্তকে বোঝান, আপাতত অভিমান নয়, কংগ্রেস বাঁচানোর অভিযানে সেনাপতি হওয়াই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

কংগ্রেস সূত্রে খবর, অঞ্জনবাবু অভিযোগ করেন, হিমন্তের মালিকানাধীন সংবাদমাধ্যম ক্রমাগত সরকার বিরোধী খবর প্রচার করছে। হিমন্ত জানান, ওই চ্যানেলটি তাঁর নয়, স্ত্রীর মালিকানাধীন। তবে, তিনি এ নিয়ে সতর্ক থাকবেন।

প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে রাজ্যের শীর্ষ পুলিশকর্তা, শীর্ষ দুই প্রশাসনিক কর্তা এবং একাধিক আমলার বিরুদ্ধে বিজেপি ঘেঁষা হওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাহুল এ নিয়ে সাবধানে এগোনোর পরামর্শ দিয়েছেন। একেবারে উপরের স্তরে থাকা আমলা ও পুলিশকর্তাকে সরাতে না পারলেও তার নীচের স্তরের আমলাদের সংবেদনশীল এলাকা বা গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ থেকে সরানোর কথা বলা হয়।

বৈঠক থেকে বের হয়ে গগৈ বলেন, ‘‘আগামী বিধানসভা নির্বাচনের রণকৌশল নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। রাহুলের নির্দেশমতোই প্রদেশ কংগ্রেস কাজ করবে। আজকের বৈঠক এক ইতিবাচক সূচনা। পরিকল্পনা মতো এগোতে আমরা তৈরি।’’

himanta biswasharma tarun gogoi rahul gandhi assam congress congress conflict
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy