Advertisement
E-Paper

তথ্যপ্রযুক্তিতে ছাঁটাই, মোদীকে দুষলেন রাহুল

তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী ছাঁটাই নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আক্রমণ করলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের অবশ্য দাবি, বিপুল পরিমাণে কর্মী ছাঁটাইয়ের খবর পুরোপুরি ভুল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ০৩:৪৫
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী ছাঁটাই নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আক্রমণ করলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের অবশ্য দাবি, বিপুল পরিমাণে কর্মী ছাঁটাইয়ের খবর পুরোপুরি ভুল। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি প্রতি বছরই কিছু কর্মীকে ছেড়ে দেয়, আবার নতুন কর্মী নেয়। এ বছর অস্বাভাবিক কোনও রদবদল ঘটেনি। বেসরকারি সংস্থার ছাঁটাই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগায় রাহুল গাঁধীর এই সমালোচনাকে জনমোহিনী হওয়ার নিছক চেষ্টাও বলছেন অনেকে।

তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় ‘বিপুল পরিমাণে’ কর্মী ছাঁটাই নিয়ে কয়েক দিন ধরেই সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া। আজ রাহুল তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী ছাঁটাই সংক্রান্ত সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট তুলে ধরে টুইট করেন, ‘‘সরকারের দূরদর্শিতার অভাবে পথে বসা তরুণদের দেখে দুঃখ হচ্ছে।’’ মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে তাঁর টুইট, ‘‘প্রতিশ্রুতি ও কর্মক্ষমতার মধ্যে ফারাক গড়ে দেয় দক্ষতা ও দায়বদ্ধতা।’’

রাহুল মোদী সরকারকে আক্রমণ করলেও তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির সংগঠন নাসকম-এর দাবি, বিপুল পরিমাণে ছাঁটাইয়ের খবর ভুল। প্রতি বছরই কর্মক্ষমতার ভিত্তিতে কিছু কর্মী ছেড়ে দেওয়া হয়। আবার নতুন কর্মী নিয়োগ হয়। প্রতি বছর তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দেড় লক্ষ নতুন নিয়োগ হচ্ছে। তবে এখন কর্মীর সংখ্যা বাড়ানোর থেকে দক্ষতা, নতুন প্রশিক্ষণে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে তা জরুরি।

ইনফোসিস-কগনিজ্যান্টের মতো প্রথম সারির তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি দাবি করেছে, অন্যান্য বছরের মতোই কাজের ভাল-মন্দ বিচার করে ছাঁটাই হচ্ছে। কগনিজ্যান্টের হিসেব অনুযায়ী, যে সব কর্মীদের আর রাখা হচ্ছে না, তাঁদের সংখ্যা মোট কর্মীর তুলনায় মাত্র ২.৩ শতাংশ। ইনফোসিসেও মাত্র ১.৭ শতাংশ কর্মী কমছে। নাসকম তার বিবৃতিতে যুক্তি দিয়েছে, যে কোনও সংস্থাই ব্যবসার প্রয়োজন অনুযায়ী, নিয়মিত ভাবে কোন ধরনের দক্ষ কর্মী প্রয়োজন, তা ঠিক করে।

বিশেষজ্ঞ সংস্থা বিএমআর অ্যাডভাইসর্স-এর পার্টনার বিবেক গুপ্ত বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি এই ক্ষেত্রে কতখানি বৃদ্ধি হবে, তা আঁচ করে, সেই ভিত্তিতেই কর্মীর সংখ্যা ঠিক করছে। মনে রাখা দরকার, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে এখন কর্মীর সংখ্যা বিপুল। ফলে শতাংশের হিসেবে কর্মীর সংখ্যা খুব সামান্য কমানো হলেও তা বেশি দেখায়। কিন্তু মোটামুটি ভাবে কেন্দ্রীয় সরকার তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের জন্য সহায়ক নীতিই নিচ্ছে।’’

রাহুল আক্রমণ করলেও মোদী সরকার এখনও এ বিষয়ে মুখ খোলেনি। রবিশঙ্কর প্রসাদের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক সূত্রের যুক্তি, বেসরকারি সংস্থাগুলি নিজেদের প্রয়োজন মতো প্রতি বছরই কত জন কর্মী রাখা হবে, কত জনকে ছেড়ে দেওয়া হবে, তা ঠিক করে। এ বিষয়ে সরকার নাক গলায় না। বিবেক গুপ্ত-ও বলেন, ‘‘সরকার যে-টুকু করতে পারে, তা হল ট্রাম্প সরকারের এইচ-১বি ভিসার কড়াকড়ি নিয়ে আমেরিকার কাছে দরবার করা। কিন্তু ট্রাম্পের নীতি এখনও স্পষ্ট নয়।’’ তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘কর্মীর সংখ্যায় এই রদবদলের সঙ্গে এইচ-১বি ভিসার সম্পর্ক নেই। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় অটোমেশনের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দাপট ও গোটা ক্ষেত্রের বৃদ্ধির হার আগের তুলনায় কমে আসায় এমনটা ঘটছে।’’

কংগ্রেস নেতারা বলছেন, যথেষ্ট ভেবে-চিন্তেই রাহুল মোদী-সরকারকে নিশানা করেছেন। বেসরকারি সংস্থাকে দোষ দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু সরকারের উচিত, সাম্প্রদায়িক নীতির বদলে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় নীতি নেওয়া। কংগ্রেস নেতা শশী তারুর বলেন, ‘‘তথ্যপ্রযুক্তি পেশাদারের সঙ্গেই কথা বলে দেখছি, সকলেই চিন্তিত। সরকারের এ বিষয়ে সাড়া নেই, কী ভাবে মোকাবিলা করবে, তারও কোনও দিশা নেই।’’

Narendra Modi Rahul Gandhi Information Technology Recession নরেন্দ্র মোদী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy