E-Paper

লোকসভায় ‘ভোট চুরি’: রাহুল

গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি একার জোরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। বিজেপির জেতা আসনের সংখ্যা ২৪০-এ নেমে যাওয়ায় তেলুগু দেশম পার্টি, জেডিইউ-এর মতো শরিক দলের সমর্থনে ভর করে বিজেপিকে তৃতীয় বার সরকার গড়তে হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৫ ০৯:২৩
রাহুল গান্ধী।

রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।

এত দিন মহারাষ্ট্রের ভোটার তালিকায় কারচুপি হয়েছিল বলে রাহুল গান্ধী অভিযোগ তুলছিলেন। এ বার ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনেই ‘রিগিং’ হয়েছিল বলে দাবি করলেন তিনি। লোকসভার বিরোধী দলনেতার দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী খুব অল্প সংখ্যাগরিষ্ঠতার উপরে ভর করে সরকার গড়েছেন। যদি ১০-১৫টি লোকসভা কেন্দ্রে রিগিং না হত, তা হলে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রীই হতেন না। বাস্তবে ৭০ থেকে ৮০ বা ১০০টির মতো আসনে ভোটার তালিকায় কারচুপি বা রিগিং হয়েছে বলে রাহুল দাবি করেছেন।

গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি একার জোরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। বিজেপির জেতা আসনের সংখ্যা ২৪০-এ নেমে যাওয়ায় তেলুগু দেশম পার্টি, জেডিইউ-এর মতো শরিক দলের সমর্থনে ভর করে বিজেপিকে তৃতীয় বার সরকার গড়তে হয়েছে। আজ কংগ্রেসের আইন, মানবাধিকার ও তথ্যের অধিকার দফতরের আয়োজনে ‘সাংবিধানিক চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সম্মেলনে রাহুল বলেন, ‘‘আমরা আগামী দিনে প্রমাণ করে দেব, কী ভাবে একটা লোকসভা নির্বাচন চুরি করে জেতা যায় এবং কী ভাবে চুরি করে জেতা হয়েছে। যখন এই তথ্য সামনে আসবে, তখন ঝড় উঠবে। পরমাণু বোমা হয়ে উঠবে। কারণ দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই মৃত।’’

বিহারে ভোটার তালিকায় সংশোধন নিয়ে গোটা ইন্ডিয়া শিবির নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোট চুরির অভিযোগে সংসদ অচল করে রেখেছে। বিরোধীদের দাবি, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানার পরে বিহারে ভোটার তালিকায় কারচুপির চেষ্টা হচ্ছে। শুক্রবারই রাহুল দাবি করেছিলেন, ভোটার তালিকায় কারচুপি নিয়ে তাঁর কাছে ‘পরমাণু বোমা’র মতো প্রমাণ রয়েছে। সেই বোমা ফাটলে নির্বাচন কমিশনের আর কোনও অস্তিত্বই থাকবে না।

আজ রাহুল লোকসভা নির্বাচনেও চুরি হয়েছে বলে দাবি করার পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন ভোট চুরি করেছে বলে, তার প্রমাণ স্বরূপ রাহুল গান্ধী পরমাণু বোমা তৈরি করেছেন বলে দাবি করেছেন। যদি প্রমাণ থাকে, তা হলে পরমাণু বোমার পরীক্ষা হয়ে যাক। বাস্তব হল, রাহুল গান্ধীর কাছে কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই।’’

রাহুল আজ দাবি করেন, ২০১৪ থেকেই তাঁর মনে নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে সংশয় ছিল। তার আগে গুজরাতে বিজেপির জয়, কংগ্রেসের রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাতে একটিও আসন না জেতা নিয়ে সংশয় ছিল। কিন্তু প্রমাণ ছিল না। মহারাষ্ট্রে গত লোকসভা নির্বাচনে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বিপুল জয়ের চার মাস পরে বিধানসভা নির্বাচনে জোটের তিনটি দল কার্যত মুছে যায়। এই চার মাসে মহারাষ্ট্রে এক কোটি ভোটার যোগ হয়েছিল। যাদের সিংহভাগ ভোট বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছিল। রাহুলের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন এমন ভাবে ভোটার তালিকা দেয়, যা স্ক্যান করা যায় না, কপি করা যায় না। তাই ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখতে ছ’মাস লেগেছে। একটি এলাকায় দেখা গিয়েছে, সাড়ে ছ’লক্ষ ভোটারের মধ্যে দেড় লক্ষ ভোটারই ভুয়ো ভোটার। ভোটার তালিকায় এই কারচুপির প্রমাণ তিনি কিছু দিনের মধ্যেই প্রকাশ্যে আনবেন বলেও দাবি করেছেন রাহুল।

রাহুলের অভিযোগে নির্বাচন কমিশনকে নড়ে বসতে হয়েছে। কমিশনের দাবি, রাহুলের দাবি ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর। তিনি ভোট চুরির অভিযোগ তুলে কমিশনের উপরে চাপ তৈরি করছেন। রাহুলকে নির্বাচন কমিশন জুন মাসে আলোচনায় বসার জন্য আহ্বান জানিয়েছিল। তিনি সাড়া দেননি। নির্বাচন কমিশনের যুক্তি, লোকসভা নির্বাচনের ভোটার তালিকা সমস্ত রাজনৈতিক দলকে দেওয়া হয়েছিল। কেউই তা নিয়ে আপত্তি করেনি। ভোটের পরে কংগ্রেস মাত্র আটটি নির্বাচন পিটিশন দায়ের করেছে বলেও জানিয়েছে কমিশন।

কংগ্রেসের তরফে পাল্টা যুক্তি দেওয়া হয়েছে, বিহার-সহ গোটা দেশে ভোটার তালিকায় বিশেষ পরিমার্জনের সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্বাচন কমিশনই মেনে নিয়েছে যে, লোকসভা নির্বাচনের ভোটার তালিকায় খামতি ছিল।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rahul Gandhi Congress Maharashtra

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy