মধ্যাহ্নভোজনে মন্থন!
মোদী-শাহের রাজ্য গুজরাতে বিজেপিকে টেক্কা দিতে রাহুল গান্ধী মোদী-শাহের পথেই হাঁটতে চলেছেন। বলা ভাল, মধ্যাহ্নভোজন করতে চলেছেন।
আগামী ২০২৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে লড়াইয়ে নামার আগে রাহুল গান্ধী ২০২৭-এ গুজরাতের বিধানসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহকে ধাক্কা দিতে চাইছেন। সেই লক্ষ্যে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে রাহুল এ বার গুজরাতের প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে যাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিধানসভা কেন্দ্রে গিয়ে কংগ্রেসের জেলা সভাপতিদের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজন বা নৈশভোজ করবেন। প্রয়োজনে রাতও কাটাবেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, আগামী মাসেই এই ‘মিশন গুজরাত’-এর কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়ে যাবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে বিজেপি নেতারা প্রায়ই কোনও রাজ্যে ভোটের প্রচারে বা দলের কর্মসূচিতে গেলে সেখানে বিজেপি কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজন করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও তাঁর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতে বুথ কর্মীদের সঙ্গে একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজন করেছেন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও রাজ্যের বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে ‘টিফিন পে চর্চা’-র আয়োজন করেছেন। বিজেপির মতে, এর ফলে শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তৃণমূল স্তরের কর্মীদের মধ্যে দূরত্ব কমে। সংগঠন মজবুত হয়।
রাহুল গান্ধী কি একই পথে হেঁটে কংগ্রেসের সংগঠন মজবুত করতে চাইছেন?
কংগ্রেসের একাংশ মনে করছেন, ‘টিম রাহুল’ আসলে সরাসরি সাংগঠনিক কাজে নজরদারি করতে চাইছে। গত জুন মাসে গুজরাতে নতুন জেলা সভাপতি নিয়োগ করা হয়েছে। দশ দিন ধরে তাঁদের জুনাগড়ে প্রশিক্ষণ শিবির চলছে। রাহুল গান্ধী নিজে শুক্রবার জুনাগড়ের প্রেরণা ধাম আশ্রমে এই ‘সংগঠন সৃজন অভিযান’-এ যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে রাহুল নিজেই জানিয়েছেন, তিনি এবার গুজরাতের ১৮২টি বিধানসভা কেন্দ্রে সফর করবেন।
গুজরাতের বিধানসভা নির্বাচনের এখনও যথেষ্ট দেরি থাকলেও এখন থেকেই রাজ্যের সংগঠন ঢেলে সাজাতে চাইছে কংগ্রেস। ২০১৭-তে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বেই কংগ্রেস গুজরাতে বিজেপিকে ভাল রকম বেগ দিয়েছিল। কিন্তু তারপরে কংগ্রেসে ফের ধস নামে। ফলে ২০২২-এর গুজরাতের বিধানসভা নির্বাচনে রাহুল গান্ধী কার্যত হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। ভোটের প্রচারেই যাননি। সম্প্রতি গুজরাতের দুই বিধানসভা উপনির্বাচনেও কংগ্রেস হেরে গিয়েছে। যার পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে শক্তিসিন গোহিল ইস্তফা দেওয়ায় পরিষদীয় দলনেতা অমিত ছাবড়াকে প্রদেশ সভাপতি নিয়োগ করা হয়েছে। ‘টিম রাহুল’ মনে করছে, গুজরাতে কংগ্রেসকে ভাল ফল করতে হলে আগে প্রবীণ নেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করতে হবে। রাহুল গান্ধী তাই তাঁদের রিপোর্টে ভরসা না করে নিজেই মাঠে নেমে একইসঙ্গে গুজরাতি খাবারের স্বাদ ও দলের হাল পরখ করতে চাইছেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)