Advertisement
E-Paper

অযোধ্যায় গিয়ে রাম নয়, রামভক্ত হনুমানের শরণে রাহুল গাঁধী

চিত্রনাট্যে যেমনটি ছিল! অযোধ্যায় গিয়ে রাম নয়, রামভক্ত হনুমানের আশীর্বাদ নিলেন রাহুল গাঁধী। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর এই প্রথম অযোধ্যায় পা পড়ল গাঁধী পরিবারের কারও। হনুমানগড়ী থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরেই বিতর্কিত রামমন্দির সুকৌশলে এড়িয়ে গেলেন রাহুল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:২৭
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কট্টর সমালোচক মহন্ত জ্ঞান দাসের সঙ্গে রাহুল গাঁধী। শুক্রবার অযোধ্যার হনুমানগড়ী মন্দিরে। ছবি: পিটিআই।

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কট্টর সমালোচক মহন্ত জ্ঞান দাসের সঙ্গে রাহুল গাঁধী। শুক্রবার অযোধ্যার হনুমানগড়ী মন্দিরে। ছবি: পিটিআই।

চিত্রনাট্যে যেমনটি ছিল!

অযোধ্যায় গিয়ে রাম নয়, রামভক্ত হনুমানের আশীর্বাদ নিলেন রাহুল গাঁধী। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর এই প্রথম অযোধ্যায় পা পড়ল গাঁধী পরিবারের কারও। হনুমানগড়ী থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরেই বিতর্কিত রামমন্দির সুকৌশলে এড়িয়ে গেলেন রাহুল। প্রায় আড়াই দশক আগে ১৯৯০ সালে ‘সদ্ভাবনা যাত্রা’র সময় অযোধ্যায় গিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও সময়ের অভাবে সেখানকার হনুমানগড়ী মন্দিরে যেতে পারেননি। রাহুলের বয়স তখন ২০। আজ সেই রাহুল উত্তরপ্রদেশে তাঁর ‘কৃষক যাত্রা’র বেরিয়ে অযোধ্যায় হনুমানগড়ী দর্শনে গেলেন। দেখা করলেন এই মন্দিরের মহন্ত জ্ঞান দাসের সঙ্গেও। একান্তে মিনিট দশ বৈঠকও হল দু’জনের।

কেন রাহুলের এই অযোধ্যা সফর?

উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের নির্বাচনী কৌশল রচনার ভার এখন প্রশান্ত কিশোরের হাতে। তাঁর তৈরি চিত্রনাট্য মেনেই কৃষক যাত্রায় বেরিয়েছেন রাহুল। সেই চিত্রনাট্যের ছক থেকে ইতিমধ্যেই স্পষ্ট, ব্রাহ্মণ, সংখ্যালঘু, দলিত ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণি— কংগ্রেসের এই পুরনো ভোটব্যাঙ্ক ফের ঝুলিতে ফেরাতেই এই মহাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। যে কারণে ব্রাহ্মণ মুখ হিসেবে শীলা দীক্ষিতকে মুখ্যমন্ত্রীর পদপ্রার্থী করা হয়েছে। আবার হিন্দু ভোটকে কাছে টানার লক্ষ্যে নরম-হিন্দুত্বের কৌশল নিয়েই রাহুলের এই অযোধ্যা সফর। বিজেপি-আরএসএস এখন উচ্চবর্ণ থেকে দলিত— সকলকেই এক ছাতায় এনে হিন্দু ভোটকে একজোট করতে চাইছে। সেই হিন্দু ভোটে ভাগ বসাতেই রাহুল এখন আরএসএসের সঙ্গেও সম্মুখ সমরে নেমেছেন। মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর হত্যাকারী আরএসএসের লোক বলে মম্তব্য করে আদালতেও লড়াই করছেন সঙ্ঘের সঙ্গে।

তবে পাছে তাঁর অযোধ্যা সফর নিয়ে কোনও বিতর্ক বাধে, সরাসরি হিন্দুত্বের বার্তা যায়, সে দিকেও সতর্ক নজর রেখেছেন প্রশান্ত কিশোর। ভারসাম্য রেখেছেন চিত্রনাট্যে। এবং সেই অনুযায়ীই এ দিন সন্ধেতেই অম্বেডকর নগরের কাছে একটি দরগায় চাদর চড়িয়েছেন রাহুল।

অযোধ্যায় হনুমানগড়ীর মহন্ত জ্ঞান দাসের সঙ্গে দেখা করার পিছনেও ছিল সুচিন্তিত কৌশল। এই মহন্ত জ্ঞান দাস গোড়া থেকেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কট্টর সমালোচক। অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদের সদস্যও তিনি। দশ মিনিট বন্ধ ঘরে বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, তা অবশ্য কেউই খোলসা করেননি। মহন্ত জ্ঞান দাস পরে বলেন, ‘‘রাহুল আশীর্বাদ নিতে এসেছিলেন। কী মনস্কামনা নিয়ে এসেছিলেন, সেটি কখনও প্রকাশ্যে বলা যায় না। আমরা তাঁকে আশীর্বাদ করেছি। তাঁর মঙ্গল কামনা করি।’’

কংগ্রেস সূত্রের দাবি, রাহুল বিতর্কিত রামজন্মভূমি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে নেওয়ার পক্ষেই কথা বলেছেন এ দিন। মহন্তের সঙ্গে আলোচনায় উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন নিয়েও তাঁর কোনও কথা হয়নি। তবে হনুমানগড়ী মন্দিরে রাহুলের পারিষদরা পুরোহিতদের বলেন, রাহুল যাতে দেশের প্রধানমন্ত্রী হন, সেই আশীর্বাদ করুন। পুরোহিতরা রাহুলকে বলেন, ‘‘বিজয়ী ভব।’’

Rahul Gandhi Ayodhya Babri Masjid demolition
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy