Advertisement
E-Paper

ঘাবড়ে গিয়েছেন মোদী, কটাক্ষ রাহুলের

গ্রামে গিয়ে নোট-বাতিলের ‘সুফল’ বোঝাতে গিয়েছিলেন বিজেপির এক স্থানীয় নেতা। গ্রামবাসীর কিল-চড়-জুতো পেটা খেয়ে কোনও রকমে প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়েছেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৫০

গ্রামে গিয়ে নোট-বাতিলের ‘সুফল’ বোঝাতে গিয়েছিলেন বিজেপির এক স্থানীয় নেতা। গ্রামবাসীর কিল-চড়-জুতো পেটা খেয়ে কোনও রকমে প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়েছেন তিনি।

উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুরের একটি ছোট্ট গ্রামের ঘটনা। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মানুষের এই রোষকেই ভোটবাক্সে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন রাহুল গাঁধী-অখিলেশ যাদব। এই যুব নেতাদের যুগলবন্দিতে খোদ মোদীও যে অনেকটাই অস্বস্তিতে, তাও বোঝা যাচ্ছে জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর কথাতেই। বক্তৃতার সিংহভাগ জুড়েই তাঁকে আক্রমণ করতে হচ্ছে রাহুল-অখিলেশ জুটিকে। সাফাই দিতে হচ্ছে নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের। মোদীকে খোঁচা দিয়েই আরও আক্রমণাত্মক হচ্ছেন রাহুল-অখিলেশ।

উত্তরপ্রদেশের ভোট শুরুর ঠিক এক সপ্তাহ আগে আজ কানপুরে ছিল রাহুল-অখিলেশের সভা, আর মোদী ছিলেন আলিগড়ে। দুই যুব নেতা যে তাঁকেই নিশানা করবেন, তা আঁচ করেই আগেভাগে আত্মপক্ষ সমর্থন করে আক্রমণের পর্বটিও সেরে রাখেন মোদী। দাবি করেন, ২০১৪ সালে তাঁর বিরুদ্ধে বিরোধী নেতাদের এত আক্রোশ ছিল না। আজ হচ্ছে, কারণ তিনি বেইমানদের লুঠ ঠেকাতে নেমেছেন। কিন্তু দুর্নীতি রুখতে রাজ্যসভায় কড়া আইন যাতে পাশ না হয়, সে জন্য এই নেতারা একে অপরকে আঁকড়ে ধরে রোজ নতুন ফতোয়া জারি করছেন। অখিলেশ ও কংগ্রেস-সপা জোটকে নিশানা করে মোদীর মন্তব্য, ‘‘উত্তরপ্রদেশে প্রবল ঝড় উঠেছে। বিজেপির আঁধি-র মোকাবিলা করা যুবক মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষেও সম্ভব হচ্ছে না। যুব নেতা বুঝতে পারছেন, ঝড়ে উড়ে যাবেন তিনি। তাই একটা ল্যাম্পপোস্টকে জড়িয়ে ধরে বাঁচতে চাইছেন।’’ মোদীর দাবি, গেরুয়া ঝড়ে খড়কুটোর মতো উড়ে যাবে জোট।

এর পরেই ছিল রাহুল-অখিলেশের জবাব দেওয়ার পালা। রাহুল বলেন, ‘‘যেই আমরা একজোট হয়েছি, মোদীর মুখে হাসি মিলিয়ে গিয়েছে। আর ঘাবড়ে গেলেই উনি নানা ধরণের শব্দ নিয়ে আসেন। পিপিপি, এ বি সি ডি ই এফ।’’ মোদী তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা স্ক্যামের যে অভিযোগ চাপাচ্ছেন, রাহুল তাঁর নতুন পরিভাষা দেন। বলেন, তাঁর কাছে ‘এস’ হল সার্ভিস বা গরিবের সেবা। ‘সি’ কারেজ, সত্যি বলার সাহস। ‘এ’ এবিলিটি, প্রতিশ্রুতি পূরণের ক্ষমতা ও ‘এম’ হল মডেস্টি, নিজের দুর্বলতার কথা স্বীকার করা। রাহুলের কটাক্ষ, ‘‘মোদী ভাবেন, উনি সব জানেন। বাকিরা বোকা।’’ সেই সুরেই অখিলেশ বলেন, মোদী ও অমিত শাহের থেকে দেশ বাঁচানোটাই তাঁর ‘স্ক্যাম’। রাহুলের বক্তব্যের সময়েই জনতা ‘মোদী মুর্দাবাদ’ ধ্বনি তোলে। রাহুল বলেন, ‘‘কাউকে ‘মুর্দাবাদ’ বলবেন না। ভোটবাক্সে আক্রোশ দেখান।’’ তাঁর কটাক্ষ, বিহারে ভরাডুবির পর মোদী আর সে রাজ্যের কথা বলেন না। উত্তরপ্রদেশ ভোটের পরে মোদী ইউপি-ও উচ্চারণ করবেন না!

বিজেপি নেতারা ঘরোয়া ভাবে মানছেন, মনমোহন সিংহের বিপরীতে মোদীর পুঁজি ছিল তাঁর তারুণ্য। এখন উল্টো দিকে দুই যুব নেতার জুটি অস্বস্তিতে ফেলেছে তাঁকে। অখিলেশ ও রাহুল— ব্যক্তিগত ভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নেই। কিন্তু মোদী-অমিতরা লাগাতার দুর্নীতির কথা খুঁচিয়ে তুলছেন। কিন্তু এই দুই নেতা নিজেদের ব্যক্তিগত ‘স্বচ্ছ’ ভাবমূর্তির জোরে সে সব পাশ কাটিয়ে উল্টে মোদীর উপরেই দুর্নীতির অভিযোগ আনছেন। নোট বাতিল যে মুষ্টিমেয় বড়লোকের সুবিধার জন্যই মোদী করেছেন, সেটাই বড় করে প্রচার করছেন রাহুলরা। একে মোদীর ‘দুর্নীতি’ হিসেবে তুলে ধরছেন তাঁরা।

রাহুল-অখিলেশ এমন জায়গায় প্রচার করছেন, যেখানে সংখ্যালঘু ও দলিত ভোট বেশি। সুকৌশলে রাহুল বলছেন, অখিলেশের সঙ্গে তাঁর ফারাক একটাই। একজন বলেন ‘খোয়াব’, আর একজন বলেন ‘স্বপ্ন’। শমশের বাহাদুর সিংহের কবিতার লাইন তুলে ধরে রাহুল বলেন, ‘‘ম্যায় হিন্দি অউর উর্দু কা দোয়াব হু, ম্যায় ওহ্ আইনা হু জিসমে আপ হ্যায়।’’ রাহুলের মতে, এই জোট উত্তরপ্রদেশের ভবিষ্যতের আয়না। যেখানে যুবক, কৃষক, মহিলারা নিজেদের মুখ দেখতে পারবেন।

Rahul Gandhi Narendra Modi Akhilesh Yadav
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy