Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Caste Census

‘গরিবদের উন্নয়নে জাত সমীক্ষার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিতে’! বললেন রাহুল

এই পরিস্থিতিতে রাহুল বলেন, ‘‘কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে জাতভিত্তিক সমীক্ষা নিয়ে আমরা চার ঘণ্টা আলোচনা করেছি। গরিব জনতার উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ ইতিবাচক মাত্রা আনবে।’’

সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল গান্ধী।

সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:০০
Share: Save:

পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে অন্যান্য অনগ্রসর গোষ্ঠী (ওবিসি)-র ভোটব্যাঙ্ককে ‘পাখির চোখ’ করতে চাইছে কংগ্রেস। সোমবার নির্বাচন কমিশন রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, তেলঙ্গানা এবং মিজোরামে বিধানসভা ভোটের সূচি ঘোষণার পরেই সেই ‘বার্তা’ দিলেন দলের নেতা রাহুল গান্ধী। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘যে রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা জাত সমীক্ষার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁদের ধন্যবাদ। এই সিদ্ধান্ত কংগ্রেস ওয়াকিং কমিটি সমর্থন করছে।’’

বিহারে আরজেডি-জেডিইউ-কংগ্রেস-বামেদের ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকার ইতিমধ্যেই জাতভিত্তিক সমীক্ষায় কাজ অনেকটাই করে ফেলেছে। আদালতের ছাড়পত্র পাওয়ায় প্রকাশ করা হয়েছে অন্তর্বর্তী রিপোর্টও। কংগ্রেস শাসিত দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজস্থানের অশোক গহলৌত এবং ছত্তীসগঢ়ের ভূপেশ বঘেল জানিয়েছেন, ক্ষমতায় ফিরলে তাঁদের রাজ্যেও শুরু হবে জাতভিত্তিক সমীক্ষার কাজ।

এই পরিস্থিতিতে সোমবার রাহুল বলেন, ‘‘রবিবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে জাতভিত্তিক সমীক্ষা নিয়ে আমরা চার ঘণ্টা আলোচনা করেছি। গরিব আমজনতার উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ ইতিবাচক মাত্রা আনবে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের পাশাপাশি কংগ্রেস শাসিত হিমাচল প্রদেশ এবং কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীরাও তাঁদের রাজ্যে জাত সমীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই পদক্ষেপ ঐতিহাসিক।’’

প্রসঙ্গত, ২০২০-র নভেম্বরে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের জন্য সরকারি চাকরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট সিলমোহর দেওয়ার পরেই দেশ জুড়ে জাতভিত্তিক জনগণনার দাবি তুলেছিল বিহারের ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকার। এরপর দ্রুত শুরু হয় জাতগণনা। গত ৬ বছরের জুন বিহার সরকার জাতগণনার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। কিন্তু সেই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা দায়ের হয়েছিল পটনা হাই কোর্টে।

বিহারে জাত সমীক্ষার প্রথম পর্ব ৭ থেকে ২১ জানুয়ারি হয়েছিল। ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় পর্ব ১৫ মে পর্যন্ত চলার কথা ছিল৷ কিন্তু তার আগেই গত ৪ মে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল পটনা হাই কোর্ট। কিন্তু গত ১ অগস্ট জাতসমীক্ষার বিরুদ্ধে পটনা হাই কোর্টে যে জনস্বার্থ মামলাগুলি দায়ের হয়েছিল, তা খারিজ করে দেয় প্রধান বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রন এবং বিচারপতি পার্থসারথির বেঞ্চ। এর পরেই শুরু হয় জাতগণনার দ্বিতীয় পর্ব। গত ২ অক্টোবর তার প্রথম দফার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। গত ৬ অক্টোবর বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সরকারের এই পদক্ষেপে সম্মতি দিয়েছে শীর্ষ আদালতও।

জাত সমীক্ষার বিরোধীদের অভিযোগ, বিহার সরকারের এই পদক্ষেপ ‘বৈষম্যমূলক এবং অসাংবিধানিক’। এই পদক্ষেপ সংবিধানের মৌলিক অধিকার এবং ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদের (সমতা ও সাম্যের অধিকার) পরিপন্থী। ওবিসিদের জন্য এখন সরকারি চাকরি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে ২৭ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকে। কিন্তু ওবিসিদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের কাছাকাছি। স্বাভাবিক ভাবেই এই পরিস্থিতিতে ওবিসিদের জন্য আরও বেশি সংরক্ষণের দাবি উঠেছে। ফলে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চাকরিতে অসংরক্ষিত (জেনারেল) আসন আরও কমার সম্ভাবনা। সে ক্ষেত্রে মেধার উপর আঘাত আসবে বলে অভিযোগ জাত সমীক্ষার বিরোধীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rahul Gandhi Congress Caste Census OBC Bihar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE