‘কাঁটাচামচ আপনার সহায় হোক’, ইংরেজিতে লেখা রয়েছে অ্যাপ্রনে। যাতে ‘ও’ অক্ষরগুলির পেট-কাটা, আমেরিকান ওয়েব সিরিজ ‘গেম অব থ্রোনস’-এর নামলিপির আদলে। শতাব্দী প্রাচীন মিষ্টির দোকানে সেটি গায়ে চাপিয়ে দীপাবলির অমৃতি আর বেসনের লাড্ডু বানিয়ে এলেন রাহুল গান্ধী।
আজ দুপুরে রাহুলের এক্স হ্যান্ডলে একটি ভিডিয়ো প্রকাশকরে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। সাড়ে ছ’মিনিটের সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, রাহুল পুরনো দিল্লির দুশো বছরেরও বেশি পুরনো মিষ্টির দোকান ঘন্টেওয়ালায় গিয়েছেন। সবার সঙ্গে হাসিমজা করছেন। দোকান-মালিক সুশান্ত জৈন পরে জানিয়েছেন, বাড়ির আর আত্মীয়-বন্ধুদের জন্য মিষ্টি কিনে নিয়ে গিয়েছেন রাহুল।
১৭৯০ সাল থেকে চলে আসা দোকানটি শোহন হালুয়ার মতো ঐতিহ্যবাহী মিষ্টির জন্য বিখ্যাত। আইনি ও অন্যান্য জটিলতায় ২০১৫ সালে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। গত বছর থেকে চাঁদনি চকে আগের জায়গাতেই নতুন করে চালু হয়েছে। ঘন্টেওয়ালার কদরদার ছিলেন জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী। প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার বিয়েতেও মিষ্টি গেছিল সেখান থেকে। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, দোকানের মালিক রাহুলকে সে সব বলে বলছেন, রাহুল বিয়েটা করুন, তাঁরা অনুষ্ঠানের মিষ্টির বরাতপ্রার্থী হবেন। রাজীবপুত্র দরাজ হাসছেন তাতে। মজা করে বলছেন, মিষ্টির নাম-দামের সঙ্গে ক্যালোরির হিসাবটা তো কইলেখা নেই!
এর পরে ভিডিয়োয় রাহুলকে দেখা যায় পাকঘরে। প্রৌঢ় মিষ্টান্নশিল্পীর তত্ত্বাবধানে অমৃতি বানাতে। খুঁটিনাটি নানা প্রশ্নও করেন তাঁকে। বেশ কয়েক বারের প্রচেষ্টার পরে ছাঁকা তেলে কলাইয়ের ডাল বাটা দিয়ে করা নকসাগুলো ফুলের মতো যেমনটা দেখতে হওয়ার, অনেকটাই-হচ্ছিল। কারিগরও বলেন, ঠিকঠাক হচ্ছে। লাড্ডু বানানোর ফাঁকে ফাঁকে কথা চলতে থাকে। দোকান-মালিক বলেন, হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা মিষ্টি তৈরির কলা শেখানোর কোনও প্রতিষ্ঠান নেই দেশে। পেস্ট্রি-বার্গার বানালে ‘শেফ’ বলে সমীহ করা হয়। কিন্তু মিষ্টি বানালে তিনি হালুইকর, যোগ্য সম্মান মেলে না। কথায় কথায় কড়ায় পাক হতে থাকা লাড্ডুতে রাহুল কৃষকের অবদানের কথা বলেন। তার পরে হাতের মুঠোয় গোল পাকাতে গিয়ে বলেন,“সহজ না কিন্তু!”
শেষাংশে তত্ত্বাবধায়ক কারিগরকে দোকান-মালিক প্রশ্ন করেছিলেন, ছাত্র পাশ করেছে কি না, চাইলে বাড়িতে মিষ্টি বানাতে পারবে? জবাবে লাজুক হেসে মাথা নাড়েন প্রৌঢ়।
সংবাদ সংস্থা
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)