রেলকর্মীর ভুলেই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে রেলওয়ে সেফটি কমিশনার ইঙ্গিত দিয়েছেন, এমনটাই দাবি রেল সূত্রের। বুধবার রেল বোর্ডে ওই রিপোর্ট জমা পড়লেও রেলের পক্ষ থেকে তা এখনও প্রকাশ্যে আনা হয়নি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের রিপোর্টে ‘অন্তর্ঘাত’ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি বলে রেল সূত্রে খবর। ওই ঘটনায় অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে সিবিআই রেলের নির্দেশে পৃথক তদন্ত করছে।
গত ২ জুন ওড়িশার বাহানাগা বাজার স্টেশনে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা ঘটে। তাতে এ পর্যন্ত ২৯১ জনের মৃত্যু ঘটেছে বলে রেল সূত্রে খবর। দুর্ঘটনার পরে প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সিগন্যাল আপ মেন লাইনের দিকে থাকলেও পয়েন্ট লুপ লাইনের দিকে ঘোরানো ছিল। ফলে ওই লুপ লাইনে ঢুকেই সেখানে দাঁড়ানো ইস্পাতের আকরিক ভর্তি মালগাড়িতে ধাক্কা মারে করমণ্ডল। পরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ভারপ্রাপ্ত রেলওয়ে সেফটি কমিশনার অনন্ত মধুকর চৌধরি ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করেন।
দুর্ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়ার শেষে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে তাতে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার দিন স্টেশনের কাছে ৯৪ নম্বর রেল গেটে ( লেভেল ক্রসিং) পুরনো ব্যারিয়ার বদলে বৈদ্যুতিক বুম ব্যারিয়ার বসানোর কাজ চলছিল। ওই কাজের জন্য সেকশন সিগন্যাল ইনস্পেক্টর বিকেল ৪টে ২০ মিনিট নাগাদ বৈদ্যুতিন ইন্টারলকিং ব্যবস্থা ছিন্ন করার জন্য নির্দিষ্ট মেমো দেন। ঘণ্টা দুয়েক পরে ওই কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা স্টেশন মাস্টারকে জানিয়ে বৈদ্যুতিন ইন্টারলকিং ব্যবস্থার সংযোগ পুনস্থাপিত করার আর্জি জানিয়ে ফের মেমো দেন। ট্রেন আসার মুখে তড়িঘড়ি মেমো দিয়ে দেওয়া হলেও তার পরেও কিছু কাজ চলছিল। পাশাপাশি দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার ওই ব্যবস্থা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার আগেই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের জন্য সিগন্যাল দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দেন। নির্দিষ্ট ধাপ পেরিয়ে, নিশ্চিত হওয়ার আগেই সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু করে দেওয়াতেই পয়েন্টের ত্রুটি ধরা পড়েনি। রিপোর্টে সিগন্যালিংয়ের দায়িত্বে থাকা বিভাগ ছাড়াও ট্রেনের রুট নির্দিষ্ট করার দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক বিভাগকে দায়ী করা হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)