কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের থেকে আগেই সবুজ সঙ্কেত মিলেছিল। এ বার সেই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিল রেল মন্ত্রক ও রেল বোর্ড। ট্রেনের নিশ্চিত আসনের তালিকা প্রকাশ (রিজার্ভেশন চার্ট) করার সময়সীমা চার ঘণ্টার পরিবর্তে ন্যূনতম আট ঘণ্টা করা হল। বুধবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানাল মন্ত্রক। শুধু তা-ই নয়, দুপুর ২টোর আগে পর্যন্ত ট্রেনের নিশ্চিত আসনের তালিকা প্রকাশ হবে আগের রাতেই।
দূরপাল্লার ট্রেনে যাতায়াত করতে অনেকেই আগে থেকে সংরক্ষিত টিকিট কাটেন। নিয়ম অনুযায়ী, দু’মাস আগে থেকে ট্রেনের টিকিট কাটার সুযোগ পান যাত্রীরা। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, টিকিট বুকিং শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সংশ্লিষ্ট ট্রেনে সংরক্ষিত টিকিটের কোটা পূর্ণ হয়ে যায়। তার পরেই বাড়তে থাকে অপেক্ষমাণ তালিকা (আরএসি ও ওয়েটিং লিস্ট)। যদি কোনও যাত্রী টিকিট বাতিল করেন, তবেই টিকিট নিশ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেক ক্ষেত্রেই, টিকিট নিশ্চিত হয়েছে কি না, তা যাত্রীরা জানতে পারেন ট্রেনের নিশ্চিত আসনের তালিকা প্রকাশ পাওয়ার পরই।
এত দিন ট্রেনের নিশ্চিত আসনের তালিকা প্রকাশ করা হত সংশ্লিষ্ট ট্রেন ছাড়ার চার ঘণ্টা আগে। কিন্তু তার জেরে বিভিন্ন সময়ে সমস্যায় পড়তেন যাত্রীরা। এই অসুবিধার কথা মাথায় রেখেই ট্রেনের নিশ্চিত আসনের তালিকা প্রকাশ করার সময় চার ঘণ্টার পরিবর্তে ন্যূনতম আট ঘণ্টা করল ভারতীয় রেল। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সকাল ৫টা থেকে দুপুর ২টোর মধ্যে যে দূরপাল্লা ট্রেনগুলি ছাড়বে তার নিশ্চিত আসনের প্রথম তালিকা প্রকাশ করা হবে আগের দিন রাত ৯টায়। আর দুপুর ২টো থেকে রাত ১২টা এবং রাত ১২টা থেকে পরের দিন সকাল ৫টার মধ্যে ছাড়া দূরপাল্লা ট্রেনের নিশ্চিত আসনের প্রথম তালিকা প্রকাশ করা হবে সংশ্লিষ্ট ট্রেন ছাড়ার কমপক্ষে আট ঘণ্টা আগে। রেলের মতে, টিকিট যদি নিশ্চিত না হয় তবে সংশ্লিষ্ট ট্রেনের যাত্রীরা বিকল্প ব্যবস্থা করতে আরও অনেকটা সময় পাবেন!
আরও পড়ুন:
জুলাইয়ের পয়লা তারিখ থেকে ভারতীয় রেলে একগুচ্ছ নিয়মের পরিবর্তন করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য হল, তৎকাল টিকিট কাটার নিয়মের বদল। তৎকাল টিকিট নিয়ে কালোবাজারি রুখতে এজেন্টদের নিয়মে বাঁধছে রেল। অভিযোগ, অনলাইনে নিমেষে শেষ হয়ে যায় তৎকাল টিকিট। আবার কাউন্টার থেকে তৎকাল টিকিট কাটতে গিয়েও শূন্য হাতে ফিরতে হয় অনেককেই। নয়া নিয়মে তৎকাল টিকিট কাটার সময় শুরু হওয়ার প্রথম আধ ঘণ্টা সুযোগ পাবেন না এজেন্টরা। এসি কামরা হোক বা নন-এসি— সব ক্ষেত্রেই একই নিষেধাজ্ঞা থাকছে। শুধু তা-ই নয়, তৎকাল টিকিট কাটার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে আধার কার্ড। টিকিট কাটার সময় আধার কার্ডের সঙ্গে সংযুক্ত মোবাইল নম্বরে যাবে ওটিপি। সেই ওটিপি দেওয়ার পরেই টিকিট কাটতে পারবেন যাত্রীরা।
অন্য দিকে, দূরপাল্লা ট্রেনের ভাড়া সামান্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। দূরপাল্লার ট্রেনের নন-এসি দ্বিতীয় শ্রেণির টিকিটের (অসংরক্ষিত টিকিট) ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে আধ পয়সা করে বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে প্রথম ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভাড়া বৃদ্ধি থেকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। স্লিপার এবং প্রথম শ্রেণির অসংরক্ষিত টিকিটের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে আধ পয়সা করে ভাড়া বৃদ্ধি করেছে রেল। নন-এসির সংরক্ষিত টিকিটের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে এক পয়সা করে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। এসি শ্রেণির টিকিটের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে দু’পয়সা করে ভাড়া বৃদ্ধি করার কথা জানিয়েছে রেল। তবে নিত্যযাত্রীদের সিজন টিকিটের (মান্থলি) ভাড়ায় কোনও পরিবর্তন হবে না!