Advertisement
E-Paper

‘৪৯৮এ টি’, বেড়ি হাতে পরে শ্বশুরবাড়ির সামনে চায়ের দোকান দিলেন বধূ নির্যাতন মামলায় অভিযুক্ত!

রাজস্থানের বারান জেলার আন্তার বাসিন্দা কৃষ্ণকুমার ধকড়। তাঁর দাবি অনুযায়ী, ২০১৮ সালে বিয়ে করেছিলেন মীনাক্ষী মালভকে। স্ত্রী এবং মাকে নিয়ে সংসার। নববধূর সঙ্গে মৌমাছি পালনের ব্যবসা শুরু করেন। হঠাৎ ছন্দপতন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২৫ ১১:৩৪
KRISHNA KUMAR DHAKAR

চায়ের দোকানে কৃষ্ণকুমার ধকড়। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।

হাঁটতে হাঁটতে নতুন চায়ের দোকানটি দেখে থমকে যাচ্ছেন পথচারীরা। দোকানের নাম ‘৪৯৮এ টি ক্যাফে’! দোকানজুড়ে নানা হোর্ডিং। কোনওটিতে লেখা, ‘যব তক নহি মিলতা ন্যায়, তব তক উবলতি রহেগি চায়ে।’ কোথাও লেখা, ‘আও চায়ে পে করে চর্চা, ১২৫ মে কিতনা দেনেগা খরচা।’ ওই বার্তাগুলিই পথচলতি মানুষদের প্রায় টেনে নিয়ে যাচ্ছে দোকানের অন্দরে। দোকানের অন্দরেও অপেক্ষা করছিল আর এক বিস্ময়। কারণ, যিনি চা বিক্রি করছেন, তাঁর হাতে বেড়ি। একমুখ গোঁফ-দাড়ি। ব্যাপারটা কী? জবাবে চায়ের দোকানদার জানালেন, বধূ নির্যাতনের ‘মিথ্যা মামলায়’ ফাঁসানো হয়েছে তাঁকে। খোরপোশ দিতে গিয়ে আজ তিনি নিঃস্ব। বৃদ্ধা মা আছেন বাড়িতে। সংসার টানতে চায়ের দোকান খুলেছেন এবং সেটাও শ্বশুরবাড়ির ঠিক কাছে। এটাই তাঁর প্রতিবাদ!

রাজস্থানের বারান জেলার আন্তার বাসিন্দা কৃষ্ণকুমার ধকড়। তাঁর দাবি অনুযায়ী, ২০১৮ সালে বিয়ে করেছিলেন মীনাক্ষী মালভকে। প্রথম প্রথম ভালই ছিলেন। স্ত্রী এবং মাকে নিয়ে সংসার। নববধূর সঙ্গে মৌমাছি পালনের ব্যবসা শুরু করেন। কিছু দিনের মধ্যে লাভবান হন। এমনকি, তাঁদের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান দেখা করেছিলেন। কিন্তু বছর চারেকের মধ্যে ছন্দপতন!

কৃষ্ণের অভিযোগ, এক দিন তাঁকে কোনও কিছু না বলেই বাপের বাড়ি চলে যান স্ত্রী। কিছু দিন পর জানতে পারেন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তাঁর স্ত্রী। অভিযোগ? বধূ নির্যাতনের। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ (বধূ নির্যাতন) এবং ১২৫ (ভরণপোষণ) ধারায় স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন তিনি। যুবকের দাবি, স্ত্রী কেন এমনটা করেছেন, তার জবাব এখনও পাননি তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘একটা ভুয়ো মামলায় আমার জীবনটা ওলটপালট হয়ে গিয়েছে।’’ কৃষ্ণ জানান, গত তিন বছর ধরে তিনি ন্যায়বিচারের জন্য আদালতে যাতায়াত করছেন। আদালতের শুনানিতে উপস্থিত থাকতে হয়। সে জন্য ২২০ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে যাতায়াত করেছেন। কিন্তু মামলার যেন শেষ নেই! যুবকের কথায়, ‘‘প্রতি বারই মুলতুবি হয়ে যায়। ‘তারিখ পে তারিখ’ (তারিখের পর তারিখ)। বিচারের আশা দেখছি না। আমি ক্লান্ত। এই মামলায় জেরবার হয়ে গিয়েছি। আরও উপার্জনের জন্য দোকান খুলেছি।’’ কৃষ্ণ আরও জানান, বৃদ্ধা মা তাঁর উপর নির্ভরশীল। টিনের চালাঘরে তাঁরা থাকেন। স্ত্রীকে খোরপোশ দিতে দিতে অর্থ অবশিষ্ট নেই আর। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক বার ভেবেছি যে নিজেকে শেষ করে দেব। প্রতি বার মায়ের মুখ মনে পড়েছে। তাই নিজেকে আটকেছি।’’

এর পর এক দিন চায়ের দোকান খোলার কথা ভাবেন কৃষ্ণ। শ্বশুরবাড়ির অনতিদূরে ওই চায়ের দোকানের নাম দিয়েছেন ৪৯৮এ ধারার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে। আর হাতে বেড়ি কেন? কৃষ্ণের জবাব, ‘‘ওটা প্রতীকী। তিন বছর ধরে যে অপমান এবং যন্ত্রণা সহ্য করেছি, সেই কষ্টের তথা তুলে ধরতেই এটা পরেছি।’’ নিজের অসহায়তা বোঝাতে যুবকের এই কীর্তি ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যমে ভাইরাল। ‘এমবিএ চা-ওয়ালা’, ‘বিএড চা-ওয়ালা’-র মতো ‘৪৯৮এ টি ক্যাফে’-ও এখন ‘হিট’।

অন্য দিকে, স্বামীর এই সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মীনাক্ষী। তাঁর দাবি, কৃষ্ণ মিথ্যা বলছেন। মহিলা বলেন, ‘‘আমার বাবার কাছ থেকে ও টাকা চেয়েছিল জমি কিনবে বলে। আমরা যখন ‘না’ বললাম, তখন ও ওর রূপ দেখাল। আমাকে মারধর করত। তাই বাপের বাড়ি চলে এসেছি আমি। আমি এখন বিবাহবিচ্ছেদের জন্য তৈরি। তবে তার আগে আমার নামে যত ঋণ নিয়েছিল, সেগুলো শোধ করুক।’’

Tea shop Tea Seller 498A
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy