অরুণাচল প্রশ্নে বরাবরই স্পর্শকাতর চিন। তাই নরেন্দ্র মোদী সরকার অরুণাচলে ভারত-চিন সীমান্তে সড়ক বানানোর সিদ্ধান্ত নিতেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল চিন। আজ চিনের সেই আপত্তি উড়িয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। প্রতিবেশী দেশকে কড়া বার্তা দিয়ে তিনি জানান, ভারতকে হুমকি দেওয়ার অধিকার কোনও দেশের নেই। আজই দিল্লিতে শুরু হয়েছে ভারত-চিন যৌথ গোষ্ঠীর বৈঠক। তাতে সীমান্ত সমস্যা-সহ নানা বিষয় আলোচনা হয়েছে। তারই মধ্যে বেজিং-র প্রতি এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। কূটনীতিকদের মতে, চিনের সঙ্গে স্নায়ুর লড়াইয়ে পিছু হটবে না নয়াদিল্লি।
চলতি সপ্তাহেই ভারত-চিন সীমান্তে ম্যাকমোহন লাইন বরাবর চল্লিশ হাজার কোটি টাকা খরচে প্রায় ২০০০ কিলোমিটার রাস্তা বানানোর সিদ্ধান্ত নেয় নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভা। উদ্দেশ্য, উত্তর-পূর্বের চিন সীমান্তকে সুরক্ষিত করা। যাতে ভারত-চিন সীমান্তে সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে দ্রুত সেনা পাঠানো সম্ভব হয়। চিন ইতিমধ্যেই নিজেদের অংশে পাকা সড়ক তৈরি করে ফেলেছে। তৈরি হচ্ছে রেলপথ। দক্ষিণ তিব্বতে বানানো হচ্ছে পাঁচটি বিমানবন্দরও। এই পরিস্থিতিতে অরুণাচল সীমান্তের সুরক্ষা বাড়ানো নিয়ে উদ্যোগী হয়েছে নয়াদিল্লি।
কিন্তু মোদী মন্ত্রিসভার ওই সিদ্ধান্ত সামনে আসতেই গতকাল আপত্তি জানিয়ে বসে বেজিং। কারণ দীর্ঘ সময় ধরে অরুণাচলের বিস্তীর্ণ অংশ নিজেদের বলে দাবি করে আসছে তারা। সে দেশের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হং লি জানান, “ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যা এখনও মেটেনি। আশা করি, সেই সমস্যার সমাধানের আগে ভারত এমন কিছু করবে না যাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে।”
বেজিং-র ওই মন্তব্য সামনে আসতেই বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসেন সরকারের শীর্ষ কর্তারা। সম্প্রতি চিনের প্রেসিডেন্টের ভারত সফরের সময় যে ভাবে চিনা সৈন্য লাদাখে সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়ে তা মোটেই ভাল ভাবে নেননি বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই অরুণাচলে সড়ক নির্মাণ প্রশ্নে বেজিং আপত্তি তুললেও কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সরকার যে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে তা রূপায়িত করা হবে। কোনও বাধাই মানা হবে না। কোনও ভাবেই চিনের চাপে পিছু হটবে না ভারত। আজ দল তথা সরকারের সেই সুর স্পষ্ট ছিল রাজনাথের কথাতেও। তিনি বলেন, “ভারত একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র। এখন কোনও দেশই ভারতকে শাসাতে বা হুঁশিয়ারি দিতে পারবে না।” ঘটনাচক্রে আজই দিল্লিতে শুরু হয়েছে দু’দেশের যুগ্মসচিব পর্যায়ের বৈঠক। ওই বৈঠকে লাদাখ সীমান্তের জটিলতা ছাড়াও অরুণাচলের সীমান্ত সমস্যা ও সড়ক নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, উভয় পক্ষ নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকলেও সমাধান সূত্র বের করার চেষ্টা চালু রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy