পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষ ভারতীয় পরিবারের অঙ্গ। নিজে থেকেই তাঁরা এক দিন ভারতে ফিরে আসবেন। একটি অনুষ্ঠান থেকে বৃহস্পতিবার এমনই মন্তব্য করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে পাকিস্তানকেও আক্রমণ করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদ এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়েই একমাত্র কথা হতে পারে ইসলামাবাদের সঙ্গে।
বৃহস্পতিবার সিআইআই বাণিজ্য সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন রাজনাথ। সেখানেই তাঁর ভাষণে উঠে আসে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রসঙ্গ। রাজনাথ বলেন, ‘‘আমি পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষদের আপন বলেই মনে করি। ওঁরা আমাদের পরিবারের অঙ্গ। আমার বিশ্বাস, আমাদের যে ভাইয়েরা ভৌগোলিক এবং রাজনৈতিক ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছেন, একদিন তাঁরা নিজেদের মনের তাগিদেই ভারতের মূলস্রোতে ফিরে আসবেন।’’ পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বেশির ভাগ মানুষই ভারতের সঙ্গে ‘গভীর সংযোগ’ অনুভব করেন, জানিয়েছেন রাজনাথ। তাঁর মতে, সেখানকার কিছু মানুষকে ভুল বোঝানো হয়েছে। কিন্তু তাঁরাও সঠিক পরিস্থিতি বুঝতে পারবেন এবং ভারতে ফিরে আসবেন। রাজনাথের কথায়, ‘‘ভারত সব সময় হৃদয়ের বন্ধনের কথা বলে। আমাদের বিশ্বাস, ভালবাসা এবং সত্যের পথে হেঁটেই একদিন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষ ভারতে ফিরবেন এবং বলবেন, আমরা ভারতীয়। সেই দিন খুব দূরে নেই।’’
আরও পড়ুন:
-
এগোচ্ছে নিম্নচাপ, বিকেলেই পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ! দিঘা থেকে আর কত দূরে
-
সিকিম যেতে পারলেন না মোদী, খারাপ আবহাওয়ার কারণে বাতিল সফর, বাগডোগরা থেকে ভার্চুয়াল কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী
-
‘ভারত যাতে জল বন্ধ করতে না-পারে সেই ব্যবস্থা করছি’! দুই ‘বন্ধু’ প্রেসিডেন্টকে পাশে নিয়ে দাবি পাক প্রধানমন্ত্রীর
সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিয়েছেন রাজনাথ। জানিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদের জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে পাকিস্তানকে। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর সেটা ইসলামাবাদ উপলব্ধি করেছে। ভারতের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পরিচয়ও এই অভিযানের মাধ্যমে পাকিস্তান-সহ গোটা বিশ্ব পেয়ে গিয়েছে, দাবি রাজনাথের।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। তার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করে ভারত। প্রত্যাঘাতের অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। তার মাধ্যমে গত ৬ মে মধ্যরাতে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। গুঁড়িয়ে দেয় একাধিক জঙ্গিঘাঁটি। পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালায় ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায়। টানা চার দিন এই সংঘর্ষ চলেছে। অবশেষে গত ১০ মে দুই দেশ সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়। ভারত বার বার দাবি করেছে, পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসলে কেবল দু’টি বিষয়েই আলোচনা হতে পারে— সন্ত্রাসবাদ এবং কাশ্মীর সমস্যা। পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফও নয়াদিল্লির সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘‘বাণিজ্য এবং সন্ত্রাসবাদ পাশাপাশি চলতে পারে না। জল এবং রক্ত পাশাপাশি বইতে পারে না।’’ রাজনাথের বৃহস্পতিবারের বক্তব্যেও সেই সুরই শোনা গেল।