Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Rajya Sabha

M. Venkaiah Naidu: প্রশংসা, কটাক্ষে সজল বেঙ্কাইয়া

রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়ার বিদায়ী বক্তৃতায় অংশ নিলেন বিভিন্ন দলের সংসদীয় নেতারা। শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী।

 বিদায়ী উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে।

বিদায়ী উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে। রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। নয়াদিল্লিতে সোমবার। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২২ ০৭:৩৪
Share: Save:

আবেগে অশ্রুপাত, তৃণমূল কংগ্রেসের পরোক্ষে রাজনৈতিক শর নিক্ষেপ, চলতি অধিবেশনের শেষ দিনে (আজ অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি হয়েছে সংসদের উভয় কক্ষ) প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বক্তৃতা— সব মিলিয়ে আজ দীর্ঘ সাংবিধানিক, প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক পথ পরিক্রমা শেষ হল বর্ণময় নেতা এম বেঙ্কাইয়া নায়ডুর।

রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়ার বিদায়ী বক্তৃতায় অংশ নিলেন বিভিন্ন দলের সংসদীয় নেতারা। শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী। তবে পরিস্থিতি নাটকীয় হল রাজ্যসভায় তৃণমূলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের বক্তৃতায় সময়। গল্পের ছলে বলেন, “স্বাধীনতার ঠিক পরেই অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশে যাঁদের জমিজমা ছিল, তাঁদের গুরুত্ব বেশি-কম নির্ধারিত হত জমিমালিকের বলদের সংখ্যার হিসাবে। এ রকমই একটি পরিবারের আট জোড়া বলদ ছিল, যার একটি পরিবারেরই এক জন ভদ্রমহিলার পেটে গুঁতিয়ে দেয়। তাঁর কোলে থাকা বাচ্চাটি পড়ে যায়। ওই ঘটনায় শিশু বাঁচলেও মা বাঁচেননি। মাত্র এক বছর বয়সেই শিশুটি মাতৃহারা হয়। মাননীয় সভাপতি মহাশয় এ আপনার কাহিনি। এরপর আপনার যাত্রাপথ অতুলনীয়।”

সংসদের উচ্চকক্ষে তৃণমূলের দলনেতা যখন এই কাহিনি বর্ণনা করছেন, তখন কেঁদে ফেলেন রাজ্যসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান। আজ তাঁর রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হিসাবে শেষ দিনও বটে। রুমাল বার করে বারবার চোখ মুছতে দেখা যায় তাঁকে। স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করলেও তিনি দৃশ্যতই বিষণ্ণ।

সংসদে এ বারের বাদল অধিবেশনে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রথম বার বলতে ওঠেন। বিভিন্ন ভূমিকায় বেঙ্কাইয়ার প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আমার সৌভাগ্য, আমি আপনাকে কাছ থেকে দেখেছি। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছি।” এর পরেই কংগ্রেসকে তাঁর প্রচ্ছন্ন নিশানা, “এ বার এমন এক ১৫ অগস্ট, যখন দেশের রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী— সকলেই স্বাধীন ভারতে জন্মেছেন। এঁরা সাধারণ পরিবার থেকে এসেছেন। এর একটি সাংকেতিক গুরুত্ব রয়েছে। দেশের নেতৃত্ব এখন নতুন যুগের হাতে।”

ডেরেক তাঁর বক্তৃতা শুরু করেছিলেন বেঙ্কাইয়ার শৈশবের অধ্যায় দিয়ে। এর পরে তিনি বলেন, “যে শিশুটি কৃষক পরিবার থেকে উঠে এসেছিলেন তিনি কালক্রমে উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হন। এরপর ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর যখন রাজ্যসভায় কৃষি আইন পাশ করা হয়েছিল, তখন আপনি আসনে ছিলেন না।” তিনি বলতে থাকেন, “২০১৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর (ইউপিএ সরকার তখন) পেট্রল-ডিজ়েলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সংসদে আপনি একটি আবেগঘন বক্তৃতা দিয়েছিলেন।” এর পরেই ডেরেক বর্তমান অধিবেশনের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে প্রতিবাদের পরিণতি (সাংসদ সাসপেন্ড) নিয়ে বলতে গিয়েও সামলে নেন। বলেন, “আমি এ সবের মধ্যে যেতে চাইছি না!” তবে না গিয়েও বেঙ্কাইয়ার অতীতের ফোনে আড়িপাতার বিরুদ্ধে একটি জ্বালময়ী বক্তৃতার কথা উল্লেখ করেন ডেরেক। তোলেন পেগাসাস প্রসঙ্গও। রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতার কথায়, “আপনি সবসময় কোনও সংঘাত হলে বলেন, বিরোধী দল এবং সরকার কথা বলুক। কথা বলে সমস্যার সামাধান করুক। আপনি অনেক চেষ্টাও করেছেন রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রীকে অন্তত একটি প্রশ্নেরও জবাব দেওয়াতে। কিন্তু তা হয়নি।’’ খোঁচাটা স্পষ্ট।

বেঙ্কাইয়া তাঁর বক্তৃতায় সর্বদাই শব্দের আদ্যক্ষর (ইংরেজিতে) মিলিয়ে মিলিয়ে কথা বলার জন্য বিখ্যাত। আজ তাঁর চেয়ারম্যান পদের শেষে দিনেও তার অন্যথা ঘটেনি। সংসদের লাইব্রেরি বিল্ডিং-এ তাঁর বিদায় অনুষ্ঠানে বেঙ্কাইয়াবলেন, “সাংসদদের আমি অনুরোধ করছি তিনটি ডি-কে অনুসরণ করার। তা হল ডিগনিটি, ডিসেন্সি এবং ডিবেট।” চতুর্থ ‘ডি’ অর্থাৎ ‘ডিসরাপশন’ থেকে দূরে থাকতেই পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rajya Sabha M. Venkaiah Naidu Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE