Advertisement
E-Paper

ধর্ষিতার ‘ভাল’র জন্যই অপরাধীকে মুক্তি কোর্ট়ের

যুবতী মেয়ে। তায় আবার অনাথা। এ অবস্থায় অবৈধ সন্তানকে নিয়ে সে কী করবে, সে কথা ‘চিন্তা’ করে তার ধর্ষককে জামিনে মুক্তি দিলেন মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি ডি দেবদাস। কোর্টের বক্তব্য, মেয়েটির সঙ্গে বোঝাপড়ায় যেতে চায় অপরাধী।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৫ ০৩:৪৬

যুবতী মেয়ে। তায় আবার অনাথা। এ অবস্থায় অবৈধ সন্তানকে নিয়ে সে কী করবে, সে কথা ‘চিন্তা’ করে তার ধর্ষককে জামিনে মুক্তি দিলেন মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি ডি দেবদাস। কোর্টের বক্তব্য, মেয়েটির সঙ্গে বোঝাপড়ায় যেতে চায় অপরাধী। জেলে থেকে সেটা সম্ভব নয়। তাই মেয়েটির ‘ভাল’র জন্যই তার ধর্ষককে মুক্তি দেওয়া হল।

কিন্তু কী ভাবে এক নির্যাতিতা তরুণীকে তাঁর ধর্ষকের সঙ্গে মধ্যস্থতায় যেতে বলে আদালত? কী ভাবেই বা সেই কারণে শাস্তির মেয়াদ শেষের আগেই তাকে জামিনে মুক্তি দিতে পারে? প্রশ্ন উঠছে। সমালোচনার ঝড় উঠেছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও। অনেকেই বলছেন, এক নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনা এত হাল্কা ভাবে নিচ্ছে কেন মাদ্রাজ হাইকোর্ট? কী করেই বা বলছে আদালতের বাইরে ঝামেলা মিটিয়ে নিতে?

বছর সাতেক আগের ঘটনা। ১৫ বছরের একটি মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযোগের আঙুল ওঠে ভি মোহন নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে কিশোরী। ঘটনার প্রায় চার বছর পরে ২০১২ সালে কুদ্দালোরের মহিলা আদালত মোহনকে দোষী সাব্যস্ত করে। সাত বছরের কারাদণ্ড শোনায় কোর্ট। সেই সঙ্গে দু’লক্ষ টাকা জরিমানা। মহিলা আদালতের রায়কে পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মাদ্রাজ হাইকোর্টে যায় মোহন। বিচারে তাকে জামিনে মুক্তি দিলেন বিচারপতি।

তাঁর কথায়, ‘‘সমস্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে নিশ্চিত, দু’পক্ষের বোঝাপড়ায় এই মামলার সমাধান হয়ে যাবে। আর সেটাই ওদের পক্ষে সব চেয়ে ভাল হবে...। অপরাধীকে জেলে রেখে সেটা সম্ভব হতো না।’’

বিচারপতি দেবদাস আরও বলেন, ‘‘মোহন যাতে এক জন স্বাধীন মানুষ হিসেবে চিন্তাভাবনা করতে পারে, সেই সুযোগটাই ওকে করে দেওয়া হচ্ছে।’’ তার পরেই বলেছেন, ‘‘ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়...।’’

নিজেকে জেলের বাইরে দেখতে চেয়েই মহিলা আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মাদ্রাজ আদালতে গিয়েছিল মোহন। প্রশ্ন উঠছে, মোহনের সেই ইচ্ছের কথাই কি বলতে চেয়েছেন বিচারপতি?

এ হেন রায়ের কারণ হিসেবে আদালত বলেছে, ‘‘সমঝোতার মাধ্যমে অনেক বিতর্কেরই নিষ্পত্তি হয়েছে। ইসলাম, হিন্দু বা খ্রিস্টধর্ম, সবেতে এমন বহু নজির আছে।’’

কারণ, আরও একটা আছে। নির্যাতিতার প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে বিচারপতি বলেন, ‘‘মেয়েটি এখন একটি বাচ্চার মা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তিনি কারও স্ত্রী নন। অর্থাৎ তিনি কুমারী মা। এই সব ক্ষেত্রে মেয়েরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু যে বাচ্চাটি জন্ম নিয়েছে, তারই বা কী দোষ। সারা জীবন সমাজ তাকে দুষে যাবে।’’

বিচারপতি জানান, ধর্ষিতা মেয়েটিকে বিয়ে করতে আগেই রাজি হয়েছিল মোহন। তাকে নিজের ভুল শোধরানোর একটা সুযোগ করে দেওয়া হল মাত্র। যদিও আদালতের এই সব ‘যুক্তি’তে প্রশ্ন থামছে না।

Madras High Court Rape participate police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy