বাংলাদেশে মৃত হাতির দেহ। — নিজস্ব চিত্র।
দেড় মাসের ধকল, বারবার ঘুমপাড়ানি গুলির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারল না ‘বঙ্গ বাহাদুর’। আজ সকালে বাংলাদেশের সরিষাবাড়ি উপজেলার কয়রা গ্রামের বাদা বিলে মারা গেল অসম থেকে বাংলাদেশে ভেসে যাওয়া হাতিটি।
হাতি উদ্ধারকারী দলের সদস্য তথা ঢাকা বন্যপ্রাণ অপরাধ দমন শাখার ইনস্পেক্টর অসীম মল্লিক ও পশু চিকিৎসক সৈয়দ হোসেনরা জানান, অসম থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার জলে ভেসে আসা হাতিটি কয়েক সপ্তাহ ধরে জামালপুরে যমুনার চরে আশ্রয় নিয়েছিল। অসমের প্রতিনিধিরা হাতিটির অবস্থা দেখে তাকে বাংলাদেশেই রেখে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তখন কয়েক বার তাকে ঘুম পাড়িয়ে ডাঙায় তোলার চেষ্টা করলেও সাফল্য মেলেনি।
১১ অগস্ট হাতিটিকে ঘুম পাড়িয়ে ডাঙায় তোলা হয়। গ্রামবাসীরা আদর করে তার নাম রাখেন ‘বঙ্গ বাহাদুর’।
কিন্তু রবিবার পায়ের শিকল ছিঁড়ে পালায় সে। ফের তাকে ‘ট্রাঙ্কুইলাইজ’ করা হয়। কিন্তু দুর্বল শরীর ক্রমেই খারাপ হতে থাকে। গত কাল অসুস্থ বঙ্গ বাহাদুর বাদা বিলে পড়ে যায়। তাকে খাবার, ওষুধ ও স্যালাইন দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা হয়েছিল। তাকে গাজিপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনটি কুনকি হাতিও আনার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু তা কাজে লাগল না। তার গায়ে জল ছিটিয়ে ঠান্ডা করার চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। হাতিটি কোনও পোষা হাতিকে সহ্য করতে পারছিল না। তার পায়ের আঘাতে মাহুত আবু তাহের জখম হন। আজ সকাল সাতটা নাগাদ হাতিটির মৃত্যু হয়।
ঘটনার পরে দুঃখে ভেঙে পড়েন কয়রা গ্রামের বাসিন্দারা। অনেকেই অভিযোগ তোলেন, বন দফতরের গাফিলতি ও সঠিক দেখভালের অভাবেই হাতিটিকে বাঁচানো গেল না। হাতিটি যত দিন জলে ছিল আশপাশের গ্রাম থেকে প্রতি
দিন নৌকো করে অনেকে তাকে দেখতে আসতেন।
এই ঘটনাকে অপ্রত্যাশিত বলছেন বাংলাদেশের উপপ্রধান বন সংরক্ষক তপন কুমার দে। তাঁর কথায়, ‘‘বঙ্গবাহাদুরকে ভাল ভাবে উদ্ধার করার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। কিন্তু সম্ভবত প্রতিকূল পরিবেশের জন্যই তার মৃত্যু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy