Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বেহাল রাস্তা নিয়ে নাজেহাল শিলচর

বেহাল রাস্তার জন্য শিলচরে ঘর থেকে বেরনো মুশকিল। ছোট-বড় গর্তে ভরা গোটা শহরের রাজপথ। ইটখলা-ঘনিয়ালা-মালুগ্রাম রোড, অম্বিকাপট্টি-চেংকুড়ি-আশ্রমরোড— সব জায়গার ছবি একই। একই হাল শহরের প্রাণকেন্দ্রে এনএন দত্ত রোড বা প্রেমতলা থেকে রাঙিরখাড়ি অংশেরও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলচর শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৫ ০৩:১১
Share: Save:

বেহাল রাস্তার জন্য শিলচরে ঘর থেকে বেরনো মুশকিল। ছোট-বড় গর্তে ভরা গোটা শহরের রাজপথ। ইটখলা-ঘনিয়ালা-মালুগ্রাম রোড, অম্বিকাপট্টি-চেংকুড়ি-আশ্রমরোড— সব জায়গার ছবি একই। একই হাল শহরের প্রাণকেন্দ্রে এনএন দত্ত রোড বা প্রেমতলা থেকে রাঙিরখাড়ি অংশেরও।

মোটরসাইকেল, রিকশাচালকদের সঙ্গে চরম দুর্ভোগে পথচারীরা। হাঁটাও সমস্যার। এমনিতেই শিলচর শহরের অধিকাংশ জায়গায় ফুটপাত নেই। কোনও কোনও জায়গায় থাকলেও সেগুলিতে হাঁটা যায় না। কারণ মাঝেমধ্যেই সেখানে কংক্রিটের স্ল্যাব উধাও।

২০০৭-০৮ সাল নাগাদ একই পরিস্থিতি ছিল। তখনও শহরে চলাচলে অসুবিধায় পড়েন নাগরিকরা। দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় সব সড়ক সংস্কার করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ দিন সংস্কারের অভাবে ফের সেগুলি বেহাল। দায়সারা নির্মাণ এবং তদারকিতে গাফিলতি তার অন্যতম কারণ। রাস্তার হাল ফেরানোর দাবিতে জায়গায় জায়গায় আন্দোলন শুরু হয়েছে। কোথাও সড়ক অবরোধ, কোথাও ধর্নায় বসছেন সাধারণ মানুষ। তাঁরা দেখা করছেন জেলাশাসক, পূর্ত কর্তাদের সঙ্গে। গত কাল নাগরিক স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম পরিষদ পূর্ত বিভাগের জাতীয় সড়ক ও গ্রামীণ সড়ক বিভাগের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে দেখা করেন। দ্রুত রাস্তা নির্মাণের দাবি জানান।

গ্রামীণ সড়ক বিভাগের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার এ কে চন্দ জানান, ১০টি সড়কের সংস্কার প্রকল্প তৈরি করে সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। সে জন্য ৫ কোটি ৩৪ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। সেই রাস্তাগুলির মধ্যে রয়েছে এন এন দত্ত রোড, ঘনিয়ালা রোড, সেকেন্ড লিঙ্ক রোড, উল্লাসকর দত্ত সরণি, কাঁঠাল রোড। তবে, সেই সব প্রকল্পে বরাদ্দ পেতে সময় লাগবে। তাই শহরের কয়েকটি সড়ক আপাতত চলাচলের উপযুক্ত করতে তিনি প্রশাসনের উচ্চ মহলে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। চন্দবাবু বলেন, ‘‘শিশুমন্দির স্কুল হয়ে মাদার টেরেসা রোড, নাগাপট্টি থেকে রাধামাধব রোড এবং ঘনিয়ালা রোডে দ্রুত মেরামতির কাজ করা হবে।’’

শহরের রাস্তার বেহাল দশার দায় অবশ্য নিতে রাজি নন স্থানীয় কোনও নেতাই। সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন, ‘‘এ সব তদারকির দায়িত্ব বিজেপি বিধায়ক দিলীপ পালের।’’ ইটখলায় রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী অজিত সিংহের বাড়ির সামনের রাস্তার বিটুমিনের চিহ্নমাত্র নেই। কিন্তু সেই রাস্তা সারাইয়ের জন্য টাকা বরাদ্দ করানোর ক্ষমতা তাঁর নেই বলে জানিয়েছেন খোদ মন্ত্রীও। তিনিও আঙুল তুলেছেন দিলীপবাবুর দিকেই। বিধায়ক দিলীপ পালের মন্তব্য, ‘‘গত বছর ডিসেম্বরে প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের উন্নয়নে ১ কোটি টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নানা অজুহাত দেখিয়ে বরাকের বিধায়কদের ওই টাকা দেওয়া হয়নি। কংগ্রেসের কেউ তা নিয়ে তখন প্রতিবাদও করেননি।’’ পূর্ত বিভাগ যে ৫ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকার প্রকল্প পাঠিয়েছে, তা তাঁরই উদ্যোগে তৈরি বলে দাবি করেছেন দিলীপবাবু। তিনি জানিয়েছেন, সে সবের মঞ্জুরি আদায়ের চেষ্টা করছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE