Advertisement
E-Paper

শ্রমিক-কৃষক পাশে রাখতে তৎপর সঙ্ঘ

তার পরেই ৬২টি কৃষক সংগঠন রে-রে করে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে দেশ জুড়ে। পুলিশের গুলিতে কৃষকদের মৃত্যু আগুনে ঘি ঢালার কাজ করেছে। আর সেই আন্দোলনে কার্যত একঘরে এখন সঙ্ঘের কৃষক সংগঠন।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৭ ০৫:০১
কৃষক বিক্ষোভে উত্তাল মন্দসৌর।

কৃষক বিক্ষোভে উত্তাল মন্দসৌর।

দলছুট হয়ে পড়ার আশঙ্কায় এ বারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আরও আক্রমণাত্মক হতে হচ্ছে আরএসএসের কৃষক ও শ্রমিক সংগঠনকে।

সঙ্ঘের কৃষক সংগঠন ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘ (বিকেএস) সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের সঙ্গে সমঝোতা করে আন্দোলন তুলে নেয়। তার পরেই ৬২টি কৃষক সংগঠন রে-রে করে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে দেশ জুড়ে। পুলিশের গুলিতে কৃষকদের মৃত্যু আগুনে ঘি ঢালার কাজ করেছে। আর সেই আন্দোলনে কার্যত একঘরে এখন সঙ্ঘের কৃষক সংগঠন। একই অবস্থা আরএসএসের শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ (বিএমএস)-এরও। তাদের বাদ দিয়েই ১০টি অন্য শ্রমিক সংগঠন নিজস্ব দাবিদাওয়া ছাড়াও কৃষক-হেনস্থা ও গোরক্ষকদের তাণ্ডবের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামছে।

এই অবস্থায় কৃষক ও শ্রমিকদের নিজেদের পাশে ধরে রাখতে সঙ্ঘের সংগঠনগুলিও মোদী সরকারের বিরুদ্ধে পৃথক আন্দোলনে নামতে বাধ্য হচ্ছে। জুলাই মাসে উদয়পুরে বৈঠকে বসবেন কিষাণ সঙ্ঘের প্রতিনিধিরা। দু’মাস পরে সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে সাংসদদের ঘেরাও করার অভিযানে নামবে সঙ্ঘের সংগঠন। যে মধ্যপ্রদেশে তারা একঘরে হয়ে পড়েছে, সে রাজ্যেও আগামী ৫ থেকে ১৫ জুলাই বিধায়কদের ঘেরাও করার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। সঙ্ঘের শ্রমিক সংগঠন বিএমএস-ও ২২-২৩ জুন দেশের সব জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে। স্মারকলিপি দেবে প্রধানমন্ত্রী মোদীকেও।

তাঁর পুলিশের গুলি-লাঠিতে কৃষক মৃত্যুর সপ্তাহখানেক পর আজই প্রথম বার কৃষক আন্দোলনের আঁতুরঘর মন্দসৌরে গিয়েছেন শিবরাজ। কয়েক কোটি টাকার ডোল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্দসৌর সফর ঘিরে ছিল সাজো সাজো রব। বিজেপির তরফে কৃষকদের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হয়, বিক্ষোভের পথ ছাড়ো, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি দেখছেন। কিন্তু বসে নেই বিরোধীরা। রাহুল গাঁধী বা অন্য কোনও বিরোধী নেতাকে সেখানে ঢুকতে না দেওয়ায় জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া আজ ৭২ ঘণ্টার সত্যাগ্রহ শুরু করেছেন দেওয়াসের সব্জি মান্ডিতে। আগামিকাল থেকে উত্তরপ্রদেশে ‘হক মাঙ্গো’ অভিযান শুরু করছে কংগ্রেস। ৬২টি কৃষক সংগঠন ইতিমধ্যেই চলতি মাসে একাধিক আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করে বসে আছে।

এতে কি তাঁরা কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন— প্রশ্ন রাখা হয়েছিল সঙ্ঘের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের কাছে। শিবরাজের সঙ্গে বিকেএসের যে নেতা সমঝোতা করে এসেছিলেন, সেই শিবকান্ত দীক্ষিতের জবাব, ‘‘আদৌ নয়। আমাদের মোট ১৩টি দাবি ছিল। তার ১০টিই শিবরাজ মেনে নেন। ফলে আর আন্দোলন জারি রাখা প্রয়োজন ছিল না। আমাদের বাকি দাবি কেন্দ্রের কাছে। তার জন্য আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি হচ্ছে।’’ আর বিএমএস নেতা ব্রিজেশ উপাধ্যায়ের যুক্তি, ‘‘আমাদের আন্দোলন কখনও কারও পক্ষে বা বিপক্ষে হয় না। শ্রমিকদের স্বার্থ নিয়ে লড়াই হয়। শ্রমিকেরা বোঝেন, কারা শুধুই রাজনীতি করছে। আমাদের শক্তি বাকি সব শ্রমিক সংগঠনের থেকে ঢের বেশি। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আমরা প্রস্তাব গ্রহণ করেছি, তা নিয়ে আন্দোলন হবে।’’

মোদী সরকার ও সঙ্ঘের লড়াই এখন চলে এসেছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। মোদী সরকারের শিল্প, বাণিজ্য ও কর্পোরেট বিষক প্রতিমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন টুইট করেছেন, ‘‘কৃষকদের উস্কে দেওয়ার পিছনে বিরোধীদের হাত আছে।’’ এর পাল্টা স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের নেতা অশ্বিনী মহাজনের জবাব, ‘‘পরিস্থিতি বিস্ফোরক হয়ে ওঠা পর্যন্ত অপেক্ষার কী প্রয়োজন? কৃষি-সঙ্কটের দ্রুত নিষ্পত্তি প্রয়োজন।’’

RSS Narendra Modi Loan waiver নরেন্দ্র মোদী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy