Advertisement
E-Paper

শাখা বাড়িয়ে, ভাগবতকে এনে জাঁকিয়ে বসছে সঙ্ঘ

বাংলায় যত দিন বামফ্রন্টের রাজত্ব ছিল, সঙ্ঘের কার্যকলাপও ছিল সীমিত। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকারকে অবশ্য দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদী জমানার মোকাবিলা করতে হয়নি।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৩৭

বাম জমানা থাকলে রামের দলের বৃদ্ধি হয় না। এই চালু ধারণা তিন বছর ধরে ত্রিপুরায় প্রায় ভেঙে ফেলছে সঙ্ঘ পরিবার।

বাংলায় যত দিন বামফ্রন্টের রাজত্ব ছিল, সঙ্ঘের কার্যকলাপও ছিল সীমিত। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকারকে অবশ্য দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদী জমানার মোকাবিলা করতে হয়নি। যা ত্রিপুরায় মানিক সরকারকে করতে হচ্ছে। এবং দিল্লিতে মোদী সরকার থাকার সুবি‌ধা কাজে লাগিয়ে উত্তর-পূর্বে ক্রমেই বিস্তার ঘটছে সঙ্ঘের।

আগামী বছরেই ভোট উত্তর-পূর্বের দুই রাজ্য মেঘালয় ও ত্রিপুরায়। ঠিক এই সময়ে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির আরএসএস কর্মকর্তাদের নিয়ে শিবির হতে চলেছে আগরতলার উপকণ্ঠে। যার জন্য শুক্রবার থেকে পাঁচ দিন ঘাঁটি গেড়ে থাকবেন স্বয়ং সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত। আগরতলার আস্তাবল ময়দানে আগামী ১৭ ডিসেম্বর ‘হিন্দু একত্রীকরণ’ সমাবেশে প্রধান বক্তা তিনিই। ঘটনাচক্রে, ভাগবত যখন ত্রিপুরায় থাকবেন, সেই সময়েই ১৬ তারিখ মেঘালয়ের শিলংয়ে সভা করতে আসার কথা প্রধানমন্ত্রী মোদীর।

ত্রিপুরার পার্বত্য অঞ্চলে সঙ্ঘের ক্রিয়াকলাপের ইতিহাস বেশ পুরনো। তবে আরএসএস কর্তারাও এখন মেনে নিচ্ছেন, গত তিন বছরে তাঁদের শাখা ও প্রশিক্ষণ শিবির অনেক বেড়েছে। বি‌ভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সামাজিক কাজকর্মও তাঁরা বাড়িয়েছেন। ত্রিপুরা আরএসএসের প্রধান নেতা নিখিলজি’র কথায়, ‘‘আমরা দেশের অখণ্ডতার লক্ষ্যে কাজ করি। গত কয়েক বছরে অখণ্ডতা এবং হিন্দু জাগরণের প্রতি সাধারণ ভাবে উৎসাহ বেড়েছে। এটা শুধু ত্রিপুরা বলেই নয়, অন্যত্রও আমরা লক্ষ্য করছি।’’ রাজ্যের নানা প্রান্তে কাজ করতে গিয়ে উৎসাহী তরুণ প্রজন্মের সাহায্য তাঁরা পাচ্ছেন বলে তাঁর দাবি।

বিজেপি-র তরফে ত্রিপুরা প্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সুনীল দেওধর অবশ্য আরও খোলাখুলিই বলছেন, ‘‘এখানে একটা সুবিধা হয়েছে। সিপিএম যত আরএসএসের সমালোচনা করছে, তত আরএসএস সম্পর্কে জানার আগ্রহ বেড়ে যাচ্ছে! এটা আরএসএস কাজে লাগাচ্ছে।’’ দেওধরের দাবি, বিভিন্ন জেলায় কমিউনিস্ট মতাদর্শ ছেড়ে বহু সিপিএম কর্মী-সমর্থক যে ভাবে সঙ্ঘের ভাবধারায় প্রশিক্ষিত হতে চাইছেন, সেটা আগে তাঁদের কাছে অভাবনীয় ছিল। একই সুরে বিজেপি-র ত্রিপুরা রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেবও মেনে নিচ্ছেন, সামাজিক স্তরে আরএসএস যা কাজ করছে, তাতে রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে বিজেপি-র সুবিধা হচ্ছে।

সঙ্ঘের বাড়বাড়ন্তে স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন সিপিএম রাজ্য নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, সঙ্ঘ আগে থেকেই কিছু এলাকায় কাজ করতো। তার পিছু পিছু এখন বজরং দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এসে আরও উত্তেজনা বাড়াচ্ছে। ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধরের অভিযোগ, ‘‘বিশেষত সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে বিভাজনের চেষ্টা করছে আরএসএস এবং বিজেপি। রাতের অন্ধকারে এমন সব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে, যাতে উত্তেজনা বাড়ে।’’

দেওধর অবশ্য হাসছেন। এবং বলছেন, ‘‘ভোটের আগে আরও একটু সময় বাকি। দেখুন না কী হয়!’

Mohan Bhagwat RSS BJP Tripura North East India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy