Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ছাত্র বিক্ষোভ ইস্যুতে উত্তাল সংসদ, শুরুতেই সঙ্কটে বাজেট অধিবেশন

বাজেট অধিবেশন শুরু হতেই ছাত্র বিক্ষোভ নিয়ে তুমুল রাজনীতি শুরু হয়ে গেল সংসদে। বুধবার সকাল থেকে সংসদের দুই কক্ষেই তুমুল হইহট্টগোল শুরু হয়ে গেল। প্রায় সব বিরোধী দল এক জোট হয়ে কোণঠাসা করার চেষ্টা করল সরকারকে।

রাজ্যসভায় সরকারকে তীব্র আক্রমণে বিএসপি সুপ্রিমো মায়াবতী। ছবি: পিটিআই।

রাজ্যসভায় সরকারকে তীব্র আক্রমণে বিএসপি সুপ্রিমো মায়াবতী। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৮:২০
Share: Save:

বাজেট অধিবেশন শুরু হতেই ছাত্র বিক্ষোভ নিয়ে তুমুল রাজনীতি শুরু হয়ে গেল সংসদে। বুধবার সকাল থেকে সংসদের দুই কক্ষেই তুমুল হইহট্টগোল হল। প্রায় সব বিরোধী দল এক জোট হয়ে কোণঠাসা করার চেষ্টা করল সরকারকে। পাল্টা আক্রমণাত্মক হয়ে বিরোধীদের সব অভিযোগ নস্যাৎ করার চেষ্টা করলেন স্মৃতি ইরানি, মুখতার আব্বাস নকভি, অনুরাগ ঠাকুররা। কিন্তু চাপানউতোরের মাঝে জেএনইউ বা রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যা নিয়ে সুষ্ঠু আলোচনাই হল না সংসদে। দফায় দফায় মুলতুবি হয়ে গেল রাজ্যসভা।

লোকসভায় জেএনইউ-কাণ্ড নিয়ে বিতর্কের সূচনা করেন গ্বালিয়রের কংগ্রেস সাংসদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রোহিত বেমুলার আত্মহত্যার প্রসঙ্গ তুলে ধরে জ্যোতিরাদিত্য বলেন, কেন্দ্র দলিতদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে। কংগ্রেসের অভিযোগের জবাব সরকারের তরফ থেকে দেন অনুরাগ ঠাকুর। অনুরাগের ভাষণের সময় কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী সভা ছেড়ে চলে যান। অনুরাগ অবশ্য তাতে থেমে থাকেননি। আফজল গুরুর প্রসঙ্গ টেনে রাহুলকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। রাহুলের উদ্দেশে অনুরাগের প্রশ্ন ছিল, ‘‘আফজল গুরুকে সন্ত্রাসবাদী বলে আপনি মনে করেন কি না, তার জবাব দিন। যদি সে সন্ত্রাসবাদী না হয়, তা হলে আপনাদের সরকার তাকে ফাঁসি দিল কেন?’’

সংসদের বাইরেও এ দিন রাহুলকে আক্রমণ করেছে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশে এক জনসভায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেন, ‘‘সংসদে সব দল স্পষ্ট করে জানাক, দেশবিরোধী স্লোগান দেওয়া দেশদ্রোহিতা না বাকস্বাধীনতা। কংগ্রেস সহ-সভাপতি দেশের মানুষকে বলুন, তিনি দেশবিরোধী স্লোগান সমর্থন করেন কি না? যদি না করেন তা হলে দেশবিরোধী স্লোগানের নিন্দা করুন।’’

আরও পড়ুন:

এত পিটিয়েছিলাম যে প্যান্টেই...উল্লাস সেই আইনজীবীদের

জেএনইউ এবং রোহিত ভেমুলার বিষয়ে লোকসভায় যেটুকু আলোচনা সম্ভব হয়েছে, রাজ্যসভায় এ দিন তাও হয়নি। সভার কাজ শুরু হতেই বিএসপি সুপ্রিমো মায়াবতী হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার ইস্যু তুলে ধরে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র আক্রমণ শুরু করেন। দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এবং বন্দারু দত্তাত্রেয় রোহিতকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছেন বলে মন্তব্য করে মায়াবতী তাঁদের ইস্তফা দাবি করেন। বিএসপি সাংসদরা বার বার স্লোগান দিতে দিতে ওয়েলে নেমে আসেন। ফলে দফায় দফায় মুলতুবি করে দিতে রাজ্যসভার কাজ। স্মৃতি ইরানি মায়াবতীকে পাল্টা আক্রমণ করেন। মায়াবতীরা রোহিতের মতো একজন তরুণের মৃত্যুকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন বলে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী অভিযোগ করেন। রোহিতের মৃত্যুকে নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে কারা, তা নিয়ে সংসদে আলোচনার দাবি তোলেন স্মৃতি ইরানি। মায়াবতী এবং বিএসপি সাংসদরা অবশ্য তাতে দমেননি। যত বার কাজ শুরু হয়েছে, ততবার রাজ্যসভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়ে সভা মুলতুবি করতে বাধ্য করেছেন বিএসপি সাংসদরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের তরফে জানানো হয়, রাজ্যসভার সব কাজ বন্ধ রেখে প্রথমে জেএনইউ এবং রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যা নিয়েই আলোচনা হবে। কিন্তু মায়াবতীকে তাতেও শান্ত করা যায়নি। স্মৃতি ইরানি এবং বন্দারু দত্তাত্রেয়র ইস্তফার দাবিতে অনড় থেকে তাঁরা গোলমাল চালিয়ে যান।

বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনেই ছাত্র বিক্ষোভ ইস্যু ঘিরে যে ভাবে উত্তাল হল সংসদ, তাতে বাজেট পেশ করাই কঠিন হয়ে উঠতে পারে সরকারের পক্ষে। বলছে ওয়াকিবহাল মহল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE