নয় সপ্তাহব্যাপী ইউরোপ সফরে গিয়ে পাখির চোখ হিসেবে পাকিস্তানের মদতপ্রাপ্ত সন্ত্রাসবাদকেই দেখছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে পাক সন্ত্রাসকে তুলে ধরছেন বিভিন্ন ভাবে। গত কাল বলেছিলেন, ‘‘জঙ্গিরা পাকিস্তানের ভিতরে থাকলে, ভারত সে দেশে প্রবেশ করে মারবে।’’ আজ ইউরোপের একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “অপারেশন সিঁদুর পরবর্তী যে সংঘাত, সেটি কেবল দু’টি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে সংঘাত নয়। সেটা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই। এই সন্ত্রাসবাদ এক সময়ে পশ্চিমি বিশ্বকেও ছোবল দেবে।” আর সেই প্রসঙ্গেই ওসামা বিন লাদেন প্রসঙ্গ তুলেছেন তিনি।
জয়শঙ্করের কথায়, “আপনাদের একটা কথা মনে করিয়ে দিতে চাই। এক ব্যক্তি ছিল যার নাম ওসামা বিন লাদেন। সব জায়গা ছেড়ে সে কেন বছরের পর বছর পাকিস্তানের এক সামরিক শহরকেই নিরাপদ হিসেবে বেছে নিল?” তাঁর কথায়, “আমি এটাই বিশ্বকে বোঝাতে চাই যে বিষয়টি নেহাতই ভারত-পাকিস্তানের নয়। এটা সন্ত্রাসবাদের বিষয়। আর এই সন্ত্রাসবাদই এক দিন এসে আপনাদের দংশন করবে।”
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অস্থির করে রেখেছেন ভারতের বিদেশনীতিকে। ইউরোপের সংবাদমাধ্যম ট্রাম্পের সঙ্গে ভারতের ‘আস্থার ঘাটতি’ নিয়ে প্রশ্নের সামনে দাঁড় করানোয় বিদেশমন্ত্রী বলেন, “আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ভারতের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা কোনও ‘ক’ ব্যক্তি বা ‘খ’ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয় নয়।” রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নয়াদিল্লি মস্কোর দিকে ঝুঁকে রয়েছে এই অভিযোগ এ বারেও শুনতে হয়েছে বিদেশমন্ত্রীকে। ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, “আমাদের সঙ্গে ইউক্রেনেরও গভীর সম্পর্ক। বিষয়টি শুধু রাশিয়ার নয়। তবে স্বাভাবিক ভাবেই প্রতিটি রাষ্ট্র তার নিজের পূর্ব অভিজ্ঞতা, ইতিহাস এবং স্বার্থকে বিবেচনা করে চলে।” বেলজিয়াম থেকেই পশ্চিমি বিশ্বের উদ্দেশে জয়শঙ্কর বলেছেন, “স্বাধীনতার কয়েক মাস পর থেকেই আমাদের সীমান্ত বারবার উপদ্রুত হয়েছে। সেই উপদ্রবে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছে কারা? পশ্চিমের রাষ্ট্রগুলি। এখন যারা আন্তর্জাতিক নীতিনিয়ম নিয়ে কথা বলছে, তারা তখন মুখ বুজে ছিল।”
জয়শঙ্কর ব্রাসেলসে বৈঠক করেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেয়েন ও কমিশনের বিদেশসচিব কাজা কালাসের সঙ্গে। সেখানে সন্ত্রাসবাদের পাশাপাশি ভারত-ইইউ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে সওয়াল করেছেন। চিনের সঙ্গে তুলনা টেনে বলেছেন, “১৪০ কোটির দেশ ভারত। দক্ষ শ্রমিক এবং চিনের থেকে অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য অর্থনৈতিক অংশীদারির প্রস্তাব আমরা দিতে সক্ষম।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)