‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদকে সামনে নিয়ে এসে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে দৌত্য অব্যাহত সাউথ ব্লকের। ত্রিদেশীয় ইউরোপ সফরে আজ বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর নেদারল্যান্ডসের পরে পৌঁছলেন ডেনমার্কে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে উঠেছে সন্ত্রাস প্রসঙ্গ। পাশাপাশি বাহরাইনের বিদেশমন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিন রশিদ আল জায়ানির সঙ্গে ফোনালাপের কথা জানিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন জয়শঙ্কর। সেখানেও যৌথ স্বরে সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করা হয়েছে। অন্য দিকে, নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত ইথিয়োপিয়ার রাষ্ট্রদূত ফেশা সাওয়েল গেবরে পহেলগাম হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন আজ। তিনি সরাসরি পাকিস্তানের ভূমিকার নিন্দা করেছেন ওই জঙ্গি আক্রমণ প্রসঙ্গে। প্রসঙ্গত, ভারতের যে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল আজ থেকে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে, তাদের গন্তব্যের মধ্যে রয়েছে ইথিয়োপিয়া এবং বাহরাইন।
এপ্রিলের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডেরিকসেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন। উভয় নেতা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর ডাক দেন। জয়শঙ্কর আজ ফ্রেডেরিকসেনকে মোদীর ব্যক্তিগত শুভেচ্ছা পৌঁছে দিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইকে জোরদার করা নিয়ে কথা বলেছেন। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, “আজ সন্ধ্যায় কোপেনহাগেনে আমাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেনকে ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত শুভেচ্ছা পৌঁছে দিলাম। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সংহতি ও সমর্থনের জন্য ডেনমার্ককে ধন্যবাদ। আমাদের সবুজ কৌশলগত অংশীদারিকে (পরিবেশ সংক্রান্ত) এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এবং আমাদের সহযোগিতার পরিধি আরও বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডেরিকসেনের ভূমিকা রয়েছে।” বৈঠকে, জয়শঙ্কর এবং ফ্রেডেরিকসেন সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী সহযোগিতা-সহ পারস্পরিক উদ্বেগের বিষয়গুলি নিয়েও আলোচনা করেন।
অন্য দিকে, বাহরাইনের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরে জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘বিদেশমন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিন রশিদ আল জায়ানির সঙ্গে জরুরি কথাবার্তা হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ যে চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে তার কঠোর মোকাবিলা করা নিয়ে কথা হয়েছে।” ভারতের সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাক সন্ত্রাস নিয়ে বার্তা দিতে বাহরাইনে যাওয়ার আগে এই ফোনালাপ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্য দিকে, নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত ইথিয়োপিয়ার রাষ্ট্রদূত গেবরে বলেছেন, “পহেলগামের সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘোর নিন্দা করছে ইথিয়োপিয়া। ভারত দায়িত্বশীল ভাবে তার মোকাবিলা করেছে। ভারতীয়রা তো পাকিস্তানে গিয়ে সমস্যা তৈরি করেননি। বরং পাকিস্তান এসে ভারতে ঢুকে সঙ্কট তৈরি করেছে। সবচেয়ে বড় কথা, ধর্মের ভিত্তিতে তারা মানুষকে চিহ্নিত করেছে। এটা ভয়ঙ্কর। ভারতের মতো ইথিয়োপিয়াও পূর্ব আফ্রিকায় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ভারত থেকে আমাদের দেশে মে মাসের শেষে প্রতিনিধিদল আসছে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)