অগ্নিগর্ভ প্রতিবেশী বলয় নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই চাপে রয়েছে মোদী সরকারের বিদেশনীতি। পহেলগাম কাণ্ডের পর তা আরও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এবং অস্থিরতা সম্পর্কে দূরদর্শন পরিচালিত এক আলোচনায় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বক্তব্য, ‘‘পড়শিদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের সমীকরণ সব সময় মসৃণ থাকবে, এমনটা আশা করা উচিত নয়।’’ পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, ‘‘শুধু পড়শি নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য নয়াদিল্লি সকলের স্বার্থ একত্রিত করার চেষ্টা করছে।’’
জয়শঙ্করের কথায়, ‘‘প্রতিবেশী দেশগুলির বোঝা উচিত, ভারতের সঙ্গে কাজ করলে তারা লাভবান হবে। না-হলে তাদের মূল্য চোকাতে হবে। এই সহজ সত্যটি কয়েকটি দেশ খুব ভাল ভাবে বুঝে গিয়েছে। আবার কয়েকটি দেশ বুঝতে বেশ কিছুটা সময় নিয়েছে। তবে পাকিস্তান এদের থেকে আলাদা৷ কারণ সেনা-নিয়ন্ত্রিত দেশটির ভিতরেই রয়েছে শত্রু৷ পাকিস্তান বাদে বাকি সমস্ত দেশের উপর এই যুক্তিটি প্রযোজ্য।’’ গত এগারো বছরে আমেরিকা ও চিনের অবস্থানের পরিবর্তন এবং নয়াদিল্লি এই পরিবর্তনকে কী ভাবে দেখেছে, সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয় বিদেশমন্ত্রীকে। উত্তরে জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘আমেরিকার ক্ষেত্রে কিছু অনিশ্চয়তা রয়েছে। তাই সে দেশের ক্ষেত্রে পদ্ধতি মেনে যতটা সম্ভব সংযোগ ও সম্পর্কের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হয়৷ তবে চিনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে নিজের ক্ষমতা তৈরি করতে হবে।’’
২০২০ সালের জুন মাসে গলওয়ান উপত্যকায় সেনা সংঘাতের পর ভারত ও চিনের কূটনৈতিক সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য অবনতি ঘটে৷ তার জন্য বিদেশমন্ত্রী দুষেছেন বিগত কংগ্রেস শাসনকে। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতের চিন নীতিরপ্রকৃত বিভ্রান্তিকর দিকগুলির মধ্যে অন্যতম হল, বিগত দশকগুলিতে আমাদের সীমান্ত পরিকাঠামোর প্রতি সম্পূর্ণ অবহেলা করা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে মোদী সরকারের আমলে। জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘আজ আমরা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর আমাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে পারছি। কারণ আমরা প্রকৃত সীমান্ত পরিকাঠামো তৈরি করেছি।’’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শাসনকালে বিগত ১১ বছর প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বিস্তার এবং ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সঙ্গে উন্নত সম্পর্কের দাবি করেন বিদেশমন্ত্রী। তিনি বলেন, “তিনি (প্রধানমন্ত্রী) আমাদের একটি লক্ষ্য স্থির করে দিয়েছেন। সেখানে পৌঁছনোর জন্য পথও তৈরি করে দিয়েছেন।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)