ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কবাণের মধ্যেই রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক বোঝাপড়া আরও মজবুত করার বার্তা দিল ভারত। বুধবার মস্কোয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর রুশ সংস্থাগুলিকে ভারতে ‘আরও নিবিড় ভাবে’ বাণিজ্যিক কার্যকলাপে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানালেন। নয়াদিল্লির অবস্থান ব্যাখ্যা করে বিদেশমন্ত্রী জানান, বিদেশি সংস্থাগুলির জন্য আরও অনেক রাস্তা খুলে দিতে চাইছে ভারত।
বুধবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় ভারত-রাশিয়া ‘বিজ়নেস ফোরাম’-এর আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন জয়শঙ্কর। আলোচনায় যোগ দেন রাশিয়ার উপ বিদেশমন্ত্রী ডেনিস মান্টুরভও। সেখানে জয়শঙ্কর বলেন, “ভারতে নগরায়ন এবং আধুনিকীকরণের জন্য নতুন নতুন জিনিসের চাহিদা তৈরি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় সংস্থাগুলির সঙ্গে রুশ বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিকেও আমরা এই সুযোগ গ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।” এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত রুশ সংস্থাগুলি জরুরি পণ্য, যেমন সার, রায়ায়নিক দ্রব্য সরবরাহ করতে পারে বলে জানান জয়শঙ্কর।
মস্কো সফরে গিয়ে ভারত-রাশিয়া মুক্ত বাণিজ্যচুক্তির জন্য ফের সওয়াল করেন জয়শঙ্কর। দ্রুত এই চুক্তি হওয়া উচিত বলে জানান তিনি। সে ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতাগুলি আর থাকবে না বলে আশাপ্রকাশ করেন জয়শঙ্কর। মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে জয়শঙ্করের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেন রাশিয়ার উপ বিদেশমন্ত্রী মান্টুরভও। তিনি বলেন, “আমরা (ভারতে) তেল সরবরাহ অব্যাহত রেখেছি। প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করার সম্ভাবনা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
আরও পড়ুন:
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আমেরিকা এবং ইউরোপের বৃহৎ দেশগুলি রাশিয়ার উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তার পরেও অবশ্য ‘বন্ধু’ রাশিয়ার কাছ থেকে অশোধিত তেল কেনা অব্যাহত রাখে ভারত। সে কারণে ভারতীয় পণ্যের উপর আপাতত ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা। ভারত রাশিয়ার তেল কেনা অব্যাহত রাখলে অতিরিক্ত জরিমানা চাপানো হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে আমেরিকা। রাশিয়া অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছে, নয়াদিল্লির কাছে তেল বিক্রি করাও বন্ধ করবে না তারা।
এর মধ্যেই সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্র উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, রাশিয়া থেকে সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসের জন্য তেল কেনা শুরু করেছে ভারতের দুই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইন্ডিয়ান অয়েল এবং ভারত পেট্রোলিয়াম। ওই সূত্রের ভিত্তিতে রয়টার্স জানিয়েছে, স্বল্প ছাড় এবং মার্কিন হুমকির আবহে দুই সংস্থাই গত জুলাই মাসে তেল কেনা বন্ধ রেখেছিল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাশিয়া তেলে ছাড় বৃদ্ধি করায় আবার মস্কো থেকে তেল কেনা শুরু করেছে দুই ভারতীয় সংস্থা। যদিও তেল কেনা বন্ধ হয়েছিল বলে কোনও তথ্য সরকারি ভাবে অতীতে জানা যায়নি।