ব্রিটিশদের ভয়ে জার্মানিতে পালিয়ে গিয়েছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু! এমনই লেখা ছিল কেরলের সরকারি পাঠ্যপুস্তকের খসড়ায়। ‘ভুল’ নজরে আসার পরেই ছাপাখানায় ওই পাঠ্যবইয়ের মুদ্রণ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে সে রাজ্যের বাম সরকার। কেরলের শিক্ষামন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা ভি শিবনকুট্টী জানিয়েছেন, বিষয়টি নজরে আসার পরেই ওই ‘ঐতিহাসিক ভুল’ সংশোধন করে নেওয়া হয়েছে। তার পরেও অবশ্য বিতর্ক থেমে নেই। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) দাবি, ওই বইয়ে আরও অনেক ভুল রয়েছে।
কেরলের সরকারি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়ানোর জন্য শিক্ষকদের একটি ‘হ্যান্ডবুক’ দিয়ে থাকে সে রাজ্যের সরকার। সেই বইতেই এই ভুল ধরা পড়ে। ওই বইয়ের খসড়া তৈরির দায়িত্বে ছিল কেরলের স্টেট কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং। সে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ওই ভুল সংশোধন করা হয়েছে এবং নির্দিষ্ট ওই পাঠ্যবইয়ের দায়িত্বে থাকা পাঠ্যপুস্তক কমিটির সদস্যদের সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে কেরলের শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “ওই পাঠ্যবইয়ের খসড়ায় কিছু ঐতিহাসিক ভুল ধরা পড়ে। বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পরেই আমরা সংশোধন করার নির্দেশ দিই। বলা হয়, ভুল সংশোধনের পরেই বইটি ছাপা হবে।” একই সঙ্গে বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের মতো কেরল সরকার রাজনৈতিক কারণে ইতিহাসকে বিকৃত করে না। ওই পাঠ্যবইয়ের দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
এবিভিপি-র অবশ্য দাবি, ওই বইয়ের অন্য অনেক জায়গাতেও ভুল রয়েছে। সেখানে ভারতের একটি মানচিত্রে অসম এবং ঝাড়খণ্ডকে চিহ্নিত করা হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছে তারা। এবিভিপি-র সর্বভারতীয় সম্পাদক শ্রবণ বি রাজ একটি বিবৃতি দিয়ে বলেন, “সিপিএম সরকার পড়ুয়াদের বিকৃত ইতিহাস পড়াতে চাইছে। চিনের কমিউনিস্ট পার্টি অসম দখল করতে চায়। তাদের ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত সিপিএম তাই মানচিত্রে অসমের নামোল্লেখই করেনি।”
বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছে তৃণমূলও। দলের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নায়ক দেশনায়ক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে অপমান করার জন্য সিপিএমের নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া উচিত। বাংলা এবং বাঙালিবিরোধী সিপিএমকে ধিক্কার।”