Advertisement
E-Paper

বিতর্ক সঙ্গী করে রাজ্যপাল সদাশিবম

সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি পালানিস্বামী সদাশিবমকে কেরলের রাজ্যপাল পদে নিয়োগ করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। পঁয়ষট্টি বছর বয়সি সদাশিবম এ বছরেরই এপ্রিলে অবসর নিয়েছিলেন। আজকের সিদ্ধান্তের ফলে তিনিই হলেন প্রথম ব্যক্তি, যিনি বিচার ব্যবস্থার সর্বোচ্চ পদ থেকে কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল হলেন।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:১৪

সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি পালানিস্বামী সদাশিবমকে কেরলের রাজ্যপাল পদে নিয়োগ করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। পঁয়ষট্টি বছর বয়সি সদাশিবম এ বছরেরই এপ্রিলে অবসর নিয়েছিলেন। আজকের সিদ্ধান্তের ফলে তিনিই হলেন প্রথম ব্যক্তি, যিনি বিচার ব্যবস্থার সর্বোচ্চ পদ থেকে কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল হলেন।

এর আগে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া বা ‘ট্রাই’-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান নৃপেন্দ্র মিশ্রকে প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি করা নিয়ে তুমুল বিতর্ক হয়েছিল। কারণ, ট্রাইয়ের চেয়ারম্যান অবসরের পরে কোনও সরকারি কাজ করতে পারবেন না, এমনটাই ছিল আইন। শেষ পর্যন্ত সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখিয়ে এই সংক্রান্ত আইনে সংশোধন আনে সরকার। শুধু তা-ই নয়, এই সিদ্ধান্ত প্রথমে অর্ডিন্যান্স জারি করে জানানো হয়েছিল। এর পর সদাশিবমকে কেরলের রাজ্যপাল নিয়োগের সম্ভাবনা দেখা দিতেই শুরু হয়েছিল বিতর্ক। কেরলের প্রাক্তন রাজ্যপাল শীলা দীক্ষিতকে ইস্তফা দিতে চাপ সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছিল মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। এ বার তাঁর উত্তরসূরি নিয়োগের সিদ্ধান্তটিও রইল একই রকম বিতর্কিত।

দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল হতে পারবেন না, এমন কোনও আইন যদিও নেই। সে ক্ষেত্রে আজকের ঘটনাটি নৃপেন্দ্র মিশ্রের থেকে আলাদা। তবে প্রশ্ন উঠেছে মূলত দুটি ক্ষেত্র থেকে। এক) এই ধরনের নিয়োগের মধ্য দিয়ে বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা হবে কি না।

দুই) প্রোটোকল অনুযায়ী দেশের প্রধান বিচারপতির স্থান রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পরেই। অর্থাৎ, সংবিধানগত ভাবে তিনি রাজ্যপালের উপরে। এমন শীর্ষপদে বসার পরে কেউ তুলনামূলক ভাবে কম উচ্চতার পদে আসীন হতে পারেন কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

সদাশিবমের নাম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতেই কেরল হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন প্রথম আপত্তি তুলেছিল। সুপ্রিম কোর্টের আর এক প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ভি এন খারে বলেন, “এতে একটা ভুল দৃষ্টান্তের সৃষ্টি হবে।” এমন সিদ্ধান্তে বিচার ব্যবস্থার উপর হস্তক্ষেপের চেষ্টা হতে পারে বলে জানিয়ে প্রাক্তন বিচারপতি খারে জানান, তিনি নিজে এমন পদ গ্রহণ করতেন না। সদাশিবমকে রাজ্যপাল করার প্রশ্নে আপত্তি তোলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের সংগঠনও। এমন যাবতীয় আপত্তিকে পাশ কাটিয়েই সদাশিবমকে রাজ্যপাল পদে নিয়োগ করে মোদী সরকার। রাষ্ট্রপতি ভবনের বিবৃতিতেও শীলা দীক্ষিতের ইস্তফা গ্রহণ করে সদাশিবমকে নিয়োগের কথা জানানো হয়েছে।

যাঁকে নিয়ে এত বিতর্ক, সেই সদাশিবম অবশ্য বলেছেন, “যদি অবসরের পরে কেরলের মানুষদের পাশে দাঁড়াতে চাই, অসুবিধে কোথায়?” তাঁর বক্তব্য, অন্য রাজনীতিকদের থেকে ভাল ভাবেই তিনি কেরলবাসীর স্বার্থে নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারবেন।

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী উমেন চান্ডি এর আগে অভিযোগ করেছিলেন, রাজ্যপাল নিয়োগ নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেনি কেন্দ্র। আজ অবশ্য কেরলের কংগ্রেস শাসিত সরকার এই নিয়োগকে স্বাগতই জানিয়েছে। তবে ক্ষুব্ধ হাইকম্যান্ড। কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা গত কালই বলেছিলেন, “কেন সদাশিবমকে এই সম্মান দিচ্ছে সরকার? তাঁর কোনও কাজে মোদী এবং অমিত শাহ কি খুশি হয়েছিলেন?” বস্তুত, সদাশিবমের নিয়োগ ঘিরে বিশিষ্ট আইনজীবীদের মধ্যেই মতভেদ দেখা দিয়েছে। রাম জেঠমলানী যখন এই নিয়োগকে ‘অনৈতিক’ বলেছেন, তখন কে টি এস তুলসী এই নিয়োগকে সমর্থন করে বলেছেন, রাজ্যপাল পদে বসার ক্ষেত্রে বিচারপতিরাই যোগ্য। কারণ, সংবিধান সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান তাঁদেরই রয়েছে।

Ex-Chief Justice P Sathasivam appointed Governor of Kerala national news latest news online news latest news online
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy