সলমন খান বলে দিয়েছেন, ধর্ষণ-মন্তব্য নিয়ে তাঁর ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কেন ওঠে না, সেই ব্যাখ্যাও হয়তো জনান্তিকে দিয়েছেন তিনি, মিডিয়ার কানে এসে পৌঁছয়নি। শুধু জানা গিয়েছে, ক্ষমা তিনি চাইবেন না। ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্ন ওঠে কোনও ভুল করলে। অর্থাত্, সলমন মনেই করেন না, তিনি ভুল করেছেন।
গণতন্ত্রে শেষ কথা বলার অধিকারী কে? মানুষ, এই উত্তরটি যথাযথ বলে প্রতিভাত। ‘সুলতান’ রিলিজের মুখে এই বিতর্ক সমাজ জুড়ে অস্বস্তি ছড়িয়ে থাকতে পারে, সলমনকেও বিচলিত করতে পারে ঈষত্, কিন্তু তিনশো কোটি থেকে চারশো কোটির পথে সুলতানের বিপুল জয়যাত্রার পর সেই বিচলন আপাতত অদৃশ্য। কোনও বিতর্ক কোথাও দানা বাঁধেনি, দাগ কাটেনি, প্রতিস্বর তৈরি করেনি— মানুষ, কাতারে কাতারে মানুষ সলমনকে কাঁধে তুলে নিয়েছেন। অতএব, বিনম্রতার পথ থেকে ঔদ্ধত্যের অভ্যস্ত পরিসরে ফেরার অবকাশ এখন। ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্ন কোথায়?
কিন্তু সত্যিই কি প্রশ্ন থাকে না? ন্যায়-অন্যায়, সত্য-মিথ্যা, সাদা-কালো তার নিজস্ব রং নিয়েই থাকে, মানুষের রায়ের উপর নির্ভরশীল হয়ে নয়। আম আদমির সুলতান-দর্শনকে ধর্ষণ-মন্তব্য নিয়ে গণভোট হিসাবে গুলিয়ে ফেলার কোনও মানে হয় না। যদি হয়ও বা, তাতেও সত্য ও মিথ্যা নিজেদের অবস্থানেই থাকত। রামবাবু যদি ঘুষ নিয়ে থাকেন, মানুষ তাঁকে জেতালেও তিনি নিয়েছেন, না জেতালেও। এবং ঘুষ নেওয়া অন্যায়ই হয়ে থাকে।
এই সহজ যুক্তিবোধকে হারিয়ে ফেললে সেই পথেই নলের শরীরে কলির প্রবেশের সম্ভাবনা। গণতন্ত্রের নামে সেটা বাঞ্ছনীয় পরিস্থিতি হবে না।
ইদানীং নানা সদম্ভ ঘোষণায় এই সতর্ক ঘণ্টাটা মনের মধ্যে বার বার বাজছে। আমার চেতনার রঙে পান্না সবুজ হয় ঠিকই। সত্য কিন্তু মিথ্যা হয়ে যায় না।