ফুলে সাজানো গাড়িতে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল।— নিজস্ব চিত্র।
শহর ঘোরানোর জন্য ফুল, মালায় সাজানো গাড়ি দাঁড়িয়ে সামনেই। কিন্তু কিছুতেই সেটিতে উঠতে চাইছিলেন না কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। আজ এমনই কাণ্ড ঘটে করিমগঞ্জে।
আশপাশে হাজির যুবমোর্চার সদস্যদের সর্বানন্দ জানান— তাঁর জন্য অপেক্ষা করছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রামলালজি। সাজানো গাড়িতে শহর ঘুরে যেতে হলে অনেকটা সময় নষ্ট হবে। তাতে রামলালজি ক্ষুব্ধ হতে পারেন। শেষে দলের সাংগঠনিক ওই নেতার অনুমতি নিয়ে সর্বানন্দকে ওই গাড়িতে তোলেন বিজেপি যুবমোর্চার নেতা-কর্মীরা!
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পর এ দিনই প্রথম বার করিমগঞ্জে আসেন সর্বানন্দ। সাজানো গাড়িতে তাঁকে নিয়ে মোটরসাইকেল মিছিল বের করে শহর পরিক্রমার পরিকল্পনা করেছিলেন যুবমোর্চার সদস্যরা। ফুল, মালায় সাজানো হয়েছিল হুডখোলা গাড়ি। কিন্তু বেঁকে বসেন মন্ত্রী। সকলকে জানান, এ সব করতে গেলে গোঁসা করতে পারেন রামলালজি।
বিজেপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হলেন রামলালজি। কেন্দ্রে আগের এনডিএ সরকারের সময়ও তিনি একই পদে ছিলেন। মোদী জমানাতেও তা বদলায়নি।
বিজেপিতে সাংগঠনিক সম্পাদকের গুরুত্ব অনেকটাই। দলের সভাপতিও সহজে ওই পদ থেকে কাউকে সরাতে পারেন না। দলের নেতাদের একাংশ বলছেন, এ দিন সর্বানন্দের আচরণে তারই প্রতিফলন হয়েছে।
বিমানবন্দরে নামতেই অনেকটা দেরি হয়েছিল সর্বানন্দের। সাজানো গাড়িতে উঠলে ‘চিন্তন বৈঠকে’ পৌঁছতে আরও দেরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। দীর্ঘ সময় প্রতীক্ষা করে থাকা যুবমোর্চার কর্মীরা মন্ত্রীর কথা শুনে হতবাক হন। সকলের দিকে তাকিয়ে যুবমোর্চার প্রাক্তন সভাপতি বিজু বণিক ও জয়শঙ্কর চক্রবর্তীকে মন্ত্রী জানান, রামলালজির নির্দেশ পেলেই তিনি গাড়িতে উঠতে পারেন। মোটরসাইকেল নিয়ে রামলালজির অনুমতি নিতে ছোটেন যুবমোর্চার কর্মীরা। সবুজ সঙ্কেত পেয়ে সাজানো ওই গাড়িতে ওঠেন সর্বানন্দ।
করিমগঞ্জে এ দিন শুরু হয় বিজেপির চিন্তন বৈঠক। তা চলবে বুধবার পর্যন্ত। বরাকের তিন জেলা ছাড়াও ডিমা হাসাওয়ের সাংগঠনিক সদস্যরা সভায় যোগ দিয়েছেন।
হাজির রয়েছেন অসম বিজেপি সভাপতি সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য, অসমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সম্পাদক মহেন্দ্র সিংহ, সাংসদ রমেন ডেকা, গৌরীশঙ্কর চক্রবর্তী, ফণী শর্মা, অজয় কুঁয়র, রাজদীপ রায়। শহরের একটি অতিথিশালায় ওই বৈঠকে সাংগঠনিক বিষয় ছাড়াও অসমে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের রূপরেখা নিয়েও আলোচনা চলে।
পরে সর্বানন্দ সাংবাদিক বৈঠকে জানান, অসম সরকার বরাক উপত্যকার সঙ্গে অন্যায় করছে। বরাকের উন্নয়নে ১ হাজার কোটি টাকা খরচের হিসেব মিলছে না। এখানে ব্রডগেজ ট্রেন পরিষেবা চালু নিয়েও টালবাহানা করেছে। তিনি বলেন, ‘‘রেল মন্ত্রকের সঙ্গে আজই আমার কথা হয়েছে। জুলাই মাসেই বরাকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে।’’ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অভিযোগ তোলেন, মহা-সড়ক (ইস্ট-ওয়েস্ট করিডর) নির্মাণেও গড়িমসি করেছে রাজ্য সরকার। অরণ্যের মধ্যে ৩১ কিলোমিটার জায়গার জন্য বন বিভাগের ছাড়পত্রের প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে পাঠায়নি।
বাংলাদেশের হাতে অসমের জমি হস্তান্তর প্রসঙ্গে সর্বানন্দ বলেন, ‘‘মোদীজির সরকার এতে রাজি ছিল না। কিন্তু অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ কেন্দ্রকে লিখিত প্রস্তাব পাঠান। তার জেরেই অসমকে ওই চুক্তির আওতায় নিয়ে আসা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy