Advertisement
E-Paper

বিতাড়িত ভাইপোকে দলে ঢুকিয়ে, দায়িত্বে বসিয়ে জেলে গেলেন শশিকলা

শেষ মুহূর্তে হলেও ঘর অনেকটা গুছিয়েই জেলে যাচ্ছেন শশিকলা। আদালতের কাছে শরীর খারাপের কারণ দেখিয়ে কিছুটা সময় চেয়েছিলেন বটে। কিন্তু, তাতে সায় মেলেনি। দ্রুত তাঁকে বেঙ্গালুরু আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরে আর কালক্ষেপ করেননি শশী। বিশাল কনভয় নিয়ে চেন্নাই থেকে রওনা দেন বেঙ্গালুরুর উদ্দেশে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৫:৫৪
চোখের জলে 'বিদায়' শশী। ফাইল চিত্র

চোখের জলে 'বিদায়' শশী। ফাইল চিত্র

শেষ মুহূর্তে হলেও ঘর অনেকটা গুছিয়েই জেলে গেলেন শশিকলা। আদালতের কাছে শরীর খারাপের কারণ দেখিয়ে কিছুটা সময় চেয়েছিলেন বটে। কিন্তু, তাতে সায় মেলেনি। দ্রুত তাঁকে বেঙ্গালুরু আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরে আর কালক্ষেপ করেননি শশী। বিশাল কনভয় নিয়ে চেন্নাই থেকে রওনা দেন বেঙ্গালুরুর উদ্দেশে। আত্মসমর্পণের পর তাঁকে রাখা হয়েছে বেঙ্গালুরুর জেলে। ২০১৪ সালে এই জেলেই জয়ললিতার সঙ্গে শশিকলাকেও কাটাতে হয়েছিল সপ্তাহ তিনেক। একই মামলায়।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে যখন তাঁর জেলে যাওয়া একেবারে নিশ্চিত, তখন থেকেই ফের একপ্রস্ত ঘুঁটি সাজতে শুরু করেন শশিকলা। ই পালানিসামিকে পরিষদীয় দলের নেতা নির্বাচন থেকে ও পনীরসেলভমকে দল থেকে বহিষ্কার— একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ঠান্ডা মাথায়। সেই পথেই আরও এক ধাপ এগিয়ে এ দিন তিনি তাঁর দুই ভাইপো টিটিভি দীনকরণ এবং এস ভেঙ্কটেশকে ফের দলে এনেছেন। ২০১১তে দিনাকরণকে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে দল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন জয়া। শুধু আনাই নয়, তাঁকে দলের দু’নম্বর পদেও বসিয়েছেন শশী। তিনি এখন থেকে এআইএডিএমকে-র উপ সাধারণ সম্পাদক। শশী নিজে যদিও সাধারণ সম্পাদকের পদেই রয়েছেন।

রাজনৈতিক মহলের মতে, জয়ললিতার মতো শশিকলাও জেলের ভিতর থেকে দল এবং সরকারের উপর কর্তৃত্ব বজায় রাখতে চাইছেন। তাঁর নির্দেশেই যাতে তামিলনাড়ু চলে এবং সে পথে যাতে কোনও বাধা না থাকে তা নিশ্চিত করতেই নিজের লোকদের উচ্চ পদে বসিয়ে দিয়েই জেলে গিয়েছেন তিনি।

দীর্ঘ ছয় বছর পর কেন বহিষ্কৃত ভাইপোকে ফের দলে ফিরিয়ে আনা হল?

শশীর যুক্তি, দীনাকরণ তাঁর কাছে ব্যক্তিগত এবং লিখিত ভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। তাই এই সিদ্ধান্ত। ২০১১তে ঠিক একই অভিযোগে শশিকলাকেও দল থেকে বের করে দিয়েছিলেন জয়া। পোয়েস গার্ডেন থেকেও তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, মাস তিনেক পর ফের শশীকে দলে ফিরিয়ে নেন তিনি। কারণ হিসেবে একই কথা বলেছিলেন। শশিকলা তাঁর কাছে ব্যক্তিগত এবং লিখিত ভাবে ক্ষমা চেয়েছেন।

পনীরসেলভমের বাড়ির সামনে জনতার ঢেউ। ছবি- এএফপি

অন্য দিকে, শশিকলা জেলে যেতেই তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অপহরণের অভিযোগ করেছেন মাদুরাইয়ের বিধায়ক সর্বানন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে উভাতুর পুলিশ শশিকলা, পালানিসামি-সহ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে অপহরণ, অপরাধমূলক হুমকির মামলা দায়ের করেছে। এর আগেই অভিযোগ উঠেছিল, মহাবলীপূরমের কাছে ‘গোল্ডেন বে রিসর্ট’-এ শতাধিক দলীয় বিধায়ককে বন্দি করে রেখেছেন শশিকলা। যাতে তাঁরা পনীর শিবিরে যোগাযোগ রাখতে না পারনে। এর পরে মাদ্রাজ হাইকোর্ট চেন্নাই পুলিশকে তা তদন্ত করে দেখতে নির্দেশ দেয়। চেন্নাই পুলিশ আদালতে জানায়, ওই বিধায়কেরা স্বেচ্ছাতেই রয়েছেন রিসর্টে। তাঁদের কেউ কোনও অভিযোগ করেননি তখন। কিন্তু শশী জেলে যেতেই সেই অভিযোগ প্রকাশ্যে চলে এল।

এ দিন বেঙ্গালুরু রওনা হওয়ার পথে ফের এক বার জয়ললিতার সমাধিস্থলে গিয়েছিলেন শশী। জয়ার মৃত্যুর পর এই নিয়ে দ্বিতীয় বার। এ মাসের শুরুতে বিদ্রোহী এআইএডিএমকে নেতা ও পনীরসেলভম জয়ার সমাধিস্থলে গিয়ে ধ্যানে বসেন। তার পরেই শশীর বিরুদ্ধে মুখ খোলেন তিনি। সেই ঘটনার পরের দিন শশীও ‘আম্মা’র সমাধিস্থলে গিয়েছিলেন। শশিকলার আত্মসমর্পণের দিন বেঙ্গালুরু পৌঁছেছেন তাঁর স্বামী এম নটরাজনও। স্ত্রী শশিকলার সঙ্গে যে তাঁর যোগাযোগ আছে সে কথা এ দিন তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন। ২০১১তে তাঁকেও দল থেকে বহিষ্কার করেন জয়ললিতা। তার পর থেকে নটরাজনকে আর প্রকাশ্যে সেই ভাবে দেখা যায়নি। মান্নারগুড়িতেই থাকতেন এই ব্যবসায়ী। কিন্তু, জয়ার মৃত্যুর পর থেকেই ফের সামনে আসেন তিনি। স্ত্রীর জেলে যাওয়া নিয়ে তিনি এ দিন বলেন, ‘‘আদালতের স্বদিচ্ছাকে সম্মান করি। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য নয়।’’

তবে, শশী জেলে গেলেও তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক অস্থিরতা এখনও কাটেনি। রাজ্যপাল বিদ্যাসাগর রাওয়ের দিকেই তাকিয়ে সকলে। তাঁর হাতেই চাবিকাঠি। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে কাকে ডাকবেন তিনি? বিদ্রোহী ও পনীরসেলভমকে নাকি এআইএডিএমকে-র নয়া পরিষদীয় নেতা ই পালানিসামি? কাকে সুযোগ দেবেন রাজ্যপাল? শশীর জেলযাত্রার পাশাপাশি আপাতত সেই দিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ।

আরও পড়ুন- যেখানেই থাকি, দলের কথাই চিন্তা করব, কান্নায় ভেঙে পড়ে জানালেন শশী

AIADMK J Jayalalithaa Sasikala
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy