সনাতন ধর্ম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের মামলায় তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের পুত্র তথা সে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধির অন্তর্বর্তিকালীন রক্ষাকবচের সময়সীমা বাড়াল সুপ্রিম কোর্ট। প্রায় দেড় বছরের পুরনো ওই মামলায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ডিএমকে যুবনেতার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না বলে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চ বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে।
উদয়নিধির বিরুদ্ধে দেড় বছরের পুরনো ওই অভিযোগের ভিত্তিতে নতুন করে কোনও এফআইআর দায়ের করা যাবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছে শীর্য আদালত। অভিযোগ, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে চেন্নাইয়ে লেখকদের একটি অনুষ্ঠানে উদয়নিধি বলেছিলেন, ‘‘সনাতন ধর্মের আদর্শকে মুছে ফেলার এই অনুষ্ঠানে আমায় আমন্ত্রণ জানানোয় আমি উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানাই। সনাতন ধর্মের আদর্শের বিরোধিতা না বলে তাকে নিশ্চিহ্ন করার কথা বলায় অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের অভিনন্দন জানাই।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘আমাদের প্রথম কাজ হল বিরোধিতা নয়, সনাতন ধর্মের আদর্শকে মুছে ফেলা। এই সনাতন প্রথা সামাজিক ন্যায় ও সাম্যের বিরোধী।’’
ওই আলোচনাসভায় ডিএমকে প্রধান স্ট্যালিনের পুত্র জানান, কিছু জিনিস আছে, যার বিরোধিতা যথেষ্ট নয়, তা নিশ্চিহ্ন করা দরকার। যেমন করোনা, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির বিরোধিতা নয়, তাদের নিশ্চিহ্ন করা দরকার, তেমনই সনাতন আদর্শকেও মুছে ফেলা দরকার। তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় তামিলনাড়ুর পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতিতেও। হিন্দুত্ববাদীদের বক্তব্য, পেরিয়ারের রাজনীতির সুরেই কথা বলে সনাতন ধর্মকে অপমান করেছেন উদয়নিধি।
লোকসভা ভোটের আগে ওই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিজেপি এবং তার সহযোগী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি গোটা বিষয়টিকে ‘হিন্দুধর্মের উপরে আঘাত’ বলে অভিযোগ তুলে প্রচারে নামে। সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পাশাপাশি, তামিলনাড়ু পুলিশের কাছের দায়ের হয় অভিযোগ। এফআইআর হয়, মহারাষ্ট্র, বিহার, কর্নাটক-সহ আরও কয়েকটি রাজ্যেও। হিন্দু মু্ন্নানি নামে একটি সংগঠনের তরফে স্ট্যালিন মন্ত্রিসভা থেকে উদয়নিধিকে বরখাস্তের দাবি জানিয়ে মাদ্রাজ হাই কোর্টেও মামলা দায়ের করা হয়। ওই বিতর্কিত মন্তব্যের সময় তামিলনাড়ুর ক্রীড়া ও যুব দফতরের মন্ত্রী ছিলেন উদয়নিধি। তার সপ্তাহ দুয়েক পরেই পিতা স্ট্যালিন তাঁকে উপমুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন।