Advertisement
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
National News

কেদারনাথের স্কুলগুলো সাউন্ডপ্রুফ করা হচ্ছে, কেন জানেন?

প্রচুর পর্যটক কেদারনাথে বেড়াতে যান। সেই পর্যটকদের নিয়েই ঘড় ঘড় আওয়াজ করে চারধামের উদ্দেশে উড়ে যায় হেলিকপ্টারগুলি। দিনে অন্তত ৬০-৭০ বার পর্যটকদের নিয়ে যাতায়াত করে হেলিকপ্টারগুলি।

অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।

অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।

সংবাদ সংস্থা
দেহরাদূন শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১১:১৫
Share: Save:

ক্লাসরুমে মনোযোগ দিয়ে শিক্ষকের পড়া শুনছিল ছোট্ট সুনীতা। হঠাত্ স্কুলের বাইরে ঘড় ঘড় শব্দে মনোসংযোগ নষ্ট হল। এ শব্দ তার খুব চেনা। নিজেকে সামালাতে পারল না সে। শিক্ষকের চোখ এড়িয়েই জানলা দিয়ে আকাশের দিকে চেয়ে রইল। সুনীতা দেখল ঘড় ঘড় শব্দ করে বিশালাকায় একটা হেলিকপ্টার মাথার উপর দিয়ে উড়ে গেল। মনে মনে খুব আনন্দ হল তার। সবার অলক্ষ্যে সেই হেলিকপ্টারের উদ্দেশে এক বার হাতও নাড়াল। শব্দটা মিলিয়ে যেতেই আবার শিক্ষকের পড়ানোর দিকে মন দিল।

শুধু সুনীতাই নয়, উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথের প্রতিটি স্কুলেই এমন দৃশ্য প্রতি দিনই দেখা যায়। ছোট ছোট উত্সুক মুখগুলো ওই শব্দের টানে আকাশের দিকে চেয়ে থাকে। এ যেন একটা রুটিনে দাঁড়িয়ে গিয়েছে!

প্রচুর পর্যটক কেদারনাথে বেড়াতে যান। সেই পর্যটকদের নিয়েই ঘড় ঘড় আওয়াজ করে চারধামের উদ্দেশে উড়ে যায় হেলিকপ্টারগুলি। দিনে অন্তত ৬০-৭০ বার পর্যটকদের নিয়ে যাতায়াত করে হেলিকপ্টারগুলি। আর পর্যটকদের নিত্যদিন যাতায়াত লক্ষ্য করে সুনীতারা।

আরও পড়ুন: ঠাকুরঘরে ঋতুবদল, শবরীমালার দরজা খুলল সুপ্রিম কোর্ট

রুদ্রপ্রয়াগ জেলার উপর দিয়েই মূলত হেলিকপ্টারগুলো যাতায়াত করে। যে পথ দিয়ে হেলিকপ্টারগুলো যায় তার নীচে উপত্যাগুলোতে অনেকগুলো স্কুল পড়ে। এ ছাড়া কেদারনাথ সংলগ্ন ফাটা, গুপ্তকাশী, গৌরীকুণ্ড, সোনপ্রয়াগ এবং নারায়ণকোটির মতো জায়গাগুলিতে বেশ কয়েকটি স্কুল রয়েছে। অভিযোগ ওঠা শুরু হয়েছে এ সব জাগয়াগুলি থেকে। অভিযোগ, হেলিকপ্টারের তীব্র শব্দে স্কুলপড়ুয়াদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে। শুধু তাই নয়, আওয়াজের চোটে স্কুলে পড়ানোর সময় শিক্ষকদের গলার স্বরও চাপা পড়ে যায়। এমন নানা অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করেছে। তাই পড়ুয়াদের সুবিধার কথা ভেবে একটা আলাপ-আলোচনা ও বৈঠকের মাধ্যমে একটা পথ বার করেছে রুদ্রপ্রয়াগ প্রশাসন। কথা চালানো হয় হেলিকপ্টার সংস্থাগুলোর সঙ্গেও। আপাতত স্থির হয়েছে হেলিরপ্টারের যাতায়াতের পথে যে সব স্কুলগুলি পড়ে সেই সব স্কুলের ক্লাসরুগুলো শব্দনিরোধক করা। হেলিকপ্টার সংস্থাকে এই ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। রুদ্রপ্রয়াগের জেলাশাসক মঙ্গেশ ঘিলদিয়াল জানান, প্রাথমিক ভাবে ন’টি স্কুলকে শব্দনিরোধক করা হবে। পরে ধীরে ধীরে বাকি স্কুলগুলিতেও এই ব্যবস্থা করা হবে।

আরও পড়ুন: কর্মীদের ৩ কোটি টাকার মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি উপহার! ফের চমক সুরাটের হিরে ব্যবসায়ীর

জেলারই সিরসি-র এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় প্রসাদ বলেন, “শিক্ষকরা এ বার একটু স্বস্তি বোধ করবেন। আওয়াজের চোটে পড়াশোনা প্রায় শিকেয় উঠতে চলেছে। প্রতি ঘণ্টায় হেলিকপ্টারগুলো তীব্র শব্দে মাথার উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে। ফলে পড়ানোয় খুব সমস্যা হচ্ছে।”

একটা সমাধান না হয় বেরলো। কিন্তু ওই জেলারই আবার অনেকে এই সমাধান পথ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। তাঁদের মতে, স্কুলগুলিকে শব্দনিরোধক করে কি পুরোপুরি সমস্যামুক্ত হওয়া সম্ভব? যদিও জেলার শিক্ষকমহল এই ব্যবস্থাকে স্বাগতই জানিয়েছেন।

(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE