অহমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার চার দিন পরে অবশেষে পাওয়া গেল দ্বিতীয় ব্ল্যাক বক্সটি। ঘটনাস্থল থেকেই তা উদ্ধার করা হয়েছে। এই ব্ল্যাক বক্সে বিমানের ককপিটের কথাবার্তা রেকর্ড করা রয়েছে। তা উদ্ধার করা গেলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তদন্তকারীদের হাতে আসতে পারে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই এই তথ্য জানিয়েছে। ইতিমধ্যে বিমানের ‘ডেটা রেকর্ডার’ বা প্রথম ব্ল্যাক বক্সটি উদ্ধার করা হয়েছে। দুই ব্ল্যাক বক্স এ বার অহমদাবাদের তদন্তে গতি আনবে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ১২ জুন বেলা ১টা ৩৮ মিনিটে অহমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে লন্ডন গ্যাটউইকের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল এয়ার ইন্ডিয়ার এআই১৭১। বোয়িং সংস্থার এই ড্রিমলাইনার বিমানে এর আগে বড়সড় দুর্ঘটনা হয়নি। কিন্তু সে দিন রানওয়ে ছাড়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সামনের বিল্ডিংয়ে ধাক্কা খেয়ে বিমানটি ভেঙে পড়ে। মুহূর্তে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে চারপাশ। বিমানে আগুন ধরে যায়। এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানে গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী-সহ ২৪২ জন ছিলেন। ২৪১ জনেরই মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া দুর্ঘটনাস্থলেও অনেকের প্রাণহানি ঘটেছে। এখনও পর্যন্ত সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ২৭০। ঘটনার পরের দিনই প্রথম ব্ল্যাক বক্সটি পাওয়া গিয়েছিল। যে বিল্ডিংয়ে বিমানটি ধাক্কা খায়, সেটি ছিল ডাক্তারদের হস্টেল ভবন। তার ছাদ থেকে প্রথম ব্ল্যাক্স বক্সটি উদ্ধার করা হয়েছিল। বিমান সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তাতে রেকর্ড করা থাকে। তার পর চার দিনের মাথায় উদ্ধার করা হল দ্বিতীয় ব্ল্যাক বক্স। এটি ‘ককপিট ভয়েস রেকর্ডার’ নামেও পরিচিত।
আরও পড়ুন:
প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিব পিকে মিশ্র রবিবার অহমদাবাদের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সোমবার ব্ল্যাক বক্স উদ্ধারের পর তাঁর কাছেও খবর গিয়েছে। দুর্ঘটনার তদন্ত করছে এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি) এবং এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এএআই)। তারা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিবের সঙ্গে তাদের একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেই বৈঠকে। কেন্দ্রীয় সরকারের অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক অহমদাবাদের দুর্ঘটনার তদন্তের জন্য উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে। তিন মাসের মধ্যে তাদের রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
ইতিমধ্যে জানা গিয়েছে, বিমান ভেঙে পড়ার আগে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন পাইলট। পাঠিয়েছিলেন বিপদবার্তা (মে ডে কল)। কিন্তু তার পর আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। মুহূর্তের মধ্যে বিমানটি ভেঙে পড়ে। একটি অডিয়োয় পাইলটকে বলতে শোনা গিয়েছে, থ্রাস্ট পাওয়া যাচ্ছে না। বিমান ক্রমশ নীচের দিকে নামছে। দ্বিতীয় ব্ল্যাক বক্স থেকে এই সংক্রান্ত আরও বিশদ তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
প্রথম ব্ল্যাক বক্সটি দুর্ঘটনার পরেও মোটের উপর অক্ষত ছিল। ফলে দ্রুত তার থেকে তথ্য বার করে আনা যাবে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ব্ল্যাক বক্সটি কী অবস্থায় মিলেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে অন্যতম প্রধান প্রমাণ হিসাবে এই দুই ব্ল্যাক বক্স ব্যবহৃত হবে।