Advertisement
E-Paper

বার চারেক কাছাকাছি পৌঁছেও ধরা গেল না পহেলগাঁওয়ের ঘাতকদের! জঙ্গিদের নাগাল পেতে কেন নাজেহাল ভারতীয় সেনা?

পহেলগাঁওয়ের চার জঙ্গিকে ধরতে গত পাঁচ দিন ধরে বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালিয়েছে নিরাপত্তাবাহিনী। দক্ষিণ কাশ্মীরের ঘন জঙ্গলে অন্তত চার বার তাদের মুখোমুখি হয়েছেন জওয়ানেরা। এক পর্যায়ে দু’দলের মধ্যে গুলি বিনিময়ও হয়েছে। কিন্তু জঙ্গিদের ধরা যায়নি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৩০

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর থেকেই এলাকায় নিশ্ছিদ্র প্রহরা শুরু করেছে ভারতীয় সেনা, কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (সিএপিএফ) এবং জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের যৌথ দল। তিন দলের সদস্যেরা একযোগে পহেলগাঁওয়ের আশপাশের বনগুলি ঘিরে ফেলেছেন। জঙ্গিদের খোঁজে চলছে চিরুনি তল্লাশি। সেই আবহেই এ বার জানা গেল, গত পাঁচ দিনে অন্তত চার বার হামলাকারীদের খোঁজ পেয়েছে নিরাপত্তাবাহিনী। এক বার দু’পক্ষে গুলির লড়াইও হয়েছে। কিন্তু নাগাল পাওয়া যায়নি জঙ্গিদের।

সেনা সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, পহেলগাঁওয়ের চার জঙ্গিকে ধরতে গত পাঁচ দিন ধরে বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালিয়েছে নিরাপত্তাবাহিনী। দক্ষিণ কাশ্মীরের ঘন জঙ্গলে অন্তত চার বার তাদের মুখোমুখি হয়েছেন জওয়ানেরা। এক পর্যায়ে দু’দলের মধ্যে গুলি বিনিময়ও হয়েছে। কিন্তু জঙ্গিদের ধরা যায়নি। এ বিষয়ে সেনার এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘এ যেন ইঁদুর-বিড়ালের খেলা চলছে! গত কয়েক দিনে অনেক বারই জঙ্গলে গা-ঢাকা দিয়ে থাকা জঙ্গিদের স্পষ্ট দেখা গিয়েছে। কিন্তু তাদের ধরার আগেই তারা আমাদের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়েছে। এখানে জঙ্গল খুব ঘন হওয়ায় কাউকে দূর থেকে স্পষ্ট দেখার পরেও পিছু ধাওয়া করা সহজ নয়। সেই সুযোগই কাজে লাগিয়েছে ওরা। কিন্তু আমরা নিশ্চিত যে, আমরা ওদের ধরবই। আর মাত্র কয়েক দিন ধৈর্য ধরুন।’’

আপাতত তল্লাশি অভিযানে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং গোয়েন্দা সূত্রই ভরসা নিরাপত্তাবাহিনীর। সে সবের ভিত্তিতেই চলছে চিরুনি তল্লাশি। সেনা সূত্রের খবর, অনন্তনাগের পহেলগাঁও তহসিলের হাপাত নার গ্রামের অদূরের জঙ্গলে প্রথম বার জঙ্গিদের দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সে বার ঘন জঙ্গলের সুযোগ নিয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় তারা। পরে কুলগামের জঙ্গলে ফের দেখা যায় তাদের। সেখানে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে তাদের মুখোমুখি সংঘর্ষও হয়েছিল। কিন্তু সে বারেও কোনও ভাবে পালিয়ে যায় তারা। দ্বিতীয় সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পর ত্রাল পর্বতমালায় আবার দেখা যায় জঙ্গিদের। চতুর্থ ও শেষ বার কোকেরনাগে জঙ্গিদের দেখেন নিরাপত্তাকর্মীরা। এখনও তারা ওই এলাকাতেই আত্মগোপন করে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

কিন্তু কেন নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না পহেলগাঁও হামলার নেপথ্যে থাকা জঙ্গিদের? সেনা সূত্রের ব্যাখ্যা, সাধারণত জঙ্গিদের দীর্ঘ সময় ধরে আত্মগোপন করে থাকতে গেলে পর্যাপ্ত খাদ্যের ব্যবস্থা করতে হয়। তখনই তারা জনবসতির কাছাকাছি পৌঁছোয়। কখনও কখনও আবার বনে গিয়ে খাবার পৌঁছে দিয়ে আসেন স্থানীয় পরিচিতেরা। সেই সুযোগ নিয়েই তাদের ঘিরে ফেলে নিরাপত্তাবাহিনী। তবে সেনা সূত্রের দাবি, পহেলগাঁও হামলার জঙ্গিরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছে। নিরাপত্তাবাহিনীর অনুমান, জঙ্গিরা আগে থেকেই খাদ্যসামগ্রী সংগ্রহ ও মজুত করে রেখেছে। যার ফলেই আরও কঠিন হয়ে পড়েছে অনুসন্ধান অভিযান। তা ছাড়া, পহেলগাঁও সংলগ্ন কিস্তওয়ার পর্বতমালায় চলতি মরসুমে অপেক্ষাকৃত কম তুষারপাত হয়েছে। যার ফলে ওই পর্বতশ্রেণি ব্যবহার করে জম্মুর দিকে এগোনোর বিকল্প রাস্তা পেয়েছে জঙ্গিরা। ওই এলাকায় ঘন বন রয়েছে। সেখানে অভিযান চালানো যারপরনাই কঠিন।

সেনার তরফে আরও জানানো হয়েছে, দিনকয়েক আগে নাকি নৈশভোজের সময় একটি গ্রামে ঢুকে পড়ে জঙ্গিরা। তার পর কয়েকটি বাড়িতে ঢুকে খাবার নিয়ে চম্পট দেয়। খবর পেয়ে যত ক্ষণে নিরাপত্তাবাহিনী এলাকায় পৌঁছোয়, তত ক্ষণে জঙ্গিরা পালিয়ে গিয়েছে। তবে নিরাপত্তাবাহিনীর বিশ্বাস, শীঘ্রই কোনও না কোনও ভুল পদক্ষেপ করবে জঙ্গিরা। সেই সুযোগেই তাদের নিকেশ করা হবে। যেমন, বৈসরনে নিহত পর্যটকদের দু’টি মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছে জঙ্গিরা। আশা করা হচ্ছে, জঙ্গিরা এই ফোনগুলি স্থানীয় এবং আন্তঃসীমান্ত যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ব্যবহার করতে পারে। ২৪ ঘণ্টা ধরে এই ফোন দু’টির টাওয়ারের অবস্থানের দিকে নজর রাখছে গোয়েন্দাদের সাইবার শাখা। সীমান্তেও বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। স্থানীয়দের মধ্যে কারা জঙ্গিদের সাহায্য করেছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করারও চেষ্টা করছে নিরাপত্তাবাহিনী।

terror attack Pahalgam Terror Attack Jammu and Kashmir KISHTWAR Indian Army
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy