পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে পাক সরকারের বিরুদ্ধে প্রবল বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১২ জনে। সূত্রের খবর, বাগ জেলায় ২ জন, ওই প্রদেশের রাজধানী মুজ়ফ্ফরাবাদে ২ জন ও মীরপুরে ২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২০০ জনেরও বেশি। আন্দোলনকারীদের সংগঠন ‘জয়েন্ট আওয়ামি অ্যাকশন কমিটি’-র দাবি, মুজ়ফ্ফরাবাদে পাক রেঞ্জার্সবাহিনীর গুলি ও অন্য এলাকায় জনতার উপরে পাক বাহিনীর গোলাবর্ষণের ফলে আন্দোলনকারীরা হতাহত হয়েছেন।
গত সপ্তাহে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের একটি গ্রামে বোমা ফেলে পাক বায়ুসেনার চিনে তৈরি জে-১৭ যুদ্ধবিমান। দেশবাসীর বিরুদ্ধে চিনে তৈরি এলএস-৬ লেজ়ার গাইডেড বোমা ব্যবহার করে পাক বাহিনী। তার পরেই সম্প্রতি বারবার জঙ্গি হানায় বিপর্যস্ত খাইবার পাখতুনখোয়া-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অসন্তোষ ছড়ায়। ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরে জঙ্গি সংগঠন জইশ ই মহম্মদ খাইবার পাখতুনখোয়া এলাকায় নিজেদের ঘাঁটি সরিয়ে এনেছে। তার ফলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেঅসন্তোষ বেড়েছে।
এর পরেই পাক-অধিকৃত কাশ্মীরেও বড় মাপের বিক্ষোভ শুরু হয়। ‘জয়েন্ট আওয়ামি অ্যাকশন কমিটি’-র নেতা শৌকত মির জানিয়েছেন, তাঁদের ৩৮ দফা দাবি রয়েছে। সেই দাবিগুলির সমর্থনেই প্রাদেশিক রাজধানী মুজ়ফ্ফরাবাদের দিকে ‘দীর্ঘ যাত্রা’ (লং মার্চ) শুরু করেছেন তাঁরা। দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের আইনসভা থেকে পাকিস্তানে থাকা কাশ্মীরি শরণার্থীদের জন্য সংরক্ষিত ১২টি আসনের অবলুপ্তি। শৌকতের মতে, এতে প্রতিনিধিত্বমূলক প্রশাসন ব্যাহত হয়।
শৌকতের কথায়, ‘‘আমাদের ৭০ বছর ধরে মৌলিক অধিকার ভোগ করতে দেওয়া হয়নি। সেই অধিকার আদায় করতেই এই অভিযান। অধিকার না পেলে পাক সরকারকে মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়তে হবে।’’
এখনও পর্যন্ত শাহবাজ় শরিফ সরকার দমনপীড়নের মাধ্যমেই এই আন্দোলনের মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আন্দোলনকারীদের মুজ়ফ্ফরাবাদে পৌঁছনোর পথ বন্ধ করতে শহরের আশপাশে সেতুর উপরে কন্টেনার রেখেছিল পাক বাহিনী। আজ সকালে পাক বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে আন্দোলনকারীরা। পাশাপাশি কন্টেনারগুলি নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। সমাজমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিয়োর কথা উল্লেখ করে আন্দোলনকারীদের দাবি, যাবতীয় প্রতিরোধ সত্ত্বেও আন্দোলনকারী ভর্তি কয়েকটি ক্যারাভ্যান মুজ়ফ্ফরাবাদে পৌঁছে গিয়েছে।
আগামিকাল লন্ডনে পাক হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছে ‘ফ্রেন্ডস অব জয়েন্ট আওয়ামি অ্যাকশন কমিটি’ নামে একটি সংগঠন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)