‘মাইসোর পাক’ সন্দেশের নাম বদলে ‘মাইসোর শ্রী’ হিসাবে বিক্রি করতে শুরু করেছেন অনেকে। রাজস্থানের জয়পুরের বিভিন্ন মিষ্টান্ন বিক্রেতা চাইছেন, সন্দেশের নামের থেকে ‘পাক’ বাদ দিতে। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু এবং প্রত্যাঘাতে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরে অনেক মিষ্টান্ন বিক্রেতাই চাইছেন ‘পাক’ শব্দটি বাদ যাক সন্দেশের থেকে। যদিও নাম বদল ঘিরে ভিন্ন মতও রয়েছে অনেকের। তাঁরা মনে করছেন, পুরনো নামের সঙ্গে যে মিষ্টান্নের ঐতিহ্য জড়িয়ে রয়েছে। তাই সন্দেশের নামে বদল চাইছেন না তাঁরা।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই অনুসারে, শুধু মাইসোর পাকই নয়, আরও যে মিষ্টান্নের নামের সঙ্গে ‘পাক’ জুড়ে রয়েছে সেগুলিরও নাম বদলে ফেলতে চাইছেন জয়পুরের মিষ্টান্ন বিক্রেতারা। এমন অন্তত তিনটি মিষ্টির নামের শেষাংশ থেকে ‘পাক’ বাদ দিয়ে ‘শ্রী’ যোগ করেছেন তাঁরা। জয়পুরের এক মিষ্টান্ন বিক্রেতা অঞ্জলি জৈন পিটিআইকে বলেন, “দেশপ্রেমের ভাবনা শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক সীমান্তেই নয়, ভারতের প্রতিটি বাড়িতে, প্রত্যেক ভারতীয়ের হৃদয়ে থাকা উচিত। পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পরে আমরা কেউই খুশি নই। মিষ্টির নামবদলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ক্রেতারাও।”
অপর এক মিষ্টান্ন বিক্রেতা বিনীত ত্রিকারের মুখেও মিষ্টির নামবদলের নেপথ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দেশবাসীর ক্ষোভের প্রতিফলনের কথা উঠে এসেছে। তিনি বলেন, “"আমরা একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই। যারা ভারতের দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস দেখাবে, তাদের নাম মুছে ফেলা হবে। প্রত্যেক ভারতীয় নিজের মতো করে প্রতিবাদ জানাবে। আমাদের এই মিষ্টি (নামবদল) একটি প্রতীকী বদলা।”
আরও পড়ুন:
বস্তুত, মাইসোর পাক সন্দেশে ‘পাক’ শব্দের সঙ্গে আক্ষরিক অর্থে পাকিস্তানের কোনও যোগ নেই। মাইসোর পাক সন্দেশের ‘পাক’ শব্দটি এসেছে কন্নড় শব্দ ‘পাকা’ থেকে, যার অর্থ একটি ঘন মিষ্টি তরল। কর্নাটকের মহীশূরে এই মিষ্টান্ন প্রথম তৈরি হয়েছিল বলে নাম ‘মাইসোর পাক’। মহীশূরের রাজপ্রাসাদের হেঁশেলে এই মিষ্টান্ন প্রথম তৈরি হয়েছিল। দাবি করা হয় সেটি প্রথম তৈরি করেছিলেন রাজপরিবারের রাঁধুনি কাকাসুর মদপ্পা। মদপ্পার বংশধর বলে পরিচিত এস নটরাজ অবশ্য চাইছেন, এই মিষ্টান্নের নাম ‘মাইসোর পাক’ই থাকা উচিত। সংবাদমাধ্যম নিউজ় ১৮-কে তিনি বলেন, “যে কোনও সৌধ ব ঐতিহ্যের যেমন নিজস্ব নাম রয়েছে, তেমনই মাইসোর পাকেরও রয়েছে। এটির অদলবদল করা উচিত নয়।”