রাহুল গান্ধী মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও কর্নাটকের ভোটার তালিকায় কারচুরির অভিযোগ করে নির্বাচন কমিশনের দিকে আঙুল তোলার পরে এ বার এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার দাবি করলেন, মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দুই ব্যক্তি এসে তাঁকে বিধানসভার ২৮৮টি আসনের মধ্যে ১৬০টি আসন জিতিয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তা-সহ প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
শরদ পওয়ার দাবি করেছেন, দিল্লিতে দুই ব্যক্তি তাঁকে এই প্রস্তাব দেন। তার পরে তিনি তাঁদের সঙ্গে রাহুল গান্ধীর দেখা করিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু রাহুল গান্ধী বলে দিয়েছিলেন, এই ভাবে কংগ্রেস ভোটে জিততে চায় না। পওয়ারের বক্তব্য, তখন তিনি এই বিষয়টিকে গুরুত্ত্ব দেননি। তাঁর মনে নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে কোনও সন্দেহ ছিল না। পওয়ারের বক্তব্য, এ বার রাহুল গান্ধী কর্নাটকের একটি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটার তালিকায় কারচুপির যে প্রমাণ প্রকাশ করেছেন, তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের তদন্ত করা উচিত।
নির্বাচন কমিশন আজ ফের বলেছে, রাহুল গান্ধী কর্নাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটার তালিকায় যে ভুয়ো ভোটার, জাল ভোটারের অভিযোগ তুলেছেন, তা তিনি আইন অনুযায়ী শপথ করে নির্বাচন কমিশনকে জানান। না হলে ক্ষমা চান। কর্নাটকের বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীর অভিযোগ, রাহুল গান্ধীর থেকে এই সব অভিযোগ শোনার জন্য বেঙ্গালুরুতে নির্বাচন কমিশন সময় দিয়েছিল। রাহুল নিজে যাননি। তাঁর দলের নেতারা অভিযোগ জানালেও কোনও তথ্যপ্রমাণ জমা দেননি। বিজেপির মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া আজ দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ তুলেছেন, নির্বাচন কমিশনে আস্থা না থাকলে রাহুল গান্ধী লোকসভা থেকে ইস্তফা দিন। কংগ্রেসের নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীরাও পদত্যাগ করুন। মহারাষ্ট্রের বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের যুক্তি, শরদ পওয়ার থেকে রাহুল গান্ধীরা অভিযোগই তুলছেন, প্রমাণ দিচ্ছেন না।
উল্টো দিকে কংগ্রেস দাবি করেছে, রাহুল গান্ধী কর্নাটকের ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগ তোলার পরে ৪৮ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। এখনও নির্বাচন কমিশন বলেনি যে মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রে ভুয়ো ভোটার, ভুল ঠিকানায় ভোটার, জাল ভোটার ছিল না। রাহুল গান্ধী যে সব তথ্য দিয়েছেন, তা সাধারণ মানুষ যাচাই করে দেখেছেন, সব অভিযোগ সত্যি। কিন্তু কমিশন তদন্ত করছে না।
সোমবার ১১ অগস্ট বিরোধীরা সংসদ থেকে নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত মিছিল করবেন। সেই সঙ্গে সংসদেও ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে আলোচনার দাবিতে লোকসভা, রাজ্যসভা অচল রাখা হবে। আজ কংগ্রেসের সচেতক মাণিকম টেগোর পুরনো উদাহরণ তুলে ধরে যুক্তি দিয়েছেন, মোদী সরকার বলছে নির্বাচন কমিশনের কাজ নিয়ে সংসদে আলোচনা করা যায় না। কিন্তু অতীতে লোকসভা, রাজ্যসভায় একাধিক বার এই নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)