E-Paper

কেন এ ভাবে লড়তে হল, বোঝাবেন তারুর

গভীর রাতে আমেরিকার নিউ ইয়র্কে পৌঁছেছে শশী তারুরের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলটি। প্রসঙ্গত, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আট বার ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে মধ্যস্থতার দাবি করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২৫ ০৬:৩৬
শশী তারুর।

শশী তারুর। —ফাইল চিত্র।

নিয়ন্ত্রণরেখায় গোলাগুলি বন্ধ হয়েছে আপাতত। শুরু হয়েছে ভাষ্যের লড়াই। আর সেই লড়াইয়ে এগিয়ে থাকতে ভারতের সাতটি সর্বদলীয় প্রতিনিধিবাহিনী ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের ৩২টি দেশে। বিদেশ মন্ত্রকের মতে, 'অপারেশন সিঁদুরের' পর আন্তর্জাতিক স্তরে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসে পাকিস্তানের ভূমিকার কথা জানানো হচ্ছে এই সমান্তরাল দৌত্যে।

আজ গভীর রাতে আমেরিকার নিউ ইয়র্কে পৌঁছেছে শশী তারুরের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলটি। প্রসঙ্গত, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আট বার ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে মধ্যস্থতার দাবি করেছেন। কাশ্মীর নিয়ে হস্তক্ষেপের অভিপ্রায় জানিয়েছেন। ফলে তারুর বাহিনীর কাঁধে বাড়তি দায়িত্ব— সে দেশের কংগ্রেস, নাগরিক সমাজ, ভারতীয় বংশোদ্ভূত, অসরকারি সংস্থা, সংবাদমাধ্যম, বাণিজ্য মহলের কাছে ভারতের কাশ্মীর নিয়ে এবং সন্ত্রাস প্রসঙ্গে সুদৃঢ় অবস্থানকে তুলে ধরা। তারুরের দলে রয়েছেন আমেরিকায় নিযুক্ত প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত তরণজিৎ সিংহ সান্ধু। আমেরিকা ছাড়াও তাঁরা যাবেন গায়না, কলম্বিয়া, পানামা এবং ব্রাজ়িলে।

যাওয়ার আগে তারুর বলেন, ‘‘আমাদের সফরের উদ্দেশ্য, বিশ্বের কাছে বার্তা পাঠানো যে অন্তত ১৯৮৯ সাল থেকে ভারত ভয়াবহ ভাবে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছে। এই বার্তাটি যাতে ঠিকমতো তুলে ধরা যায় সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অনেক সময়ই বিবৃতিতেসবটা স্পষ্ট হয় না। নিজেদের বক্তব্য এবং দৃষ্টিভঙ্গিকে গঠনমূলকভাবে অন্য রাষ্ট্রের কাছে পৌঁছে দেওয়া জরুরি। আমরা কারও সঙ্গে তর্ক করতে যাচ্ছি না। বোঝাতে যাচ্ছি আমাদের দেশে ঠিক কী ঘটছে, আমাদের কী করতে হবে, ভবিষ্যতেসন্ত্রাসবাদী হামলার সঙ্গে কী ভাবে যুঝতে হবে, কেন এ বার এ ভাবে লড়তে হল।”

এনসিপি (শরদ পওয়ার)-র সাংসদ সুপ্রিয়া সুলেরনেতৃত্বাধীন দলটি পৌঁছেছে কাতারে। ইথিয়োপিয়া, মিশর, দক্ষিণ আফ্রিকাতেও যাবেন তাঁরা। দলে রয়েছেন প্রবীণ কূটনীতিক, রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের প্রাক্তন স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ আকবরউদ্দিন। তাঁর কথায়, ‘‘এই দৌত্যে ভারত নিজের নতুন সন্ত্রাস-বিরোধী সনদকে ব্যাখ্যা করে কোনও রাষ্ট্রের পিঠ চাপড়ানি চাইছে না। চাইছে তারা বিষয়টি বুঝুক। এটা ভিন্ন ধরনের কূটনীতি। দেশপ্রেমের মঞ্চায়ন নয় বরং একে কৌশলগত কথন বলা চলতে পারে। তিনটি দিক রয়েছে এই কথনের। এক, সন্ত্রাস মোকাবিলায় দেশের রাজনৈতিক ঐক্য তুলে ধরা। দুই, বিশ্বেরপ্রধান রাষ্ট্রগুলিকে ভারতের সহ্যের সীমা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া। তিন, অবশ্যম্ভাবী আগামী আঘাতের আগে অগ্রিম ভাষ্য তৈরি করে রাখা।’’ সুপ্রিয়ার কথায়, ‘‘আমরা বিশ্বশান্তির পক্ষে। পহেলগাম কাণ্ডের প্রকৃত ছবি বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চলেছি। পাকিস্তান কী অবস্থান নিয়েছে, কী ভাবে তারা নিরপরাধ মানুষকে খুন করেছে।’’

আগামিকাল ভোরে বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদের নেতৃত্বে একটি দল রওনা হচ্ছে ইউরোপ। সেই দলে রয়েছেন বাংলার বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। জানালেন, ‘‘পাকিস্তানকে কূটনৈতিক ভাবে একঘরে করা আমাদের লক্ষ্য। সন্ত্রাস এবং সংলাপ একসঙ্গে চলতে পারে না। আমরা জানাব, দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে মানুষকেচরমপন্থার দিকে ঠেলে দেওয়া হয় পাকিস্তানে। সন্ত্রাসবাদ এমন একটি বহুমাথা বিশিষ্ট রাক্ষস, সে আমাদের মারার আগে, আমাদেরই উচিত তাকে মেরে ফেলা। শুধু ভারতযে সন্ত্রাসবাদে আক্রান্ত এমন তো নয়, মানবসভ্যতার কাছেই এটা অভিশাপ।" তাঁরা যাচ্ছেন, ব্রিটেন, ডেনমার্ক, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

sashi tharoor India-Pakistan Congress

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy