E-Paper

বাংলাদেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেবেন হাসিনাই: জয়শঙ্কর

গত বছর জুলাই থেকে চলা সরকার বিরোধী গণবিক্ষোভের জেরে গত বছর অগস্টে ভারতে চলে আসেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন থেকে অজ্ঞাতবাসেই রয়েছেন তিনি।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:১৯
(বাঁ দিকে) শেখ হাসিনা। এস জয়শঙ্কর (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) শেখ হাসিনা। এস জয়শঙ্কর (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতে অজ্ঞাতবাসে থাকা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা কবে বাংলাদেশে ফিরবেন? তাঁর প্রত্যর্পণ চেয়ে ইতিমধ্যেই দিল্লির কাছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে দু’দফায় চিঠি দেওয়া হলেও কেন্দ্র বিষয়টি নিয়ে কোনও নাড়াচাড়া করেনি। এই অবস্থায় হাসিনার বাংলাদেশে ফেরার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে শনিবার বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, এ’টি হাসিনার ব্যক্তিগত বিষয়। নিজের দেশের পরিস্থিতি বিচার করে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।

গত বছর জুলাই থেকে চলা সরকার বিরোধী গণবিক্ষোভের জেরে গত বছর অগস্টে ভারতে চলে আসেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন থেকে অজ্ঞাতবাসেই রয়েছেন তিনি। শনিবার একটি অনুষ্ঠানে প্রসঙ্গটি টেনে বিদেশমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, হাসিনা কি যত দিন ইচ্ছে ভারতে থাকবেন? উত্তরে বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে তিনি এখানে এসেছিলেন। আমার মনে হয়, সেই সময়ের পরিস্থিতিই স্পষ্ট করেছে তাঁর সঙ্গে কী ঘটেছিল। কিন্তু আবারও বলছি, এটা এমন একটি বিষয়, যেখানে তাঁকেই বাংলাদেশে ফেরা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”

হাসিনা দেশছাড়া হওয়ার পরে বাংলাদেশের শাসনভার যায় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে। সেই সরকার ক্ষমতায় বসার পর থেকেই হাসিনা, তাঁর পরিবারের সদস্য এবং তাঁর সরকার ও দলের প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে গণহত্যার মামলায় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে। তাঁর যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা দিয়েই জুলাই-বিক্ষোভে নিহতদের পরিবার এবং আহতদের ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জমি দুর্নীতি মামলায় হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ডেরও নির্দেশ দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।

বাংলাদেশে হাসিনা-বিরোধী ছাত্রনেতৃত্ব এবং ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার গঠনের পর থেকেই ঢাকার সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় দু’দেশের সম্পর্ক নিয়ে করা প্রশ্নে জয়শঙ্কর বলেন, “আমরা শুনেছি যে বাংলাদেশের মানুষ, বিশেষ করে যাঁরা এখন ক্ষমতায় আছেন, তাঁদের গত নির্বাচন পরিচালনা নিয়ে সমস্যা ছিল। নির্বাচনটাই যদি বিষয় হয়, তা হলে সবার আগে সেখানে সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচন হোক।” বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্য, ভারত চায় প্রতিবেশী দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক। তিনি বলেন, “আমরা বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করি। আমরা মনে করি, একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে যে কোনও গণতান্ত্রিক দেশের মতোই বাংলাদেশও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে চায়।’’ সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত যে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফলাফল যা–ই হোক না কেন, তা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ ও পরিণত দৃষ্টিভঙ্গির হবে। আশা করি, পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’’

১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বরে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছিল ভারত। এ দিন সে কথা মনে করিয়ে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রথম ভারতের স্বীকৃতি দেওয়ার ঘটনা ছিল ঐতিহাসিক ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সিদ্ধান্ত।’’ বিবৃতিতে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের ভারত-বিরোধিতাকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিপুষ্ট হয়ে ভারতের মতো বৃহৎ প্রতিবেশী ও ঐতিহাসিক ভাবে পরীক্ষিত অকৃত্রিম বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করা বাংলাদেশের জন্য ভাল ফল বয়ে আনবে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

India-Bangladesh Bangladesh awami league

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy