বাবা পাশে থাকার ইঙ্গিত দিতেই বেসুরে বাজলেন কাকা।
ছেলে অখিলেশ কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধতেই বেঁকে বসেছিলেন মুলায়ম সিংহ যাদব। অনেক বোঝানোর পরে তিনি বলেছেন, শুধু নিজের দলের প্রার্থীদের হয়েই প্রচার করবেন। আজ সটান দল ভাঙার হুমকি দিয়েছেন তাঁর ভাই শিবপাল যাদব। ফলে ভোটের দিনক্ষণ ক্রমশ এগিয়ে এলেও গণ্ডগোল কমার লক্ষণ নেই উত্তরপ্রদেশের যাদব পরিবারে।
উত্তরপ্রদেশের এটা-য় আজ এক জনসভায় শিবপাল বলেন, তিনি সপা-র প্রার্থী। সপা-র টিকিটে ভোটে লড়ছেন। তাঁর সঙ্গে সপা-র সম্পর্ক ওইটুকুই। কারণ, ১১ মার্চ ভোটের ফল বেরোনোর পরেই তিনি নিজের দল গড়বেন। একই সঙ্গে দলের যে প্রার্থীরা জোটের কারণে টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসেবে লড়ছেন, তাঁদের হয়ে প্রচারে নামা ও ভবিষ্যতে তাঁদের পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছেন শিবপাল। তাঁর
এই পদক্ষেপে মুলায়মের যে প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে, জনসভা থেকে তা-ও বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন শিবপাল। বলেছেন, শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তিনি দাদার পাশে রয়েছেন।
সপা-র রাশ সরকারি ভাবে অখিলেশের হাতে যাওয়ার পর থেকে কার্যত রা কাড়ছিলেন না শিবপাল। মুলায়মের অনুরোধে শিবপালকে টিকিট দিয়ে গৃহবিবাদ মেটানোর একটা চেষ্টা করেছিলেন অখিলেশ। ভেবেছিলেন, দলে ঘোঁট পাকানোর চেয়ে নিজের প্রচার নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন শিবপাল। প্রাথমিক ভাবে সেই পরিকল্পনা খেটেও যায়। গত দু’সপ্তাহ ধরে নিজের প্রচার ও মনোনয়নেই মন দিয়েছিলেন শিবপাল। কিন্তু সে পাট চুকতেই আজ স্বমূর্তি ধরেছেন তিনি।
সপা সূত্রের খবর, অখিলেশের অঙ্গুলিহেলনে এক দিকে শিবপালের প্রার্থীরা যেমন টিকিট পাননি, তেমন দলে তিনি নিজেও যে ক্রমশ গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছেন, তা ক্রমশ বুঝতে পারছেন বর্ষীয়ান এই নেতা। এই পরিস্থিতিতে দলে যে অখিলেশ-বিরোধী শিবির রয়েছে, তাদের বার্তা দিতেই আজ শিবপাল এ ভাবে মুখ খুলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে, দল ক্ষমতায় ফিরতে না পারলে টিকিট না-পাওয়া নেতাদের নিয়েই তিনি যে আলাদা দল গড়তে পারেন, সেই সম্ভাবনা উস্কে দিয়েছেন তিনি। তবে বিষয়টি নিয়ে অখিলেশ শিবিরের ব্যাখ্যা, অস্তিত্বের সংকট থেকেই এ ভাবে সরব হয়েছেন শিবপাল। শেষ হাসি যদি অখিলেশ হাসেন, তখন কাকার বিদ্রোহের ফানুস যে একেবারে চুপসে যাবে তা বলাই বাহুল্য। সেই কারণে এখনই শিবপালের বক্তব্যকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ তাঁরা।
শিবপালের মুখে যখন বিদ্রোহের সুর, তখন অখিলেশ-বিরোধী শিবিরের অন্যতম নেতা অমর সিংহকে আজ সংসদে একাধিক বার এড়িয়ে গিয়েছেন রাহুল গাঁধী। শুরু থেকেই অখিলেশ শিবিরের অভিযোগ, তাঁদের পরিবারিক বিবাদের পিছনে রয়েছেন অমর। চিকিৎসার জন্য মাঝে ক’দিন লন্ডনে কাটালেও আজ বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনে যৌথ সভায় রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার সময়ে সংসদের সেন্ট্রাল হলের একেবারে শেষ সারিতে বসে থাকতে দেখা যায় বিতর্কিত সপা সাংসদকে। রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা শেষ হতেই রাহুলকে সভা থেকে বেরোতে দেখে তাঁর দিকে ধেয়ে যান অমর। সে যাত্রা অমরের সঙ্গে আলতো করমর্দন করে তাঁকে এড়িয়ে যান রাহুল।
খানিক পরে ফের একই দৃশ্য। রাহুলের দিকে আবার এগিয়ে আসতে দেখা যায় অমরকে। উদ্দেশ্য একটাই— রাহুলের সঙ্গে কথা বলা। কিন্তু এ বার অমরকে আসতে দেখেই তাঁর পিঠে আলতো চাপড় মেরে গতি বাড়িয়ে অন্য নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে সেন্ট্রাল হল থেকে বেরিয়ে যান রাহুল। রাহুল তাঁকে এড়িয়ে যাচ্ছেন বুঝতে পেরে ক্ষান্ত দেন অমর। যা দেখে কংগ্রেস শিবিরের নেতারা বলছেন, ‘‘অমরকে এড়িয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য একটাই। তা হল অখিলেশকে জোট-বার্তা দেওয়া।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy