E-Paper

১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সি কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ক্রমেই বাড়ছে স্মার্ট ফোনের নেশা, দাবি রিপোর্টে

সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রায় সব কিশোর (৯০.৫%) সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয়। এ ক্ষেত্রেও মেয়েরা (৮৭.৮%) কিছুটা পিছিয়ে। অনলাইনে কী ভাবে সুরক্ষিত থাকবে, সে বিষয়ে অনেকেরই সচেতনতা নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:৪৮

—প্রতীকী ছবি।

বলা হয় এখন স্মার্ট ফোনের যুগ। সকলের হাতেই ঘুরছে মুঠো-ফোন। সারা দেশে এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ১৪ থেকে ১৮ বছরের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ৯০ শতাংশের বাড়িতে স্মার্ট ফোন আছে। তাদের মধ্যে ৪৩.৭% কিশোর ও ১৯.৭% কিশোরীর নিজস্ব স্মার্ট
ফোন আছে।

এই সমীক্ষা চালিয়ে ২০২৩-এর যে অ্যানুয়াল স্টেটাস অব এডুকেশন রিপোর্ট (এএসইআর অথবা এসার)-বেরিয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে শিক্ষাক্ষেত্রে সর্বভারতীয় নিরিখে কোনও কোনও বিষয়ে ফল ভাল পশ্চিমবঙ্গের। সমীক্ষা হয়েছিল দেশের ২৬টি রাজ্যের ২৮টি জেলায়। উত্তর ও মধ্যপ্রদেশের ২টি জেলা বেছে নেওয়া হয়েছিল। ছিল এ রাজ্যের কোচবিহার। ১৪ থেকে ১৮ বছরের মোট ৩৪ হাজার ৭৪৫ জনের উপর এই সমীক্ষা করা হয়েছিল।

কোচবিহারের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, ওই বয়সের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ৮৩.৬%-এর বাড়িতে স্মার্ট ফোন আছে। ৫০.৮% কিশোর ও ২১.২% কিশোরীর নিজস্ব স্মার্ট ফোন রয়েছে। দৃশ্যত সংখ্যাটি সর্বভারতীয় তুলনায় ভাল। কোচবিহারে ৫৫.১% লেখাপড়ার ক্ষেত্রে সাহায্য নেয় স্মার্ট ফোনের। এসারের রিপোর্টে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ওই শতাংশের হিসাব না-দিলেও জানানো হয়েছে, দেশের দুই-তৃতীয়াংশ কিশোর-কিশোরী লেখাপড়ার বিষয়ে স্মার্ট ফোনের সাহায্য নেয়। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ছেলেদের থেকে মেয়েরা স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটার ব্যবহার অনেক কম জানে।

দেখা গিয়েছে, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রায় সব কিশোর (৯০.৫%) সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয়। এ ক্ষেত্রেও মেয়েরা (৮৭.৮%) কিছুটা পিছিয়ে। অনলাইনে কী ভাবে সুরক্ষিত থাকবে, সে বিষয়ে এই কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে অনেকেরই সচেতনতা নেই। যাদের আছে তাদের মধ্যে কিশোরীদের সংখ্যা কম। তাদের মধ্যে ২৫% অনলাইন পেমেন্ট, ফর্ম ফিলাপের কাজ স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে করে। ৮০% শতাংশই বিভিন্ন বিনোদন যেমন সিনেমা দেখা, গান শোনার ক্ষেত্রে ফোন ব্যবহার করে। কোচবিহারের ক্ষেত্রে ৮৩.৮% সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয়। কিন্তু তাদের মধ্যে অতি অল্প সংখ্যকই অনলাইন নিরাপত্তা বিষয়ে জানে।

লেখাপড়ার বাইরে কী কাজে তারা ব্যস্ত, বুনিয়াদি পঠন এবং অঙ্ক করার ক্ষমতা কতটা। তাদের ডিজিটাল জ্ঞান এবং দক্ষতা কতটা। তাদের কি স্মার্ট ফোন আছে? থাকলে তারা কী কাজে ব্যবহার করে। ছোটোখাট কাজ কী তারা স্মার্ট ফোনে করতে পারে?এই তিনটি বিষয়ের উপর চালানো হয়েছে সমীক্ষা।

দেখা গিয়েছে, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ৮৬.৮% শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে। কোচবিহারের ক্ষেত্রে এই হার ৯০.৩%। সারা দেশে ৪০.৩% কিশোর বাড়ির কাজ ছাড়াও অন্য কাজ করে। মেয়েদের হার ২৮%। কোচবিহারের ক্ষেত্রে কিশোর কিশোরী মিলিয়ে এই হার ২৪.৮%।

দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে লিঙ্গ বৈষম্য খুব বেশি নেই। তবে বয়সের ক্ষেত্রে অনেক ফারাক রয়েছে। ১৪ বছর বয়সের ছেলেমেয়েদের ৩.৯% কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যায় না। ১৮ বছরের ক্ষেত্রে এই হার ৩২.৬%। কোচবিহারের ক্ষেত্রে ৯.৬ % কোথাও ভর্তি হয়নি। এখানেও এই হার ১৭ থেকে ১৮ বছর বয়সের মধ্যে বেশি। ৫.৬% বৃত্তিমূলক শিক্ষায় রয়েছে। কোচবিহারের ক্ষেত্রে এই হার ৫%।এসার রিপোর্ট জানিয়েছে, দেশে ২৫% পড়ুয়া দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক নিজেদের ভাষায় পড়তে পারে না। কোচবিহারের ক্ষেত্রে এই শতাংশ ৩৫.১%। কোচবিহারে গণিতের পরীক্ষায় ভাগের অঙ্ক পেরেছে ২১.৭%। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ৫০%-র বেশি ভাগ করতে সমস্যায় পড়েছে। কোচবিহারে ৫৭.৩% ইংরেজি পরীক্ষায় ন্যূনতম একটি বাক্য পড়তে পেরেছে। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রেও ফল একই। কোচবিহারে ৬০.৯% শতাংশ ওষুধের প্যাকেটের উপর ইংরেজি লেখা পড়তে পারে এবং তা নিয়ে তিন-চারটি প্রশ্নের উত্তরও দিতে পেরেছে। দেশে ইংরেজি পড়তে পারা প্রথম শ্রেণির পড়ুয়ারা ওআরএস প্যাকেট দিলে, তার লেখা পড়তে পারে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

teenagers Mobile Phone

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy