মাকে নিয়ে দেশের বাড়ি ফিরছিলেন পাপ্পু। বিহারের পটনায় তাঁদের বাড়ি। ট্রেন ধরার জন্য ভিড় থিকথিকে নয়াদিল্লি স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন। একটা ঘোষণা। তার পরই যেন বয়ে গেল ঝড়! তত ক্ষণে পাপ্পুর হাত ছেড়ে গিয়েছেন মা। পরে যখন আবার ধরলেন, তখন সেই হাত বরফ ঠান্ডা। দিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে প্রৌঢ়ার। ছেলের আক্ষেপ, ‘‘মায়ের আর দেশে ফেরা হল না।’’
পাপ্পু দিল্লিতে কাজ করেন। বহু দিন পটনায় দেশের বাড়িতে ফেরা হয়নি। এক বার দেশে যেতে চেয়েছিলেন মা। তাই প্রৌঢ়াকে নিয়ে পটনায় যাচ্ছিলেন শনিবার রাতে। কিন্তু দেশে ফেরা আর হয়নি। পাপ্পুর কথায়, ‘‘আমার মা দিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন। বাড়ি যাচ্ছিলাম। আর যাওয়া হল না।’’
এক প্রত্যক্ষদর্শী এই ‘বিশৃঙ্খলতা’-র জন্য রেল প্রশাসনকেই দায়ী করেছেন। তাঁর দাবি, ভিড় হতে পারে জেনেও যথেষ্ট পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি। আর সে জন্য এই বিপত্তি। দিল্লির বাসিন্দা হীরালাল মাথুর কুম্ভ যাওয়ার জন্য ট্রেন ধরতে এসেছিলেন স্টেশনে। শেষ পর্যন্ত আর যাওয়া হয়নি তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য স্টেশনে কেউ ছিল না। এর মাঝেই ঘোষণা হল যে, ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যে ট্রেন আসার কথা ছিল, তা ১৬ নম্বরে আসছে। চারদিক থেকে মানুষজন ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মের উদ্দেশে ছুটতে শুরু করেন। তখনই পদপিষ্ট হন বহু জন। অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।’’ তিনি জানিয়েছেন, যাঁরা পড়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের মাড়িয়ে অন্যেরা ছুটতে থাকেন ট্রেন ধরার জন্য।
আরও পড়ুন:
দিল্লি স্টেশনের ঘটনায় মহিলা, শিশু-সহ ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত বহু জন। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবে রেল। যাঁদের আঘাত গুরুতর, তাঁরা আড়াই লক্ষ টাকা করে পাবেন। যাঁদের আঘাত গুরুতর নয়, তাঁদের এক লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। রেলের তরফে এই ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেল।