মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে স্বামী রাজা রঘুবংশীকে খুনের অভিযোগে ধরা পড়েছেন সোনম রঘুবংশী, তাঁর প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা-সহ পাঁচ জন। এ বার জানা গেল, মেঘালয় থেকে কোন পথে উত্তরপ্রদেশ এসেছিলেন সোনমেরা। কী ভাবেই বা সোনমের নিখোঁজ হয়ে যাওয়া নিয়ে এত হইচইয়ের মাঝেও তিনি গা-ঢাকা দিয়েছিলেন এত দিন ধরে।
সোনম আগে দাবি করেছিলেন, তিনি মেঘালয় থেকে সরাসরি উত্তরপ্রদেশের গাজ়িপুর এসেছেন। অথচ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৩ মে স্বামী রাজা খুন হওয়ার পর সোনম সোজা চলে গিয়েছিলেন ইনদওরে। সেখানে একটি ভাড়াবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তার মাঝেই গত ২ জুন মেঘালয়ের এক গভীর খাদ থেকে রাজার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। চারদিকে রটে যায়, সোনম ‘নিখোঁজ’। অথচ সেই সময় ইনদওরের সেই ফ্ল্যাটে আত্মগোপন করেছিলেন সোনম। ফ্ল্যাটটি আগে থেকেই ভাড়া করে রেখেছিলেন তিন ভাড়াটে খুনির একজন। পুলিশ সূত্রে খবর, ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন বিশাল সিংহ চৌহান, মেঘালয়ে যিনি প্রথম ধারালো ছুরি নিয়ে রাজার উপর চড়াও হন।
আরও পড়ুন:
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ওই আবাসনটি বিশালের বাড়ি থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। গত মাসেই ভাড়া নেওয়া হয়েছিল ফ্ল্যাটটি। ৩০ মে-র মধ্যে ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়ার অগ্রিম চুক্তিও সেরে ফেলেন সোনমেরা। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি-র একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোনম বলেছিলেন যে, তিনি পেশায় একজন ইন্টেরিয়র ডিজ়াইনার। কাজের সুবিধার জন্য ওই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিতে চান। শুধু তা-ই নয়, ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেওয়ার সময় পুলিশ দিয়ে তথ্য যাচাইও করানো হয়েছিল। অগ্রিম বাবদ ১৬,০০০ টাকাও দেওয়া হয়েছিল বাড়িওয়ালাকে। এমনকি, চলতি মাসে ওই ফ্ল্যাটে প্রেমিকাকে অনলাইনে ৫,০০০ টাকার চাল-ডাল, খাবারও অর্ডার করে দেন সোনমের প্রেমিক রাজ!
তদন্তে জানা গিয়েছে, ২১ বছরের রাজের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন ২৪ বছরের সোনম। কিন্তু পরিবার সেই সম্পর্ক মেনে নেয়নি। জোর করে রাজার সঙ্গে তাঁর বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এর পরেই রাজাকে খুনের পরিকল্পনা করেন সোনমেরা। বিয়ের পর স্বামীকে তিনি বলেন, অসমের কামাখ্যা মন্দিরে গিয়ে পুজো দেওয়ার পরেই এই বিয়েকে তিনি স্বীকৃতি দেবেন। সেই অনুযায়ী নবদম্পতি প্রথমে গুয়াহাটি যান। সেখান থেকে সোনম শিলঙে নিয়ে আসেন রাজাকে। মেঘালয়ে রাজাকে খুনের পর সোনমকে বোরখা পরিয়ে একটি ট্যাক্সিতে চাপিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় গুয়াহাটিতে। সেখান থেকে বাসে করে শিলিগুড়ি। শিলিগুড়ি থেকে পটনা হয়ে বাসে আরা। আরা থেকে ট্রেনে লখনউ। সব শেষে, সেখান থেকে বাসে চেপে ইনদওরে পৌঁছন সোনম। তার পর বেগতিক বুঝে ৭ জুন পালিয়ে গাজ়িপুর পৌঁছোন। সেখানেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান তিনি।