সনিয়া গাঁধীর দ্রুত আরোগ্য চেয়ে মির্জাপুরে পুজো করছেন কংগ্রেসের দলীয় কর্মীরা। ছবি: পিটিআই।
মুম্বই থেকে দিল্লি উড়ে এসে শাহরুখ খানের চিকিৎসক আজ অস্ত্রোপচার করলেন সনিয়া গাঁধীর। বারাণসীতে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গিয়ে কাঁধের হাড় ভেঙে গিয়েছিল সনিয়ার। আজ সেটি অস্ত্রোপচার করে ঠিক করেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের মতে, সনিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালেই আরও কিছু দিন তাঁকে রাখা হবে।
পরশু বারাণসীতে রোড শো-এর সময় শরীরে জলের পরিমাণ কমে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যান সনিয়া। সেই সময় তিনি পড়ে গেলে শরীরের পুরো ভারটি পড়ে বাঁ দিকে। তাতেই বাঁ কাঁধের হাড়টি ভেঙে যায় ও হাড়ের সংযোগস্থলটি সরে যায়। পরশু রাতে বারাণসী থেকে দিল্লিতে এনে বিমানবন্দরের কাছে সেনা হাসপাতালে ভর্তি করে তাঁকে স্থিতিশীল করা হয়। তার পরেও বাঁ দিকের কাঁধে ব্যথা কমেনি। কাল দুপুরেই সেনা হাসপাতাল থেকে গঙ্গারাম হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। এক্স-রে-তে দেখা যায়, সনিয়ার বাঁ কাঁধের হাড় সরে গিয়েছে ও ভেঙে গিয়েছে। তার পরেই সেখানকার চিকিৎসকেরা সিদ্ধান্ত নেন, মুম্বই থেকে বিখ্যাত অর্থোপেডিক চিকিৎসক সঞ্জয় দেশাইকে দিল্লিতে উড়িয়ে আনা হবে। কাল রাতেই তিনি এসে পৌঁছন।
আজ সকালে সঞ্জয় দেশাই ও গঙ্গারাম হাসপাতালের চিকিৎসক প্রতীক গুপ্ত সনিয়ার কাঁধের অস্ত্রোপচার করেন। এই সঞ্জয় দেশাই-ই গত বছর শাহরুখ খানের হাঁটুর অপারেশন করেন। অর্থোস্কোপি ও জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের বিশেষজ্ঞ তিনি। আজ সনিয়ার অস্ত্রোপচারের পর তিনি জানান, কাঁধের সংযোগস্থলে সরে যাওয়া ‘বল’টি আবার ঠিকমতো লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর ভেঙে যাওয়া অংশে প্লেট ও স্ক্রু লাগিয়ে ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। সনিয়া গাঁধী এখন ভাল আছেন। কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে। যদিও হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পরেও তাঁকে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি করতে হবে, যাতে সহজে হাতের নড়াচড়া করতে পারেন। স্বাভাবিক কাজ করতেও এখন কিছুটা সময় লাগবে।
আরও পড়ুন: সনিয়া হাসপাতালেই, টেলিফোনে খোঁজ নিলেন মোদী
দুপুরে গঙ্গারাম হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডি এস রানা এক বিবৃতিতে জানান, ‘খুব দ্রুত অসুস্থতা কাটিয়ে উঠছেন সনিয়া গাঁধী। তাঁর স্বাস্থ্যের যাবতীয় প্যারামিটারের উন্নতি হচ্ছে। খুব শীঘ্রই আইসিইউ থেকে তাঁকে বের করে আনা হবে।’ যদিও হাসপাতাল সূত্রে বলা হচ্ছে, এখনও তাঁর বুকে কিছুটা সংক্রমণ রয়েছে। বারাণসী থেকে আসার সময় শরীরে জলের পরিমাণ এমনিতেই কম ছিল। ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যের অভাবও রয়েছে। ফলে আইসিইউ থেকে বের করে আনলেও তাঁর উপরে নজরদারি রাখা হবে। বুকে সংক্রমণের বিষয়টি অবশ্য নতুন নয়। এর আগেও পালমোনোলজি বিভাগের চিকিৎসক অরূপ বসুর অধীনে তিনি গঙ্গারামে ভর্তি ছিলেন। কাল এই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে তাঁরই অধীনে সে কারণে রাখা হয়েছে। আপাতত এখনও তরল খাবারই দেওয়া হচ্ছে সনিয়াকে। পরিস্থিতির আর একটু উন্নতি হলে শক্ত খাবারও দেওয়া হবে।
আজ সকালে অস্ত্রোপচারের সময় থেকেই সনিয়া-তনয়া প্রিয়ঙ্কা হাসপাতালে ছিলেন। বেলা চারটে নাগাদ তিনি হাসপাতাল থেকে বেরোন। পরে কংগ্রেসের কিছু শীর্ষ নেতাও তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান। দলের এক নেতার মতে, সনিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে শুধু তাঁর পরিবারের সদস্যরা নন, গোটা কংগ্রেস শিবিরই উদ্বিগ্ন। শারীরিক কারণেই সনিয়াকে বার বার আমেরিকায় যেতে হয়। এ বারে এক দিনের রোড-শো-তে তাঁর শারীরিক অবস্থার যে অবনতি হল, তাতে দলের অনেকেই মনে করছেন এ বারে রাহুল গাঁধীকে পুরোদস্তুর হাল ধরতে হবে কংগ্রেসের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy