Advertisement
E-Paper

বাংলার পাঠ নিয়ে ফিরল ‘অপুর পাঠশালা’

ঘাটশিলা ব্লকে প্রচুর বাঙালি পরিবারের বাস।  কিন্তু স্কুলগুলিতে বাংলা শেখার সুযোগ তেমন নেই বললেই চলে। অতীতে রঘুবর দাস সরকার ঝাড়খণ্ডের দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে বাংলাকে চালু করার কথা বললেও কার্যত কিছুই হয়নি

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:০৩
শুরু হল প্রবাসী বাঙালিদের বাংলা শেখার কেন্দ্র। বুধবার ঘাটশিলায় বিভূতিভূষণের বাড়ি গৌরীকুঞ্জ চত্বরে। নিজস্ব চিত্র

শুরু হল প্রবাসী বাঙালিদের বাংলা শেখার কেন্দ্র। বুধবার ঘাটশিলায় বিভূতিভূষণের বাড়ি গৌরীকুঞ্জ চত্বরে। নিজস্ব চিত্র

পথের পাঁচালীর সেই পাঠশালা ফিরে এল ঘাটশিলায় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘গৌরীকুঞ্জে’। উঠোনে শতরঞ্চি পেতে বসছে ছাত্রছাত্রীরা। গুরুমশাই পড়াচ্ছেন। যদিও সঙ্গে থাকছে না তেল নুনের দোকানদারি। কচিকাঁচাদের পড়ানো হচ্ছে শুধু বাংলা। আজ বিভূতিভূষণের ১২৫ তম জন্মদিবস উপলক্ষে শুরু হল ‘অপুর পাঠশালা’।

ঘাটশিলা ব্লকে প্রচুর বাঙালি পরিবারের বাস। কিন্তু স্কুলগুলিতে বাংলা শেখার সুযোগ তেমন নেই বললেই চলে। অতীতে রঘুবর দাস সরকার ঝাড়খণ্ডের দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে বাংলাকে চালু করার কথা বললেও কার্যত কিছুই হয়নি। অনেক সরকারি স্কুলেই বাংলা শিক্ষক নেই। স্কুলগুলিতে বাংলা বইও আসে না ঠিক মতো। ঘাটশিলার বাসিন্দা অবনী রায়ের কথায়,‘‘ছেলেমেয়েদের বাংলা পড়ানোর খুব ইচ্ছে। স্বামী-স্ত্রী চাকরি করি বলে আমরা সময় পাই না। এই প্রয়াসকে স্বাগত। আমার ছেলেমেয়েরা তো পাঠশালার ছাত্র হয়ে গিয়েছে।’’

খুশি বিভূতিভূষণের পুত্রবধু মিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, ‘‘শ্বশুরমশাইয়ের প্রিয় জায়গা ঘাটশিলা। অপুর পাঠশালা খুবই ভাল উদ্যোগ।’’ গৌরীকুঞ্জ উন্নয়ন সমিতি জানাচ্ছে, মিত্রাদেবীর অনুমতি নিয়েই গৌরীকুঞ্জে পাঠশালা খোলা হয়েছে।

অপুর পাঠশালার এক শিক্ষক জানান, একেবারে বর্ণ পরিচয়, সহজ পাঠ থেকে ওদের বাংলা শেখানো হবে। আপাতত ১০ জন শিক্ষক পালা করে এখানে পড়াবেন। গৌরীকুঞ্জ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অপুর পাঠশালায় সপ্তাহে কয়েক ঘণ্টা পড়াতে রাজি হয়েছেন ঘাটশিলা কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষকও। তিনি যেমন এখানে মাঝেমধ্যে ছাত্রদের পড়াতে আসবেন, সে রকমই স্থানীয় বাংলা শিক্ষকরাও।’’

অপুর পাঠশালা শুরু হল ৩৫ জন ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে। ছাত্রছাত্রীদের তালিকায় যেমন আছে প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণির কচিকাঁচারা, তেমনই আছে উঁচু ক্লাসের ছাত্ররাও। সপ্তম শ্রেণির কয়েক জন বাঙালি ছাত্রের কথায়, ‘‘বাংলা বলতে পারি কিন্তু পড়তে পারি না, এটা লজ্জার বিষয়। এতদিনে সেই লজ্জা ঘুচবে। অপুর পাঠশালায় সপ্তাহে দু’দিন অন্তত বাংলা শিখতে আসব।’’ অপুর পাঠশালার তরফে শিক্ষকরা জানালেন, শুধুই প্রথাগত পড়াশোনা নয়। রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, বিভূতিভূষণ, তারাশঙ্করের মতো বাংলার দিকপাল সাহত্যিকদের ছোট গল্পও পাঠ করে শোনানো হবে ছাত্রদের। এতে বাংলা সাহিত্যের প্রতিও তারা উৎসাহিত হবে।

Bibhutibhushan Bandyopadhyay Birthday Apur Pathshala
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy