—প্রতীকী ছবি।
দীপাবলি এবং ছটপুজোকে ঘিরে বিভিন্ন স্টেশনে ঠাসাঠাসি ভিড়ের ছবি অস্বস্তি বাড়িয়েছে কেন্দ্রের। মুখরক্ষায় ১৭০০ বিশেষ ট্রেনে ২৬ লক্ষ অতিরিক্ত যাত্রীর সফরের ব্যবস্থা করার দাবি করেছে রেল।
রেলের দাবি, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে যাত্রী সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালে ওই সময়ের মধ্যে রেলের সাধারণ এবং স্লিপার শ্রেণিতে যেখানে ৩৩৪ কোটি যাত্রী সফর করেছিলেন সেখানে চলতি বছরে ওই সময়ে ৩৭২ কোটি যাত্রী সফর করেছেন। এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে বাতানুকূল শ্রেণিতে গত বছরের ১৫.১ কোটি যাত্রীর তুলনায় চলতি বছরে ১৮.২ কোটি যাত্রী সফর করেছেন। প্রাক অতিমারির তুলনায় মেল, এক্সপ্রেস, প্যাসেঞ্জার এবং শহরতলির ৫৬২টি ট্রেন বেড়েছে বলেও দাবি রেল মন্ত্রকের।
প্রশ্ন উঠছে, তা হলেও উৎসবের মরসুমে অতিরিক্ত ট্রেনের ব্যবস্থা করে ভিড় সামলানো যাচ্ছে না কেন?
সুরাত এবং ভদোদরার মতো স্টেশন থেকে বিহার, উত্তরপ্রদেশগামী ট্রেনে ওঠার সময়ে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ছাড়াও ঠাসাঠাসি ভিড়ে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। ভিড় ট্রেনের সাধারণ কামরায় অগ্নিকাণ্ডে একাধিক যাত্রী আহত হয়েছেন।
রেলেরই একাংশের দাবি, ভিড় সামলাতে না পারার পিছনে রেলের নিজস্ব পরিকল্পনায় বড়সড় গলদ রয়েছে। প্রাক্তন আধিকারিকদের একাংশই বলছেন, উৎসবে চাহিদা বাড়ে জেনেও বেশিরভাগ বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্তের কথা রেল মাত্র তিন থেকে সাত দিনের ব্যবধানে জানিয়েছে। সাধারণ ট্রেনে ১২০ দিন আগে সংরক্ষিত শ্রেণির টিকিট কাটার সুবিধা রয়েছে। সেখানে বিশেষ ট্রেনের ঘোষণা এত পরে কেন সেই প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। ওই সব ট্রেনের সফরসূচি, ভাড়া সবই একেবারে শেষ মুহূর্তে সামনে এসেছে বলে অভিযোগ।
উৎসবের মরসুমে বন্দে ভারত-সহ উত্তরবঙ্গগামী একাধিক এক্সপ্রেস ট্রেন এবং দিল্লিগামী বিভিন্ন ট্রেনের টিকিটের চাহিদার কথা ঢাকঢোল পিটিয়ে পূর্ব রেল প্রচার করলেও বিশেষ ট্রেনের পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে সেই তৎপরতা চোখে পড়েনি বলে অভিযোগ যাত্রীদের বড় অংশের।
বিশেষ ট্রেনে ভাড়ার হার চিরকালই নিয়মিত ট্রেনের চেয়ে বেশি। ওই সব ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা নিয়েও যাত্রীদের বিস্তর অভিযোগ। তার উপরে একেবারে শেষ মুহূর্তে সেই ট্রেনের কথা জানতে পারলে অনেকেই সেই অনুযায়ী নিজের যাত্রার পরিকল্পনা করতে অসমর্থ হন। তাই, অল্প সংখ্যক যাত্রীই বিশেষ ট্রেনে সফর করার সুযোগ পান। রেল যাত্রীদের চাহিদা বুঝতে ভুল করেছে, নাকি সচেতন ভাবেই সেই চাহিদাকে উপেক্ষা করেছে, সেই প্রশ্নও উঠছে।
বন্দে ভারতের মতো বিলাসবহুল যাত্রীবাহী ট্রেন এবং পণ্যবাহী ট্রেন থেকে রেলের আয় অনেক বেশি। ওই সব ট্রেনের জন্য পথ খোলা রাখা ছাড়াও নানাবিধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আগাম যাত্রীবাহী বিশেষ ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করা যাচ্ছে না বলে
রেলের দাবি।
এ দিকে দীপাবলি এবং ছটপুজোয় বাড়ি ফেরার সময় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বৃহস্পতিবার রেলের শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার অমর প্রকাশ দ্বিবেদী। একাধিক স্টেশনে আগাম বিশেষ সতর্কতা জারি করেছেন তিনি। নির্ধারিত সময়ের অন্তত ঘণ্টা খানেক আগে প্ল্যাটফর্মে ট্রেন দেওয়া ছাড়াও, পর্যাপ্ত সংখ্যায় রক্ষী, মেডিক্যাল টিম, পানীয় জলের ব্যবস্থা রাখার কথা বলেছেন তিনি। ট্রেনে আলো, পাখা, জলের যোগান ঠিক রাখার কথা বলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy