প্রকাশ্যে রাশিয়া শেষ পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করেছে ১৯৯০ সালে। চিন, ১৯৯৬, উত্তর কোরিয়া ২০১৭ এবং পাকিস্তান ১৯৯৮ সালে। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, এই রাষ্ট্রগুলি সম্প্রতি পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা করছে বলে দাবি করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি তা করেছেন মূলত নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষাকে যুক্তিসঙ্গত করে তুলে ধরতে। কিন্তু তাঁর এই মন্তব্যের পর প্রশ্ন উঠছে, সামগ্রিক পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা নিষেধাজ্ঞা চুক্তি বা সিটিবিটি কি তা হলে ক্রমশ লঘু হয়ে যাবে অদূর ভবিষ্যতে? আর তার পরের প্রশ্নটিই হল, তা ঘটলে ভারতের হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষা এবং তৈরির ক্ষেত্রটি কি প্রশস্ত হয়ে যাবে, যা নিয়ে অতীতে বারবার আঙুল উঠেছে।
সামরিক এবং অসামরিক উভয়ক্ষেত্রেই পরিমাণু বিস্ফোরণ এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাকে মান্য করে এসেছে পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রগুলি। পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরীক্ষা নিয়ে ভারতের স্বআরোপিত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, নিজের থেকে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে এই অস্ত্র ব্যবহার না করার নীতির অধীনে। ভারত ন্যূনতম অস্ত্র রাখার নীতিতে দায়বদ্ধও বটে। তবে দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান এবং চিনের ছায়া যখন ভারতের উপরে দীর্ঘ হচ্ছে, গত কাল ট্রাম্পের এই মন্তব্য সমূহ নয়াদিল্লির জন্য নতুন দরজা খুলে দিল কিনা, তা নিয়ে আলোচনা চলছে বিশেষজ্ঞ মহলে।
২০২৫ সাল পর্যন্ত হিসেব অনুযায়ী, আমেরিকা, ব্রিটেন, রাশিয়া, ভারত, চিন, ফ্রান্স, পাকিস্তান, ইজ়রায়েল এবং উত্তর কোরিয়ার কাছে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। এই ন’টি দেশের মধ্যে ৫টি রাষ্ট্র আমেরিকা, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং চিন জানিয়েছে যে তাদের কাছে হাইড্রোজেন বোমা রয়েছে। ভারত এবং উত্তর কোরিয়ার এই বিষয়ে দাবি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ভারতের কাছে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে প্রায় ১৮০টি। পাকিস্তান পৌঁছে গিয়েছে ১৬০টিতে। চিনের পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা মাত্রাছাড়া, প্রায় ৬০০-র কাছাকাছি। ২০৩০ সালে এই সংখ্যা পৌঁছে যাওয়ার কথা ১ হাজারে। নয়াদিল্লির বক্তব্য, পাকিস্তানকে সামলে নেওয়া যাবে। কিন্তু চিনের পরমাণু অস্ত্রের ভাঁড়ার বিপুল। বিশেষ করে তাদের কাছে রয়েছে ‘ফ্র্যাকশানাল অরবাইটাল বম্বার্ডমেন্ট সিস্টেম’ (এফওবিসি) যা যে কোনও ক্ষেপণাস্ত্রকে নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)