সোমবার থেকে শুরু হতে চলেছে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আরও একটি নতুন অধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘পুরনো বন্ধু’ ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেওয়ার পরে ভারতের সঙ্গে নতুন কী পদক্ষেপ করবেন, তা দেখতে দক্ষিণ এশিয়া তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি নয়াদিল্লিও উদগ্রীব। ওই শপথগ্রহণে আমন্ত্রণ পাননি মোদী, যা কিছুটা হলেও ধাক্কা দিয়েছে সাউথ ব্লককে, এমনটা মনে করছে কূটনৈতিক শিবিরের একাংশ।
তবে মোদী না থাকলেও আমন্ত্রিত বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। রিপাবলিকান নতুন কর্তাদের সঙ্গে ধারবাহিক বৈঠক করবেন তিনি আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক বিষয়গুলি নিয়ে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নিরাপত্তা এবং সীমান্ত নিরাপত্তা প্রসঙ্গে ভারতের উদ্বেগের দিকটি তিনি আমেরিকার নতুন প্রশাসনের কাছে ঘরোয়া ভাবে তুলে ধরবেন বলেই খবর। এ ছাড়া রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল রফতানির ক্ষেত্রে আনা আমেরিকার নতুন নিষেধাজ্ঞায় ভারত যে মহা ফাঁপড়ে পড়তে পারে, সবিস্তারে জানাবেনসেই প্রসঙ্গও।
আপাতত ট্রাম্পের প্রসঙ্গে আশাবাদী থাকতে চেয়ে জয়শঙ্করের বক্তব্য, “ট্রাম্পের শপথগ্রহণ একটি বিশেষ ঘটনা। আশা করা যায়, বিশ্ব ব্যবস্থায় এর বৃহত্তর ভূমিকা থাকবে।” ট্রাম্পের দ্বিতীয় বার ফিরে আসাকেই এর কারণ হিসাবে না দেখে নয়াদিল্লি বলছে, আন্তর্জাতিক মন্থনের একটা ফলাফল হল ট্রাম্পের ফিরে আসা। বিদেশমন্ত্রীর কথায়, “এই প্রক্রিয়ার অনেক স্তর রয়েছে, অনেক মাত্রা রয়েছে। অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার নতুন করে ভারসাম্য তৈরির সম্ভাবনাও রয়েছে। যুদ্ধ, অতিমারি, পরিবেশ দূষণ মাঝের সময়টাকে অস্থির করেছে। আবার রাষ্ট্রগুলির পারস্পরিক নির্ভরতা বাড়াতে প্রযুক্তিও তার ন্যায্য ভূমিকা পালন করেছে।”
ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে পুনরাভিষেকের বিষয়টি সম্পর্কে জয়শঙ্কর মনে করছেন, আমেরিকার বিদেশনীতির ভরকেন্দ্র এ বার বদলাবে। ঐতিহ্যগত ভাবে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক নেতৃত্বদান থেকে সরে ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতিকেই তারা গ্রহণ করবে। বিদেশমন্ত্রীর কথায়, “এখন আমরা সবাই সম্ভবত এক নতুন যুগের সম্মুখীন হতে চলেছি। আমেরিকার তার নিজের স্বার্থের দিকে তাকিয়ে বিদেশনীতি তৈরি করবে এ বার। গোটা বিশ্বের ভাল-মন্দ নিয়ে মাথা ঘামাতে যাবে না। এ বার প্রতিযোগিতা বাড়বে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে। অন্য রাষ্ট্রের সরকার নিয়ে খুঁটিনাটি পর্যবেক্ষণ (আমেরিকার) বন্ধ হবে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)