E-Paper

পাখির চোখ বিশেষ অধিবেশন, তৃণমূল সাংসদদের দিল্লিতে ডাক

সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হতে এখনও দেড় মাস বাকি রয়েছে। তা হলে হঠাৎ কেন দিল্লিতে ডাক, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৫ ০৭:২৫
ডেরেক ও’ব্রায়েন।

ডেরেক ও’ব্রায়েন। —ফাইল চিত্র।

কিছুটা অভূতপূর্ব ভাবেই মঙ্গলবার বেলা বারোটার সময়ে তৃণমূলের দিল্লির কার্যালয় ৬১, সাউথ অ্যাভিনিউতে জরুরি ভিত্তিতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে দলের সব লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদকে। হাজির থাকবেন রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনও।

সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হতে এখনও দেড় মাস বাকি রয়েছে। তা হলে হঠাৎ কেন দিল্লিতে ডাক, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই বৈঠক ডাকার কারণ বা উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ খুলতে চাননি দলীয় নেতৃত্ব। তবেরাজনৈতিক সূত্রের খবর, ওই দিন একটি চিঠি তৈরি করা হবে। যাতে স্বাক্ষর করবেন সমস্ত সাংসদ। সূত্রের মতে, সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার আর্জি জানিয়ে ওই চিঠি দেওয়া হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে।

প্রসঙ্গত, অপারেশন সিঁদুরের পরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত চরমে উঠলে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রথম বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি জানান রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খড়্গেরা। তাঁদের সুরে সুর মেলান আরজেডি নেতৃত্ব। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তৃণমূল সে সময়ে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। মন্তব্যকরতে দেখা যায়নি ডিএমকে নেতৃত্বকেও। এর পরে সংসদের লাইব্রেরি ভবনে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাখ্যা করতে বৈঠক ডাকেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অণিত শাহ। সেই বৈঠকেও রাহুল গান্ধী সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার প্রস্তাব দেন। যদিও বৈঠকের শেষে বেরিয়ে এসে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু দাবি করেন, বিশেষ অধিবেশনের প্রসঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি।

এখনও পর্যন্ত সরকার পক্ষ এমন কোনও ইঙ্গিত দেয়নি যে তারা বিশেষ অধিবেশন ডাকতে আগ্রহী। রাজনৈতিক শিবিরে প্রশ্ন উঠছে, তা হলে এখন কেন তৃণমূল নেতৃত্ব ওই বৈঠক ডাকার জন্য দাবি জানাতে তৎপর হচ্ছেন? গত কাল প্রথমবার তৃণমূলের পাঁচ জন প্রতিনিধির কাশ্মীর সীমান্ত সফরের প্রশংসা করে বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি জানান মমতা। সূত্রের মতে, তার পরেই দলীয় ভাবে বিষয়টি তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে বিদেশে সফর করছেন। প্রতিটি দেশের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করে ভারতের সন্ত্রাস বিরোধী অবস্থান তুলে ধরছেন তিনি। প্রথমে ওই প্রতিনিধিদলে যোগ দেয়নি তৃণমূল। গোড়ায় একতরফা ভাবে তৃণমূল সাংসদ ইউসুফ পঠানের নাম ঘোষণা করে দেয় কেন্দ্র, যাতে রুষ্ট হন মমতা। পরে দিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে এসে অভিষেক এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘‘এক জন কেন পাঁচ জন তৃণমূল সাংসদ আমরা পাঠাতে রাজি। কিন্তু কারা যাবে তা দল ঠিক করবে।’’ তখনই বোঝা যায় তৃণমূল বিদেশ সফরে যেতে যে রাজি, সেই বার্তা পরোক্ষে কেন্দ্রকে দেওয়ার কৌশল নিয়েছে দল। শেষ পর্যন্ত দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেককেই প্রতিনিধিদলের জন্য বেছে নেওয়া হয়।

আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন। পহেলগামের ঘটনা তীব্র প্রতিক্রিয়া ফেলেছে হিন্দু মনে। গোটা দেশের মতো জাতীয়তাবাদের হাওয়া উঠেছে পশ্চিমবঙ্গে। তৃণমূল যে জাতীয়তাবাদের প্রশ্ন পিছিয়ে নেই সেই বার্তা দিতে তৎপর দল। সে কারণেই সংসদের বিশেষ অধিবেশনের আবেদন জানিয়ে সেই অধিবেশনে পাকিস্তান বিরোধিতাকে তীব্র ভাবে তুলে ধরার কথা ভাবছেনতৃণমূল নেতৃত্ব।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC Derek O’Brien

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy