গত কয়েক মাস ধরে তিনি মুখ খুললেই তা নিয়ে ব্যাপক প্রচার এবং প্রশংসা করে চলেছেন বিজেপি নেতারা। কারণ তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরের সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে, যা ক্রমশ বাড়ছে। এই অবস্থায় নিউ ইয়র্কের মেয়র জ়োহরান মামদানির সঙ্গে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গত কালের বৈঠক এবং তার পরের সাংবাদিক সম্মেলনে দু’জনের নানা কথা নিয়ে ফের মন্তব্য করে বিজেপির প্রশংসা কুড়োলেন শশী। নিউ ইয়র্কের মেয়র পদের ভোটপর্বে লাগাতার একে অন্যকে আক্রমণ শানিয়েছিলেন মামদানি ও ট্রাম্প। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী মামদানি যেমন ট্রাম্পকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে আক্রমণ করেছেন, তেমনই রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পও সুর চড়িয়ে ‘কমিউনিস্ট’ মামদানিকে নিশানা করতে ছাড়েননি। যদিও গত কাল দুই নেতার বৈঠকের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে এ সবের কোনও আঁচ দেখা যায়নি। শশী সেই প্রসঙ্গ টেনেই নিজের এক্স-হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘গণতন্ত্রে এ ভাবেই কাজ করা উচিত। নির্বাচনের সময় নিজের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রাধান্য দিয়ে আবেগের সঙ্গে লড়াই করলেও জনতার রায় বেরোনোর পরে মানুষের স্বার্থে একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করা উচিত। এ ভাবেই সৌজন্য বোধ বজায় রাখা শিখুন। জাতির সেবা করার জন্য প্রত্যেকেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমি চাই, ভারতেও এই রকম পরিবেশতৈরি হোক।’’
শশীর এই মন্তব্যের পরেই বিজেপি বিষয়টির সঙ্গে কংগ্রেসকে জুড়ে নিয়েছে। উচ্ছ্বসিত বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, শশী আসলে কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়েছেন। গত কয়েক মাস ধরে শশীর যখনই সুযোগ পেয়েছেন, তখনই প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রশংসা করে বুঝিয়েছেন, আসলে গণতন্ত্র কী। বিজেপি মুখপাত্র শেহজ়াদ পুনাওয়ালার বক্তব্য, গান্ধী পরিবারের আগে দেশকে রাখতে চেয়েছেন শশী, তাতেই দলের বিরাগভাজন হয়েছেন তিনি।
কংগ্রেস শিবির বিষয়টি নিয়ে মুখ না খুললেও সমাজমাধ্যমে অনেকেই মোদীর ভোটপর্বের আগে এবং পরের নানা মন্তব্য তুলে ধরেন, যেখানে সর্বত্রই বিরোধীদের তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন মোদী। বিরোধীদের প্রশংসাসূচক কোনও মন্তব্যই তাঁর থেকে মেলেনি। আর সেটাই তুলে ধরে শশীকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি কেরলের সিপিএম সাংসদ জন ব্রিট্টাস। তিনি এক্স-হ্যান্ডলেই মোদী এবং শশীকে একসঙ্গে খোঁচা দিয়ে লেখেন, ‘‘অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত বক্তব্য, তবে আমাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যোগ করতে দিন— আমাদের প্রধানমন্ত্রী অন্তত এই বিষয়ে তাঁর বন্ধু ট্রাম্পকে অনুকরণ করলে ভাল হত! তিনি যদি তা করতেন, তা হলে বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলোর অবস্থান আরও অনেক ভাল হত এবং তাদের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হতে হত না! আমাদের গণতান্ত্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো আরও অনেক বেশি শক্তিশালী ও অর্থবহ হত।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)